বাংলাদেশের বিনোদন জগতের অন্যতম পরিচিত নাম হোমায়রা হিমু। নায়িকার মৃত্যু ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য! ঢাকার উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত বলে ঘোষণা করে চিকিৎসকরা। এরপরই পালিয়ে যায় তাঁর প্রেমিক। হিমু আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে সবটা স্পষ্ট হবে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ওরফে রুফির সঙ্গে বিয়েসংক্রান্ত বিষয় এবং অর্থিক বিষয় নিয়ে হোমায়রার মনোমালিন্য চলছিল। ইতিমধ্যেই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে ব়্যাব।
হোমায়রার মৃত্যুর ঘটনায় জিয়াউদ্দিনকে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঢাকার বংশাল থেকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব জানিয়েছে, জিয়াউদ্দিন কেমিক্যাল দ্রব্যের ব্যবসা করেন। পুলিশের কথায়, জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে বিয়েসংক্রান্ত বিষয় এবং অর্থিক বিষয় নিয়ে হোমায়রার মনোমালিন্য চলছিল। মনে করা হচ্ছে এর জেরেই আত্মহত্যা করেছেন অভিনেত্রী।
আশ্চর্যজনকভাবে মরদেহ উদ্ধারের মাত্র পাঁচ দিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় মৃত্যু নিয়ে পোস্ট করেন হিমু। লিখেছিলেন, ‘আমার মৃত্যুর পরে আমাকে নিয়ে ব্যবসা হবে’। এই পোস্ট কেন লিখেছিলেন হিমু? খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৪ সালে হোমায়রার এক নিকট আত্মীয়কে বিয়ে করেছিলেন জিয়াউদ্দিন। সেইসূত্রেই আলাপ দুজনের। পরে সেই বিয়ে ভাঙলেও হোমায়রার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল অভিযুক্তর। ২০২০ সাল নাগাদ আবারও বিয়ে করেন জিয়াউদ্দিন। কিন্তু অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙেননি। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখেন। মাঝেমধ্যেই বিয়ে প্রসঙ্গে দুজনের বচসা হত এবং হোমায়রা আত্মহত্যার হুমকি দিতেন বলে তদন্তে নেমে জেনেছে পুলিশ।
পুলিশি জেরায় জিয়াউদ্দিন জানায় বুধবার রাতেও দুজনের মধ্য়ে বচসা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ হোমায়রার বাড়িতে যান জিয়াউদ্দিন। টাকাপয়সা নিয়ে ফের ঝামেলা শুরু হয় দুজনের, বাড়িতে ভাঙচুর চালান হিমু। এরপর মই এনে সিলিং ফ্যান লাগানোর লোহার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা দড়িতে গলায় ফাঁস দেন তিনি। সবটাই ঘটে জিয়াউদ্দিনের সামনে। হিমুকে সেখান থেকে শুরুতে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন অভিযুক্ত। এরপর প্রতিবেশি মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরের সাহায্যে হোমায়রাকে নামিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান জিয়াউদ্দিন। অভিনেত্রীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে হোমাইরার গাড়ি ও দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে পলিয়ে যান জিয়াউদ্দিন। এই দাবি কতখানি সত্য তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
২০১১ সালে ‘আমার বধূ রাশেদ’ দিয়ে বড় পর্দায় সফর শুরু হয়েছিল তাঁর। এর পর সেভাবে ছবিতে আর দেখা যায়নি হিমুকে। কিন্তু টেলিভিশন নাটকে চুটিয়ে কাজ করেছেন। ‘বাড়ি বাড়ি শাড়ি শাড়ি’, ‘হাউসফুল’, ‘গুলশন এভিনিউ’ - নানা অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার কাজ করেছেন তিনি।