ভালোবাসার মাস। চারিদিকে প্রেমের গন্ধ। টেলিভিশন পাড়ার অন্যতম পরিচিত মুখ অপরাজিতা আঢ্য। ছোটপর্দার আদর্শ বউমা তিনি, বাস্তব জীবনেও লক্ষ্মীমন্ত বউ। ২৬ বছরের সুখী দাম্পত্য অপরাজিতা আঢ্য ও অতনু হাজরার। অপরাজিতার স্বামীও ইন্ডাস্ট্রির চেনা মুখ। টলিপাড়ার টেকনিশিয়ান অতনু হাজরাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন অপরাজিতা।
কেমন ছিল সম্পর্কের শুরুর দিনটা? জানা যায়, এক টেলিফিল্মের শ্য়ুটিংয়ে তালসারি গিয়েছিলেন অভিনেত্রী। সেখানেই মনের কথা অপরাজিতাকে জানিয়েছিলেন অতনু। কিন্তু মন গলেনি নায়িকার। বিয়ের প্রস্তাব সরাসরি নাকোচ করে দেন। তালসারির এক বালির স্তুপে বসে শট দিচ্ছিলেন অপরাজিতা। তা শেষ হতেই অতনু এসে জানতে চান, ‘তুমি কি আমায় বিয়ে করবে?’
মনের মানুষের থেকে নেতিবাচক জবাবে মন ভেঙেছিল অতনুর। তবে হাল ছাড়েননি। চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন অপরাজিতার মন জেতার। এই প্রেম কাহিনির সূত্রধর ছিলেন অপরাজিতার বান্ধবী অমৃতা। আজ আর তিনি বেঁচে নেই। অমৃতাকে ধরেই মনের কথা অপরাজিতার কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন অতনু। এরপর অমৃতার হাত ধরেই অতনুর বাড়িতে হাজির হন অপরাজিতা। অতনুর মা-কে দেখেই আলাপ জমান অপরাজিতা। প্রথম দেখাতেই দুজনেই দুজনকে আপন করে নেন। ওইদিনই অভিনেত্রী মনে মনে ঠিক করেন, এই শাশুড়িমাই তাঁকে আগলে রাখবে। তাই বিয়ে তো এই বাড়িতেই করব।
বিয়ের ২৬ বছরেও ছবিটা বদলায়নি। বউমাকে আজও চোখে হারান অতনু হাজরার মা। শাশুড়িমা বলতে অজ্ঞান অপরাজিতা। প্রেমদিবসে অপরাজিতাকে প্রথম উপহারও দিয়েছিলেন তাঁর শাশুড়িমা। টিভি নাইন বাংলাকে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, ‘আমার শাশুড়িমা-ই আমাকে জীবনে প্রথম ভ্য়ালেন্টাইনস ডে-তে বেলুন উপহার দিয়েছিলেন। সেই সময় আমি জানতামই না দিনটায় কী হয়। …. আমার শাশুড়িই সেই অর্থে আমার প্রথম ভ্যালেন্টাইন’।
হ্যাঁ, শাশুড়ি মায়ের সঙ্গে এতটাই মজবুত বন্ডিং অপরাজিতার। অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমি রাহু, তিনি কেতু। একই লোক দু’জনে। বিষ্ণু তাঁদের আলাদা করে। আমি মনে করি, তিনি এবং আমি মণিকাঞ্চন যোগ… আমি এবং আমার শাশুড়িমা একে-অন্যের জন্যই তৈরি।’
আপতত, মধ্যবয়স্কা এক মহিলার জমিয়ে বাঁচার গল্প ‘জল থই থই ভালোবাসা’য় লিড রোলে দেখা যাচ্ছে অপরাজিতাকে। এই সিরিয়ালে অপরাজিতার চরিত্রের নাম কোজাগরী বসু। অভিনেত্রীর চোখে তাঁর শাশুড়ি মা-ও একজন কোজাগরী।
বয়স শুধুই একটা সংখ্যা! একথা শুধু কোজাগরী নয়, মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন অভিনেত্রী নিজে। তাঁর কথায়, ‘মানুষের কাছে বয়স কোনও ফ্যাক্টর নয়। মানুষ যা চায় সেটা করতে পারে। এই চরিত্রটার মূল কথা শেখার কোনও বয়স নেই। শিখতে চাইলে সব বয়সেই শেখা যায়।’ কোজগরীকে নিয়ে তাঁর সংযোজন, ‘ও বিশ্বাস করে বয়সটা কোনও ফ্যাক্টর নয়। এটার জন্য কনফিডেন্স তো দরকার। ওর এই জোরটা আছে, সব বয়সে সবটা করা যায়।’