লেখক থেকে পরিচালনায় এলেন শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবির নাম 'মানবজমিন'। সম্প্রতি শ্রীজাত সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তাঁর ছবিতে গান গাইবেন অরিজিৎ সিং আর শ্রেয়া ঘোষাল। এই দুই বাঙালি এখন মাত করেছেন বলিউড। তবে বাংলার প্রতি যে তাঁদের অগাধ টান, তা যেন আরও একবার প্রমাণ হল। শ্রীজাতর কথায়, ‘একজন সদ্য তার মা’কে হারিয়েছে। আরেকজন মা হয়েছে সম্প্রতি। নিবিড়তম ব্যক্তিগত শোক ও আনন্দের এই আবহেও তারা বন্ধুত্বের দাবিকে অবহেলা করেনি, ভালবাসার ডাককে ফিরিয়ে দেয়নি। দিলেও কিছু বলবার ছিল না। কিন্তু দেয়নি যে, সেটাই আজকের দুনিয়ায় খবর হওয়া প্রয়োজন।’
পরিচালনার পাশাপাশি প্রথম ছবির জন্য গানও লিখেছেন শ্রীজাত। আর সেগুলোতে সুর দিয়েছেন জয় সরকার। অরিজিৎ আর শ্রেয়াকে মাথায় রেখেই গান দু'টি লিখেছেন। শ্রীজাতর কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়ে এক কথায় রাজি অরিজিৎ। দু'জনের মধ্যে সম্পর্ক যে দাদা-ভাইয়ের, কিংবা খুব কাছের মানুষের। শ্রীজাত সামাজিক মাধ্যমে গানের প্রস্তাব পাওয়ার পর অরিজিতের রিয়্যাকশন জানাতে লিখেছেন, ‘‘আমাদের ভাবনার কথা বলতেই গলাটা ঝকমক করে উঠল ওর। ‘কী বলছ কী! আমাকে দিয়ে গাওয়াবে?’ এটা বিনয় নয়, নিখাদ বিস্ময়। কারণ আর কিছুই নয়, এমন একখানা গান আজ অবধি ওকে দিয়ে কেউ গাওয়ায়নি। ভাবেওনি গাওয়ানোর কথা। কিন্তু আমরা যে চলতি ছক ভেঙে এইরকম একখানা গানে ওর কণ্ঠ, ওর গায়কী ভেবেছি, তাতেই ও খুশি।’’
আর শ্রেয়া তো বলেই ফেলেছেন শ্রীজাত আর জয়দা (জয় সরকার) একসঙ্গে কাজ করছেন, আর তাতে যদি তাঁকে (শ্রেয়াকে) ডাকা না হত, তিনি বাড়ি এসে (শ্রীজাত-র) ঝগড়া করে যেতেন। শ্রীজাতর কথায়, ‘‘শোনামাত্র প্রায় চেঁচিয়ে উঠল শ্রেয়া, এবং আমি চোখ বন্ধ করে ওর অননুকরনীয় মুখভঙ্গি ও লাফ যুগপৎ দেখতে পেলাম। অল্পে তার সাধ মেটে না কখনওই। পুরো ছবির গপ্পো শুনল টানা অনেকক্ষণ। জানতে চাইলাম, আদৌ তার গলা ধার পাওয়া যাবে কিনা এই গল্পে। গম্ভীর স্বরে বলল, ‘শোনো, তুমি ছবি বানাচ্ছ, আর জয়দা তার মিউজিক করছে। এরপরেও যদি ছবিতে আমার গান না থাকত, আমি বাড়ি গিয়ে অশান্তি করে আসতাম। তুমি আবার আমায় জিগ্যেস করছ?’ এই আন্তরিক বকুনির কাছে হার মানা ছাড়া উপায়ই বা কী।’’