কাঞ্চন মল্লিকের সংসার ভেঙেছে দু-বার। দ্বিতীয় স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ডিভোর্সের মামলা এখনও কোর্টে বিচারাধীন। দু-বছর আগেই জানা যায়, দুজনের দাম্পত্য সম্পর্ক টালামাটাল। তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে উঠে এসেছিল শ্রীময়ী চট্টরাজের নাম। দুজনের সম্পর্ক এখন আগের চেয়ে অনেক খোলামেলা। আরও পড়ুন-‘আমার বোধহয় বেঁচে থাকা উচিত নয়..’, কাঞ্চনের বিয়ে ভাঙার অভিযোগ, ভেঙে পড়েন শ্রীময়ী
রাত পার্টিতে হোক বা রাস পূর্ণিমায়, দুর্গা পুজোয় হোক বা জগদ্ধাত্রী পুজোয়, সর্বদাই পাশাপাশি কাঞ্চন-শ্রীময়ী। সম্প্রতি এক ফটোশ্যুটে জুটির মাখামাখি দেখে তাঁদের 'নতুন শোভন-বৈশাখী' বলেও বিদ্রুপ করেছেন অনেকে।
সকলের মুখে হাসি ফোটানো কাঞ্চন মল্লিক বাস্তবে নাকি ভীষণ একা হয়ে পড়েছিলেন মায়ের মৃত্যুর পর। সেইসময়ই বেড়েছে দুজনের বন্ধুত্বের ঘনিষ্ঠতা, এক সাক্ষাৎকারে জানালেন শ্রীময়ী। তাঁর কথায়. 'আমার সঙ্গে অনেক বছর হয়ে গেল (কাঞ্চনের) এই বন্ধুত্ব, ১০-১২ বছর। আমাকে অনেক ছোট থেকে কাঞ্চনদা চেনে। এই বন্ধুত্বটা এতটা গভীরও হত না, আসলে কাঞ্চনদার মা মারা যাওয়ার পর আমি দেখেছি ওঁনাকে কীভাবে একাকীত্ব গ্রাস করেছিল। কাঞ্চনদা খুব ইন্ট্রোভার্ট। উনি নিজের ব্যক্তিজীবনকে সামনে আনতে চান না। সমস্যাটা হল, কাঞ্চনদা এত মানুষের মুখে হাসি ফোটায় আমি ওঁকে একা ঘরে কাঁদতে দেখেছি। বলেছে-আমার সবকিছু থাকতেও কিছু নেই।'
কাঞ্চনকে নতুন করে বাঁচার টোটকা দেন শ্রীময়ী। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কৃষ্ণকলি খ্যাত অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি সেইসময় ওকে বলেছিলাম তুমি যে পশ্চিমবঙ্গের কোণায় কোণায় পারফর্ম করছো। দশ-হাজার মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছো। সেই লোকগুলো তোমাকে দেখার অপেক্ষা করে। তোমার ছাতার তলায় তাঁরা রয়েছে। তাই আমার মনে হয় তোমাকে (কাঞ্চন) আগে বাঁচতে হবে। জীবন তো একটাই।’
খানিক থেমে শ্রীময়ীর সংযোজন, 'আসলে.. কাঞ্চনদা জীবনে প্রপার একটা কাঁধ পায়নি। যেখানে বিশ্বাস করে কাঞ্চনদা কথাগুলো বলবে। অনেকেই অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকের কাছে এসেছে কাজ পেতে, সুযোগ পেতে। অনেকেই এসেছে হাসি-মজা বা ইয়ার্কির জন্য। কাঞ্চনদার জীবনের ওই কাঁধটা কিংবা (বিপদে) কাঞ্চনদার হাতটা আমি ধরেছিলাম'।
এখন বিধায়ক, অভিনেতা কাঞ্চনের জীবনে এখন অনেক বদল এসেছে। তিনি সিগারেট খাওয়া বা মদ্যপান সব ছেড়ে দিয়েছেন। বরং শরীরচর্চায় মন তাঁর, জানান বান্ধবী শ্রীময়ী। ট্রোলারদের কড়া জবাব দিয়ে বলেন, ‘একটা মানুষের পাশে থেকেছি, ভালো করেছি। এই বন্ধুত্বটা থাকবে। এই বিশ্বাসটা থাকবে। যে কোনও সম্পর্কে স্বচ্ছতাটা খুব দরকার। ভবিষ্যতে আমি কোনও সম্পর্কে জড়ালে সেটা মেনটেন করব।’
তাঁরা কি সহবাস করছেন? সঞ্চালিকার সরাসরি প্রশ্নের জবাবে শ্রীময়ী বলেন-'না, এই সম্পর্ককে সহবাসের নাম দেব না। আমরা তো লিভ ইন করি না। একসাথে বাসই করি না তো সহবাস হবে কী করে! আমরা এই সম্পর্ককে বন্ধুত্বের নাম দিতে পারি। ভালোলাগার একটা ব্যাপার তো থাকবেই।'
নিজের মন্তব্যের রেশ টেনে শেষে সংযোজন, ‘অফিসিয়্যালি একটা সই করে নিলাম, কিন্তু সম্পর্কে ভালো নেই। প্রতিদিন আমাকে অত্যাচারিত হতে হচ্ছে… কিংবা কিছু পাওয়ার আশায় মিথ্যে সম্পর্কে থাকার থেকে ভালো থাকুন। যে ভাবে মনে হয় ভালো থাকুন। সবসময় যে সম্পর্কের নাম দিতে হবে স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন…. (সেটা নয়), আমরা বন্ধুত্বের সম্পর্কে খুব ভালো আছি'।