খারাপ খবরের পথ চলা যেন শেষ হচ্ছে না। সৌজন্যে যে করোনা তা বলার জন্য কোনও পুরস্কার নেই। এবার করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট শিশু সাহিত্যিক সুভদ্রা সেনগুপ্ত। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক নেমে এসেছে ভারতীয় সাহিত্যজগতে। সোমবার গভীর রাত্রে মৃত্যু হয়েছে এই বর্ষীয়ান সাহিত্যিকের।সুভদ্রা দেবীর মৃত্যুর খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন তাঁর খুড়তুতো ভাই শুদ্ধব্রত সেনগুপ্ত। জানিয়েছেন একজন জনপ্রিয় লেখিকা হওয়ার পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও কতটা দুর্দান্ত ছিলেন তাঁর 'বুল দি'. ছোটদের জন্য ঐতিহাসিক গল্প আর ইতিহাসকে দু'মলাটের মধ্যে তিনি যেভাবে পেশ করে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন, তার আর নজির নেই বললেই চলে। ইতিহাস ও স্মৃতি এই দুই ক্ষেত্রেই তাঁর বিচরণ ছিল দৃপ্ত। পাশাপাশি পুরোনো দিল্লির প্রতি প্রয়াত লেখিকার গভীর টানের কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি তাঁর ভাই।
প্রসঙ্গত,২০১৫ সালে লেখালিখিতে তাঁর অবদানের জন্য সাহিত্য আকাদেমির বাল সাহিত্য পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল সুভদ্রা সেনগুপ্ত-কে।ছোটদের জন্য ইতিহাসকে যেভাবে তুলে ধরেছেন তিনি তাঁর লেখায় এককথায় তার নজির তুলনাহীন। প্রায় ৬০টির বেশি এই রচয়িতার ঝোলায় যেমন রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক গল্প তেমনই রয়েছে কল্পবিজ্ঞানের গল্প,ভূতের ও অ্যাডভেঞ্চারের গল্প। বিশেষ করে 'আ চিলড্রেন'স হিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া','দ্য কনস্টিটিউশন অফ ইন্ডিয়া ফর চিলড্রেন' তাঁর লেখা অন্যতম দু'টি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। তাঁর রচিত 'মিস্ট্রি অফ দ্য হাউজ অফ পিজিয়নস' এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে একটি টিভি সিরিজও।
কেন লিখতেন তিনি ছোটদের জন্য ইতিহাসের সব ঘটনা,গল্প? জবাবে এই সুভদ্রা সেনগুপ্ত নিজেই জানিয়েছিলেন,একবার একটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে কচিকাঁচাদের প্রশ্ন করে তিনি জানতে পারেন ইতিহাস তাদের অন্যতম অপছন্দের বিষয়। শুধু তাই নয়,এক ছোট্ট শিক্ষার্থী তাঁকে প্রশ্ন করেছিল, পুরোনো আমলেও কি ছোটদের 'হোমওয়ার্ক' করতে হতো? এই ছোট্ট,সাধারণ প্রশ্নই ভাবিয়ে তুলেছিল সুভদ্রাকে। এরপরেই ধীরে ধীরে ছোটদের জন্য ইতিহাসকে কীভাবে জনপ্রিয় করা যায় সেই চেষ্টায় ব্রতী হলেন তিনি। বাকিটা ইতিহাস।