সিনেমার জগতে এখন নায়িকারা যত গুরুত্ব পান, ঠিক ততটাই খল নায়িকারাও। বর্তমানে স্টিরিওটাইপ ভেঙে নায়িকারা স্বাচ্ছন্দে বেছে নিয়েছেন নেতিবাচক চরিত্র। সেই তালিকায় নাম রয়েছে করিনা কাপুর, প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, কাজলদের। তবে জানেন কি, একসময় সিনেমার পর্দায় খলনায়িকা হওয়ার অপরাধে ছাড়তে হয়েছিল নিজের পরিবার। কপালে জুটেছিল দুর্নাম।
ভারতের প্রথম খলনায়িকা হিসেবে নাম আসে পঞ্জাবি অভিনেত্রী কুলদীপ কৌরের। ১৯৪৮ সালে পাঞ্জাবি চলচ্চিত্র চমন দিয়ে অভিনয় জীবনের শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরের বছর হিন্দি ছবি ‘গ্রহস্তি’তে (Grahasti) ভ্যাম্প হিসেবে সাফল্য আসে। পঞ্চাশের দশকের বহু সিনেমায় তাঁকে দেখা গিয়েছিল ভ্যাম্প হিসেবে। সমাধি, বৈজু বাওরা , বাজ, আনারকলি এবং আধি রাতের মতো হিট ছবিতে অভিনয় করেন। চরিত্রে এতটাই প্রাণ ঢেলে দিয়েছিলেন তিনি যে, দর্শকরা তাঁকে ভাবতে শুরু করেন ‘পাকিস্তানি গুপ্তচর’।
আরও পড়ুন: শুধু ভালো নায়ক নন, গায়কও! জিতের সিনেমার গান ধরলেন অনির্বাণ, মুগ্ধ অনুরাগীরা
কুলদীপ কৌর ১৯২৭ সালে লাহোরের জাট পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন এবং ১৬ বছর বয়সে প্রথম সন্তানের জন্ম দেন। তবে, তিনি সিনেমায় যোগদান নিয়ে পরিবারের চাপকে অস্বীকার করে গিয়েছিলেন। দেশভাগের আগে লাহোরে সিনেমা বানানো শুরু করেন। আর এই কাজ করতে গিয়েই সম্পর্কে জড়ান অভিনেতা প্রাণ-এর সঙ্গে। লেখক সাদাত হাসান মান্টো প্রাণকে তার 'পুরুষ উপপত্নী' বলতেন। দেশভাগের পর, প্রাণ আর কুলদীপ ভারতে পালিয়ে আসেন। কেরিয়ার শুরু করেন ভারতীয় সিনেমায়।
আরও পড়ুন: মা অন্নপূর্ণার পুজো, সোনায় মোড়া শুভশ্রী! ইয়ালিনির ছবি দিল নায়িকার বান্ধবী
মাত্র এক দশকের কেরিয়ারে কুলদীপ কৌর ১০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তাঁর মৃত্যু যেমন আকস্মিক, তেমনই দুঃখজনকও ছিল। তিনি ১৯৬০ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে টিটেনাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
আরও পড়ুন: দু-কামরার ছোট্ট ফ্ল্যাটে থাকেন ২৯০০ কোটির মালিক সলমন! ভাইজানের অন্দরমহল দেখে হাঁ নেটপাড়া
তাঁর মৃত্যুর পেছনে দুটি গল্প রয়েছে। কেউ বলেন যে, তিনি শিরডিতে গিয়েছিলেন যেখানে তাঁর গায়ে কাঁটা বিঁধেছিল। অন্য তত্ত্বটি হল, তিনি একটি দরগায় গিয়ে পেরেক থেকে শরীরে ক্ষত পেয়েছেন। তবে যাই হোক, কুলদীপ প্রাথমিকভাবে ভেবেছিলেন, এটি একটি সাধারণ ক্ষত যার জন্য ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন পড়বে না। তবে সেই ক্ষত সংক্রমিত হয়েই তাঁর জীবন চলে যায়।