বাংলা নিউজ > বায়োস্কোপ > হিথ্রো এয়ারপোর্ট নাকি আমাদের হাওড়া স্টেশন!করোনায় বিধ্বস্ত জিতের 'বাজি'র অজানা গল্প

হিথ্রো এয়ারপোর্ট নাকি আমাদের হাওড়া স্টেশন!করোনায় বিধ্বস্ত জিতের 'বাজি'র অজানা গল্প

প্রদীপ ধর। ছবি ফেসবুক

ইংল্যান্ডে বাজি ছবির শুটিংয়ের সময় করোনা তাণ্ডব শুরু হয় সারা বিশ্বে। মাঝপথে শুটিং বন্ধ করে দেশে ফেরে পুরো ইউনিট। সেই জার্নির অভিজ্ঞতা সারা জীবন মনে রাখার মত। টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা প্রদীপ ধর সেই গল্পই শোনালেন HT Bangla-কে।

ভেবেছিলাম ভয়ের কিছু নেই

তখনও কিন্তু সারা বিশ্বে কোভিড ১৯ নিয়ে ভয়াবহ আতঙ্ক শুরু হয়নি। খবর দেখে ভেবেছিলাম করোনার কবলে কেবল চীন, জাপান এবং তার আশেপাশের দেশই পড়েছে। ওসব প্রযুক্তি, বিজ্ঞানের দেশ, নিশ্চই সামলে নেবে। কোনও ভাবেই রোগ ছড়াতে দেবে না। তাছাড়া সেই সময় থেকেই আমাদের এখানেও সাবধানতা অবলম্বনের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছিল, তাই ধরেই নিয়েছিলাম, ভয়ের কিছু নেই, এখানে কিচ্ছু হবে না। আর ইউরোপ নিয়ে তো টেনশনের প্রশ্নই ওঠে না, ওটা সচেতন বিশ্ব! কিন্তু আমার ভাবনা যে এত তাড়াতাড়ি ভুল প্রমাণ হবে সেটা ভাবতে পারিনি! আর আমি কেন, কেউই ভাবতেই পারেনি যে এটা বিশ্বব্যাপি মহমারীর আকার ধারণ করবে এত তাড়াতাড়ি! 

জনমানব শূণ্য দুবাই এয়ারপোর্ট

একটা বড় ছবি তাই লোকজন অনেক। বেশ বড় একটা ইউনিট। টিমের বেশিরভাগ লোকজনই আগেই লন্ডন পৌঁছে যায়। আমি আর বিশ্বনাথ ১২ তারিখ ভোর বেলা লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা দিই। যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি তখন এবং এয়ারপোর্টের ভেতরেও ওখানকার স্টাফ বা যাত্রীদের মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু চোখে পড়েনি। আর পাঁচটা দিনের মতই সব কিছু ছিল। শুধু এয়ারপোর্টে ঢোকার মুখে একটা পরিবারকে দেখেছিলাম তাঁদের প্রত্যেকের পরনে সারা শরীর ঢাকা পোশাক , মুখে মাস্ক এবং হাতে ইউজ অ্যান্ড থ্রো প্লাস্টিকের গ্লাভস, সেটা সেলোটেপ দিয়ে আটকানো। এছাড়া কয়েক জন বিদেশি এবং আমরা ছাড়া আর কাউকেই মাস্ক বা গ্লাভস ব্যবহার করতে দেখিনি। খুব একটা ভিড় ছিল না এয়ারপোর্টে। ইমিগ্রেশনের ওখানেও ভিড়ভাট্টা ছিল না। ফ্লাইটের ভেতরেও সব কিছু স্বাভাবিক নিয়মেই চলছিল। ছাড়ার সময় খেয়াল করলাম প্লেন ৮০ ভাগ মত ভর্তি। প্রথমে দুবাই পৌঁছলাম। সেখানেই চোখে পড়ল অস্বাভাবিক বিষয়টা। এয়ারপোর্টে একেবারে ফাঁকা! কেবল স্টাফ, আর আমাদের মত কিছু প্যাসেঞ্জর রয়েছে। কয়েকটা দোকান খোলা কিন্তু দোকানে কোনও লোক নেই। আমি এর আগে বহুবার দুবাই এসেছি কিন্তু এমন জন মানব শূণ্য অবস্থা দেখিনি! কিছুক্ষণ পর দেখি একটু দূরে একটা স্ট্রেচারে একজনকে কিছু একটা পরীক্ষা করা হচ্ছে। তখন পিপিই পোশাক সম্বন্ধে আমার ধারণা ছিল না, ওই প্রথম পিপিই পোশাক পরা কাউকে দেখলাম। ওটা দেখার পর কিন্তু একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম! যাইহোক, আর তো কিছু করার নেই, আমরা তখন মাঝপথে। আবার জার্নি শুরু।

লন্ডনের রাস্তায় শুটিংয়ের সময়।
লন্ডনের রাস্তায় শুটিংয়ের সময়।

হিথ্রোতে এই প্রথম

যথা সময় হিথ্রো পৌঁছালাম। এখানে আবার নতুন করে অবাক হওয়ার পালা, এয়ারপোর্ট একটাও লোক নেই! শুধু আমরা যে ক’জন ফ্লাইট থেকে নামলাম তারা এবং স্টাফরা ছাড়া অন্য কেউ নেই। তখন কিন্তু ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়নি, মানুষজন নিজে থেকেই যাতায়াত বন্ধ করতে শুরু করেছে ততদিনে। যাঁদের উপায় নেই, কোনও এমার্জেন্সি রয়েছে এমন হাতে গোনা কয়েকজন প্যাসেঞ্জার মাত্র! হিথ্রো বলে কথা, অথচ একটা টুরিস্ট পর্যন্ত নেই! বাইরে পার্কিং-এ গাড়ি অপেক্ষা করছিল আমাদের জন্য। সেটা খুঁজে পেতে অনেকটা সময় লেগেছিল, সেই সময় বাইরেও কোনও লোক চোখে পড়েনি। হয়ত ডোমেস্টিকে লোকজন থাকতে পারে, কিন্তু ইন্টারন্যশেনাল একদম খালি। গাড়ি করে এয়ারপোর্ট থেকে হোটেল যাওয়ার পথে আলাদা করে কিছু বুঝতে পারিনি। রাত হয়ে গিয়েছিল। বেশ ফাঁকা রাস্তাঘাট। রাতের লন্ডন কেমন সেই সম্বন্ধে ধারণা ছিল না।

করোনার জন্য নয়, তখন ঠাণ্ডার হাত থেকে বাঁচতে এন-৯৫

হোটেলে গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা হল, ওরা শুটিংয়ের গল্প করছিল। তখন আবার সব কিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। হোটেলের পরিবেশও বেশ শান্ত। কোনও উত্তেজনা নেই। করোনা সংক্রান্ত কোনও আলোচনাও কোথাও শুনলাম না। পরদিন ভোর থেকেই শুটিং শুরু হল। সেখানেও সব কিছুই স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল। শহরের ভেতরে, বাইরে, কান্ট্রি সাইডে বিভিন্ন লোকেশনে আমারা শুটিং করছিলাম। কোথাও কোনও অসুবিধা হয়নি, মাস্ক বা গ্লাভস পরা কাউকে চোখেও পড়েনি। তবে এটা জেনেছিলাম রাস্তাঘাটে, বাসে, ট্রামে লোক সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম চলছে। আমাদের ইউনিট থেকে অবশ্য এন-৯৫ মাস্ক এবং গ্লাভস ও স্যানিটাইজার সবাইকে দেওয়া হয়েছিল। যদিও ওখানে রাস্তাঘাটে কাউকেই মাস্ক ব্যবহার করতে দেখিনি।অমরা অবশ্য মাঝেমাঝে মাস্ক লাগাচ্ছিলাম, সেটা করোনার জন্য নয়, লন্ডনে অসম্ভব ঠান্ডা তখন, সেই ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে মাস্ক ব্যবহার করছিলাম।

