কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক–অশিক্ষক কর্মীদের চাকরি চলে গিয়েছে। গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহে এই পরিস্থিতি আরও উত্তাপ বাড়িয়েছে চাকরিহারাদের সংসারে। এই আবহে কথা রাখল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। চাকরিহারাদের এপ্রিল মাসের শেষেই বেতন দিল রাজ্য সরকার। এই বেতন দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই বেতন যাতে বন্ধ না হয় এবং চাকরিহারারা চাকরি ফিরে পান তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে রাজ্য সরকার। সেখান থেকে স্থগিতাদেশ মিললে চাকরি থাকবে। আর অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে বহাল থাকবে চাকরি। তবে দুশ্চিন্তা কাটছে না
এদিকে প্রত্যেকটি নির্বাচনী জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, এই রায় বেআইনি। যোগ্যদেরও চাকরি খেয়েছে বিজেপি। কারণ বোমা ফাটানোর কথা বলার পরই এতজনের চাকরি গেল। সুতরাং এই ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র আছে। এটার শেষ দেখে ছাড়ব। ইতিমধ্যেই মামলা দাখিল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এমনকী শুনানি পর্যন্ত হয়েছে। যদিও চাকরিহারাদের বক্তব্য, এই অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ অবস্থায় এক মাসের বেতন স্বস্তি জোগাতে পারেনি। এপ্রিল মাসের বেতন মেলার বিষয়টি নিশ্চিতই ছিল। এপ্রিল মাসের পর কী হবে? বেতন মিলবে কি না তা নিয়েই ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। স্বস্তি একমাত্র রায়টি খারিজ হলেই মিলবে।
আরও পড়ুন: ‘চলুন বদলাই, চলুন পাল্টাই’, কেন্দ্রীয় সরকারে বদল আনতেই নয়া স্লোগান মমতার
অন্যদিকে এপ্রিল মাসের বেতন দিয়ে সংসার চলবে। আর মে মাসের মধ্যে একটা সঠিক রায় মিলবে সুপ্রিম কোর্ট থেকে। এমনটাই আশা করছে রাজ্য সরকার এবং এসএসসি। তার ফলে চাকরি বহাল থাকবে। সেক্ষেত্রে বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাবেন সকলে। কারণ চাকরি না থাকলে, বেতন না মিললে, সংসার চালানো কঠিন। তার সঙ্গে সামাজিক সম্মান জড়িয়ে আছে। তাই একমাত্র ভরসার জায়গা সুপ্রিম কোর্ট। যেখানে মামলা করে আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে চাকরিহারাদের বাঁচাতে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতেই সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরি নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে এসএসসি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং রাজ্য সরকার। তবে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশনের বেঞ্চের নির্দেশে যে সিবিআই তদন্ত চলছিল সেটাতে আপাতত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া চাকরিহারারা এখন বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। কারণ যোগ্য হয়েও প্রশ্ন শুনতে হচ্ছে। আবার সংসার চলবে কেমন করে তাও ভাবতে হচ্ছে। বাড়ির ছোটদের সামনে নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সেখানে আশার আলো বলতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত। এদিন সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কার নির্দেশে এই অতিরিক্ত পদ তৈরি হল? কে কে সুবিধাভোগী? সবটা খতিয়ে দেখা হবে। আর পরবর্তী শুনানির দিনের দিকে তাকিয়ে আছেন চাকরিহারারা।