অরুণাভ রাহারায়: এখনও যেন সত্যজিৎ রায়ের চরিত্র থেকে বেরতে পারেননি জিতু কমল। অপরাজিতর স্পেশাল স্ক্রিনিংয়ের অনুষ্ঠানে তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ যেন সেই কথাই বলে দিল। শহরের এক আইনক্সের পর্দায় গতকাল অপরাজিতর প্রথম শো দেখানে হয়। সেখানে স্ত্রী নবনীতার সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন জিতু কমল। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর দিকে ছিল আলোর ঝলকানি। প্রথম বার বড় কাজের সুযোগ পেয়েই দর্শককে মাতিয়ে দিয়েছেন তিনি।
হুবুহু সত্যজিৎ রায়ের বেশে সাদাকালো পর্দায় তাঁর উপাস্থিতিতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। পরিচালক অনীক দত্ত নিখুঁত ভাবে এঁকেছেন চরিত্রটিকে। মেকআপ আর্টিস্ট সোমনাথ কুণ্ডুর কৃতিত্ব এখানে অনেকটা বেশি। অনীক দত্তর মানসপ্রতিমায় তুলির শেষ টান দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছেন সোমনাথ। সত্যজিতের ভূমিকায় এতটা ফুটে উঠবেন জিতু তা বোধ হয় দর্শকদের ধারণাও ছিল না। বড় পর্দায় তাই জিতু কমলের চলমান লুক দেখে অনেকের মধ্যেই বিস্ময় জেগেছে।
এমনকি সন্দীপ রায়ও প্রশংসা করেছেন জিতুর। পরিচালক অনীক দত্ত এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায় ছবিটি দেখে খুশি হয়েছেন। সেই মর্মে একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করেছেন অনীক, নিজের ফেসবুকের দেওয়ালে। সেখানে সন্দীপ রায়কে বলতে শোনা যাচ্ছে ছবিটি ভাল লাগার কথা। তিনি উত্তেজনার বসে বলেই ফেলেন, 'কী ঝামেলার ছবি'। আসলে পথের পাঁচালীর বেশ কিছু দৃশ্যের পুনর্নির্মাণ করেছেন অনীক। দৃশ্যগুলিকে মেলানো যে সহজ কাজ নয়, তা বুঝতে অসুবিধে হয়নি সন্দীপ রায়ের।
অপরাজিত মুক্তির আগের রাতে একটি ফেসবুক লাইভ করেছেন জিতু কমল। সেই লাইভ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায় যে সম্প্রতি সন্দীপ রায়ের ফোন পেয়েছেন জিতু। কেননা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগেই অপরাজিত দেখে ফেলেছেন সন্দীপ রায়। আর বাবার বেশে জিতু কমলকে নাকি অনবদ্য মনে হয়েছে তাঁর। এ কথা জানাতেই তরুণ অভিনেতাকে ফোন। প্রথমে যেন বা বিশ্বাসই করতে পারেননি জিতু! সন্দীপ রায় তাঁকে অভয় দিয়ে আরও জানান, বেশকিছু দৃশ্য তাঁর রোমাঞ্চকর মনে হয়েছে।
কাজেই অপরাজিত ছবিতে অনেকের মন রাখতে পারলেন জিতু। তাঁর অভিনয়ের তারিফ করেছেন স্বয়ং শ্যাম বেনেগল। এবার তাঁর দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য নিজেকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন তিনি। পরিচালককে না জানিয়ে দাঁতের গঠন পাল্টেছিলেন। আগামী দিনে সত্যজিতের চরিত্র থেকে বেরিয়ে অন্যান্য ছবিতে নিজের অভিনয়ের মুন্সিয়ানা কতটা দেখাতে পারবেন জিতু কমল তা দেখার অপেক্ষায় সিনেপ্রেমীরা।