বেলা ১২টার মধ্যে লন্ডন ছাড়তে হবে

১৬ তারিখ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। ছবির প্রোডিউসার তথা নায়ক জিতদা, পরিচালক অংশুমান প্রত্যুষ, মিমি, বিশ্বনাথ, মিঠুদা, (অভিষেক চ্যাটার্জি) এবং আমি সহ ইউনিটের সবাই মিলে বেশ ভালোই কাজ চলছিল। ১৬ তারিখ শুটিং চলাকালীন একটা চাপা আলোচনা শুনতে পাই যে ১৮ তারিখে দুপুর ১২টার মধ্যে যদি আমরা লন্ডন না ছাড়ি তাহলে আমাদের এখানেই আটকে থেকে যেতে হবে। প্রথমে বিষয়টা পাত্তা দিইনি। কিন্তু শুটিং শেষ করে হোটেলে ফেরার পর ছবিটা স্পষ্ট হয় সকলের কাছে। চারিদিকের খবর শুনে বুঝলাম করোনা তাণ্ডব আরম্ভ হয়ে গিয়েছে বিশ্ব জুড়ে। এদিকে আমার ২২ তারিখ পর্যন্ত শুটিং ছিল। আর গান এবং আরও কিছু দৃশ্যের শুটিং শেষ করে পুরো ইউনিটের দেশে ফেরার কথা ছিল ২৯ তারিখ। এত বড় একটা টিম, টানা আউটডোর বিদেশে, এই সবের খরচ আকাশ ছোঁয়া। শুটিং মাঝপথে বন্ধ করে ফিরে এলে অনেক টাকার ক্ষতি। কিন্তু এই খবর শোনার পর জিতদা এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করেনি। তখনই সিদ্ধান্ত নেয় আমাদের সবাইকে একসঙ্গে নিয়ে দেশে ফেরার।এত অল্প সময়ে এত গুলো লোকের টিকিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। পৃথিবীর ব্যস্ততম এবং গুরুত্বপূর্ণ এয়ারপোর্ট হিথ্রো। কত কত টুরিস্ট, প্যাসেঞ্জার সকলেই তখন ভিড় জমিয়েছে এয়ারপোর্টে, সকলেই বাড়ি ফিরতে চায়। যাইহোক, অনেক চেষ্টার পর দু’টো ফ্লাইটে ভাগ করে আমরা ফিরে আসি।

হ্যাটস অফ জিতদা 

পরদিন এয়ারপোর্টে এসে চমকে গিয়েছিলাম! এটা হিথ্রো নাকি আমাদের হাওড়া স্টেশন! পিলপিল করছে মানুষ। অস্বাভাবিক অবস্থা! ওই দৃশ্য মনে থাকবে সারা জীবন। হ্যাটস অফ জিতদা, এবং তাঁর ইউনিট, ওই সময় এত গুলো লোককে নিয়ে ফেরা মুখের কথা ছিল না। ফেরার পথে প্রথমে দুবাই তে এলাম। দুবাই কিন্তু ফাঁকাই ছিল। সেখান থেকে কলকাতা। কলকাতায় এয়ারপোর্টে আমাদের পরীক্ষা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের সঙ্গে দুবাই থেকে একটা ফ্যামিলি আসছিলেন। ওঁরা আমাদের সঙ্গে ছবি তোলেন, বেশ কাছাকাছি বসেই গল্প করেছিলাম দুবাই এয়ারপোর্টে। কলকাতা এয়ারপোর্টে আমাদের ছেড়ে দিলেও ওই পরিবারটিকে আটকে দেওয়া হয়। ওদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। এটা দেখার পর টেনশনে পড়ে যাই। মাদের সবার টিকিট হয়। 

স্ত্রী স্বর্ণালী ও পুত্র জানের সঙ্গে
স্ত্রী স্বর্ণালী ও পুত্র জানের সঙ্গে

ছোট্ট ছেলেটার জন্য মন কেমন করছিল

কথা ছিল ইংল্যান্ড থেকে ফিরে আমার স্ত্রী ও পুত্রকে শ্রীরামপুরের বাড়ি থেকে নিয়ে কলকাতায় নিজেদের ফ্ল্যাটে ফিরব। সেটা না করে আমি একাই আমার ফ্ল্যাটে ফিরি। ড্রাইভারকে আমার মালপত্রে হাত দিতে দিইনি। নিজেই সব নামিয়েছি। টানা ১৪দিন নিজেকে ঘরবন্দিকরে রাখি। সেই সময় এলাকায় রটে গিয়েছিল একজন লন্ডন ফেরত করোনা আক্রান্ত অভিনেতা দেশে ফিরে লুকিয়ে রয়েছে! তখন সবে মাত্র লন্ডন ফেরত আমলা পুত্রের ঘটনায় কলকাতা সরগরম। যাই হোক তখন আমাদের সেক্রেটারি আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সব রকম সাহায্য করেন। আমি বাড়ি থেকে বের হইনি। ডিরেক্টর অনুপ চক্রবর্তী এবং সেক্রিটারি ওঁরাই আমার বাজার, খাবারদাবার, আর প্রয়োজনীয় সব কিছু দরজায় পৌঁছে দেন। ১৪ দিন শেষ হওয়ার পর যখন বাইরে এলাম ততদিনে লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। আমার ছোট্ট ছেলেটার জন্য মন খারাপ করছিল। প্রায় ৩৫ দিন পর বিশেষ অনুমতি সংগ্রহ করে স্ত্রী এবং সন্তানকে কলকাতায় নিয়ে আসি।

আর্টিস্ট ফোরামকে স্যালুট

এই সময় গোটা পৃথিবী অর্থ সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা শিল্প শ্রমিক। রোজ কাজ করে অর্থ রোজকার করি, কাজ বন্ধ মানেই ইনকাম নেই। এর ফলে প্রচুর আর্টিস্ট, টেকনিশিয়ান ভাইরা বিপদে পড়েছেন। আবার কবে থেকে কাজ শুরু হবে কিচ্ছু বলা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আর্টিস্ট ফোরাম বিভিন্ন রকম সাহায্য তো করছেই। তাছাড়াও ফোরামের প্রত্যেক সদস্যকে ব্যক্তিগত ভাবে জানানো হয়েছে যে কারও যদি কোনও আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন হয় তাহলে তাঁরা যেন অবিলম্বে আর্টিস্ট ফোরামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ফোরাম থেকে সাধ্য মত সাহায্য করা হবে। আর্টিস্ট ফোরামের এই উদ্যোগকে আমি মন থেকে সাধুবাদ জানাই। 

 

 

 

বায়োস্কোপ খবর

Latest News

ভোটের মধ্যেই ময়নার বাকচায় বিজেপি কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, খুনের অভিযোগ পরিবারের JEE Main-এ দুর্দান্ত ফল যমজ আরভ-আরুশের, দুজনের লক্ষ্য আইআইটিতে গণিত পড়া বিয়েতে মটন কারি কম পড়ায় ক্যাটারিং সংস্থার কর্মীদের মার, পালাতে গিয়ে মৃত ১ জোরকদমে চলছিল প্রচার, এরই মাঝে বাতিল হল বাংলার এই বিজেপি প্রার্থীর মনোনয়ন হয় গতজন্মে বাংলায় জন্মেছিলাম, নয়ত পরজন্মে বাংলার কোনও মায়ের কোলে জন্ম নেব: মোদী নেপাল–জাকির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অতীত, তৃণমূল সুপ্রিমোর বার্তায় এক যুযুধান দু’‌পক্ষ T20 WC-এর জন্য নিজের বাছাই করা একাদশে হার্দিককে রাখলেন না সেহওয়াগ,টিমে রয়েছে চমক '১২ বছর বয়সে যৌন নিগ্রহের শিকার! ভয়ে কাঁপতাম,কেউ ছিল না’, নীরবতা ভাঙলেন চূর্ণী '২৬ হাজার পরিবারের সুখ ছিনিয়ে নিল TMC-র দুর্নীতি', মোদীর মুখে SSC রায় আজকের ৮৮ আসনের ধনীতম প্রার্থীর সম্পত্তির পরিমাণে ঘুরবে মাথা!

Latest IPL News

তাঁর প্রতি বিশ্বাস হারালে,পন্ত কী করেন- ভক্তের ভিডিয়ো দেখে উচ্ছ্বসিত DC অধিনায়ক টস জিতে ডু'প্লেসির ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তে সহমত ছিলেন না- স্বীকার করলেন গ্রিন স্টার্ককে বাদ দেবে KKR? বদলে অভিষেক হবে চামিরার? বড় বদল হতে পারে PBKS-এর একাদশে স্টার্ক কিংবদন্তি, কয়েকটি ম্যাচ দেখে ওকে বিচার করা যায় না- বার্তা KKR সতীর্থের ১৪-১৫ ওভার ব্যাট করে, ১১৮ স্ট্রাইকরেট মানা যায় না- কোহলিকে ধুইয়ে দিলেন গাভাসকর টানা হাফডজন হারের পর জয়ের মুখ দেখল RCB,মার্করাম-ক্লাসেনকে ফিরিয়ে হিরো স্বপ্নিল মার্শের বদলে দিল্লি ক্যাপিটালসে আফগানিস্তানের 'পুরনো চাল', আগে কখনও IPL খেলেননি IPL 2024: লক্ষ্যে সফল, কোহলির থেকে দ্বিতীয় ব্যাট আদায় করেই ছাড়লেন নাছোড় রিঙ্কু ইডেন থেকে চিপক, হোম অ্যাডভান্টেজ কাজে লাগাতে কতটা সহায়তা করছে পিচ? 'Don't spread nonsense', মিথ্যে উদ্ধৃতির অভিযোগে এক ওয়েবসাইটকে ধুয়ে দিলেন রায়াডু

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.