বিপাশা তাঁর শরীর এবং সাস্থ্যের প্রতি বরাবরই অসম্ভব সচেতন। বহু সাক্ষাৎকারেই তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে ‘ জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকুন। জাঙ্ক ফুড এবং মিষ্টি কখনও শরীরের জন্য ভালো কিচ্ছু করে না। খাবার সবসময় পরিমিত ভাবে খাওয়া উচিত।’ বিপাশার মতে প্রতিদিনের সঠিক ডায়েট, কঠোর পরিশ্রম এবং কিছু এক্সারসাইজই একমাত্র সহজ উপায় নিজের ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রেখে সর্বদা সুস্থ ও সতেজ থাকার। যাঁদের পক্ষে জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানো সম্ভব নয় তাঁরা বাড়িতেই যোগ ব্যায়ামের মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ রাখুন। শুধু শরীর নয়, নিয়মিত যোগ ব্যায়ামে ভালো থাকে মনও, বাড়ে কাজের এনার্জি। সফলতা আসে সহজে। এমনই পরামর্শ তিনি দিয়ে থাকেন তাঁর ভক্তদের।
ঘুম থেকে উঠে
খালি পেটে উষ্ণ গরম জলে লেবু মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যেস তাঁর বরাবরের, এবং তার পরেই সূর্যপ্রণাম দিয়ে দিন শুরু করেন বিপাশা। এরপর এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা তাঁর চাই। সঙ্গে উষ্ণ গরম জলে ভিজিয়ে রাখা আমন্ড বাদাম এবং চিনা বাদাম। এই দিয়েই দিন শুরু হয় বলিউডের ফিটনেস কুইন বিপাশা বসুর।
প্রাতরাশ, সঠিক এবং সুষম
চা খাওয়ার পর নিয়ম করে এক ঘন্টা যোগ ব্যায়াম সেরে থাকে দিনের প্রথম খাবার বা ব্রেকফাস্ট পর্ব। বিপসের মতে সঠিক এবং সুষম প্রাতরাশ নির্বাচন করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছয়টি ডিমের সাদা অংশ, টোস্ট, পরিজ, ঘরে পাতা দই, এক গ্লাস স্কিমড দুধ এবং টাটকা ফল, মোটামুটি এই দিয়েই ব্রেকফাস্ট সারেন বিপাশা ।
মধ্যাহ্ন ভোজন
মুম্বইতে থাকলে দুপুরে এবং রাতে তিনি বাড়িতে তৈরি খাবারই খান। এক বাটি ডাল, হাতে তৈরি গম বা সোয়াবিনের রুটি, সবুজ শাকসবজি, সবুজ স্যালাড, মাছ বা মুরগি হালকা কোনও পদ। ভাত খেতে ইচ্ছে করলেও সেটা এড়িয়েই চলেন। শুটিংয়েও বাড়ির খাবারই খেয়ে থাকেন।
ফলের রস, স্ন্যাক্স ও অন্যান্য খাবার
অনেকটা খাবার একসঙ্গে না খেয়ে সারাদিনের খবারের একটা সঠিক পরিমাপ করিয়ে সেই পরিমাণ খাবারটাই কয়েকটা ভাগে অল্প অল্প করে খাওয়া উচিত। প্রয়োজনে দুপুরে হালকা কিছু খেলেও প্রাতরাশ কিন্তু ভারী ও স্বাস্থ্যকর হওয়া জরুরি। ফলের রস এবং ডাবের জল তিনি নিয়ম করে খেয়ে থাকেন শরীরকে হাইড্রেড রাখার জন্য। স্নাক্সের ক্ষেত্রে জ্যাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকেন বিপাশা। ডায়েট বিস্কুট এবং চা দিয়েই সন্ধ্যেবেলার পর্ব সারেন তিনি।
রাতের খাবার অবশ্যই হালকা
সারাদিন কাজের পর রাতের খাবার হালকা কিন্তু প্রোটিন যুক্ত হওয়া প্রয়োজন। গ্রিলড চিকেন বা স্টিমড মাছ থাকে তাঁর রাতের মেনুতে। সঙ্গে সবুজ স্যালাড আবশ্যক।
কিছু স্পেশাল নিয়ম বিপাশা বসুর খাবারের মেনুতে
১) প্রতিটা রান্না অবশ্যই অলিভ অয়েলে করা হয়।
২) নারকেল বা ডাবের জল রোজ থাকে তাঁর খাদ্য তালিকায়। এতে ত্বকের জেল্লা বাড়ে এবং শরীর হাইড্রেড থাকে।
৩) যেহেতু তিনি বাঙ্গালি, তাই মিষ্টি খাবার ক্ষেত্রে অনেক সময় লোভ সামলাতে পারেন না, তাই চেষ্টা করেন ব্যয়াম ও সারাদিনের কঠোর পরিশ্রম এবং ডায়েটের মাধ্যমে ক্যালোরির সমতা বজায় রাখতে।
৪) সপ্তাহে ৬ দিন ডায়েট এবং ফিটনেসের সবরকম নিয়ম মেনে চলেন বিপাশা। কেবল একটা দিন কিছুটা শিথিল রাখেন তাঁর নিয়ম। এছাড়া বিপাশা তাঁর ভক্তদের যোগ ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন সবসময়। রোজ ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম খুবই প্রয়োজন। তাঁর মতে সব থেকে জরুরি একটি নিয়ম মাফিক সুস্থ জীবন যাপন।
বিপাশা বসুর নিজের তৈরি ইমিউনিটি বুস্টিং ড্রিঙ্ক রেসিপি
যা লাগবে-- ৭ টেবল চামচ হলুদ গুঁড়ো, ৭ টেবল চামচ মৌরি , ৪ টেবল চামচ গোটা জিরে, ৪ টেবল চামচ গোটা ধনে, ২ টেবল চামচ শুকনো আদা গুঁড়ো, ২ টেবল চামচ গোটা গোল মরিচ, ১/২ টেবল চামচ দারুচিনি। এবং ৩ টেবল চামচ ছোট এলাচ।
প্রণালী-- হলুদ এবং আদার পাউডার একটা আলাদা বাটিতে রাখতে হবে। বাকি সব ক'টি উপকরণ একটি ফ্রাইং প্যানে শুকনো ভেজে মিক্সিতে দিয়ে পাউডার বানিয়ে তার সঙ্গে আলাদা করে রাখা হলুদ ও আদা গুঁড়োটা মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর একটি এয়ার টাইট কৌটেতে রেখে দিতে হবে ঠান্ডা জায়গায়। প্রতিদিন নিয়ম করে গরম জলের সঙ্গে এই ইমিউনিটি বুস্টিং পাউডার ১ চামচ মিশিয়ে খেতে হবে। চাইলে ডালের সঙ্গেও এই পাউডার মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।