বন্ধ হয়ে গেল এফএম রেইনবো। বলা ভালো মার্জ করিয়ে দেওয়া হল গীতাঞ্জলি চ্যানেলটির সঙ্গে। ২ জুলাইয়ে থেমে যায় এই চ্যানেলের পথ চলা। যাঁরা আজও রেডিও শোনেন, যাঁরা আজও আকাশবাণীর একনিষ্ঠ শ্রোতা তাঁদের জন্য এটা সত্যিই দুঃখজনক একটি সংবাদ।
বাংলার ইতিহাস, ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আকাশবাণী। আর এই আকাশবাণীর প্রথম এফএম চ্যানেল হিসেবে পথ চলা শুরু করেছিল এফএম রেইনবো। নয়ের দশকে পথ চলা শুরু হয় এই এফএম রেইনবোর।
এখানেই প্রথম শুরু হয়েছিল শ্রোতাদের সঙ্গে প্রথম ফোনে কথা বলা, তাঁদের বক্তব্য সরাসরি রেডিওতে তুলে আনা। এখানেই একটা সময় করা হতো লাইভ পুজো কভারেজ। বাদ যেত না কলকাতা বইমেলার মতো উৎসব। তাছাড়া শ্রোতাদের নানা বিষয়ে তথ্য দেওয়া, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আভাস দেওয়া, ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে চলা নানা তথ্য ভাগ নেওয়া তো হতোই। চলতো আড্ডাও। রেডিওর জনপ্রিয়তাকে একপ্রকার ফিরিয়ে এনে নবজীবন দান করেছিল এই চ্যানেল। এখানেও বিভিন্ন সময় নানা অনুষ্ঠানে বা ফোনালাপে অংশ নিয়েছেন বাংলার বিভিন্ন শিল্পী, গুণীজনরা। তাঁদের কাজ থেকে সমাজ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
আজও মনে পড়ে মহালয়া ছাড়া ইদানিংকালে বলা ভালো বিগত ৬-৭ বছর আমার অন্তত তেমন আলাদা করে আর কখনই রেডিও শোনা হয় না। কিন্তু মহালয়া চালাতে গিয়ে এদিক ওদিক চ্যানেল ঘোরানোর সময় সেই চেনা সুরে গাওয়া 'এফএম রেইনবো' এখনও কানে বাজে। খবরটা শোনার পর থেকেই বেশ মন খারাপ। আচমকাই থামিয়ে দেওয়া হল এই জনপ্রিয় চ্যানেলের পথ চলা। ফলস্বরূপ যাঁরা এখানে অস্থায়ী ভাবে উপস্থাপক বা উপস্থাপিকা হিসেবে কাজ করতেন তাঁদের কাজটা গেল। সংখ্যাটা নেহাত কম নয়। ১০০ এর বেশি! তাঁদের উপার্জনের এই মাধ্যম বন্ধ হয়ে গেল ২ জুলাই। ক্ষতি হল এতগুলো সংসারের।
একদিকে পছন্দের চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাওয়া, অন্যদিকে এত মানুষের কাজ হারানো, সবটা মিলিয়েই বিশিষ্টজন থেকে সাধারণ নাগরিক সকলেই বিরক্ত। প্রতিবাদ শুরু করেছেন তাঁরা। তাঁদের মতে তাঁরা এই মার্জ মানছেন না। এফএম রেইনবোকে তার পুরনো ফ্রিকোয়েন্সিতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন ওঁরা। এখানে যেমন অন্যান্য চ্যানেলের প্রাক্তন রেডিও জকিরা আছেন, তেমনই আছেন স্বপ্নময় চক্রবর্তীর মতো আকাশবাণীর প্রাক্তন আধিকারিক। চিকিৎসক, থেকে শিক্ষক, সহ ছাত্র, সবাই এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন।