বাঙালি বাড়িতে লোকে কুকুর-বিড়াল পোষেন, পাখিও পোষেন। তবে বাড়িতে কেউ সাপ পুষছেন,এমন বাঙালির কথা শুনেছেন কখনও? তবে জানেন কি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির পোষ্য হল সাপ। তাও আবার যে সে সাপ নয়, পাইথন। শুনে চোখ কপালে উঠেছে নিশ্চয়! তবে এটাই ঘটেছে। পরিচালক আবার আদর করে পোষ্য পাইথনের নাম রেখেছেন ‘উলুপী’।
শুধু তাই য়,বনে জঙ্গলে থাকা এই পাইথন এখন থাকে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের লেক গার্ডেন্সের ফ্ল্যাটে, পরিচালকের বেডরুমে। সৃজিতের কোলে উঠে খেলা করে সে, আবার কখনও বই পড়ার সময় পরিচালককে সঙ্গ দেয় উলুপী। সম্প্রতি প্রিয় উলুপীকে নিয়েই অন্য সময় প্রাইমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে খোলামেলা কথা বলেছেন পরিচালক। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কথায়, তিনি ছোট থেকেই সাপ ভীষণ ভালোবাসেন। ছোটবেলায় সাপুড়েরা এলে তাঁদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। বিদেশে গেলেও পেট শপে গিয়ে বল পাইথন কিংবা কর্ন স্নেকের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
'দুধ কলা দিয়ে কালসাপ পোষা' এই কথাতে তাঁর একেবারেই বিশ্বাস নেই বলে জানিয়েছেন পরিচালক। সৃজিতের কাছে এটা নেহাতই কুসংস্কার। তাঁর কথায়, সাপ বিশ্বাসঘাতক নয়। বরং কিছু সাপ যেমন বল পাইথন ভালো পোষ্য। তাঁর কথায়, সে কথা ভাবতে গেলে তো কুকুরও কাউকে কামড়ে মাংস তুলে নিতে পারে। সব প্রাণীরই ‘এক্সট্রিম ম্যানিফেসটেশন’ আছে। ডোবারম্যান ব্যবহারের ধরন দিয়ে যেমন ল্যাবরাডর সম্পর্কে ধারণা করা উচিত নয়, তেমনই গোখরো, কেউটের মতো বিষধর সাপের সঙ্গে বল পাইথনের তুলনা হয় না।
সৃজিতের সাফ কথা, সর্প বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বললেই বুঝবেন বিষ সাপের কাছেও মূল্যবান। বিষধর সাপও আত্মরক্ষা ছাড়া অকারণে বিষ খরচ করে না। এখানেই শেষ নয়, উলুপীকে বাড়িতে রাখতে যাতে কোনও আইনি সমস্যা না হয়, সেবিষয়েও ইতিমধ্যেই কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন পরিচালক।
পরিচালক জানিয়েছেন, সাপ বাড়িতে রাখা আইনি নাকি বেআইনি, সেবিষয়ে তিনিও সংশয়ে ছিলেন, তবে তিনি অরণ্যভবনে গিয়ে নিয়মকানন জেনেছেন। সৃজিত জেনেছেন বিদেশ থেকে এধরনের পোষ্য আনা বেআইনি। তবে কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রি করা কোনও দেশের ব্রিডার বা রিসেলারের থেকে এগুলি কেনা যায়, সেটা বেআইনি নয়।
সৃজিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন তিনি উলুপীকে এনেছেন কেরালা থেকে। উলুপীকে নিয়ে তাঁর মন্তব্য ‘খুবই মিষ্টি ব্যক্তিত্ব। ও কুণ্ডুলী পাকিয়ে শুয়ে থাকতে পছন্দ করে। সাতদিকে একবার খায়, বিকেলে একবার ঘুরতে বের হতে পছন্দ করে।’