বাংলা বাণিজ্যিক ছবির অন্যতম সফল নায়ক জিৎ। নিজের নামের আগে ‘সুপারস্টার’ বসান ফিল্মের ক্রেডিটে, সেই নিয়ে নিন্দকদের নাক সিঁটকানিকে পাত্তা দিতে না-রাজ জিৎ। কালীঘাটের অবাঙালি পরিবারে বড় হওয়া জিতু মদনানী থেকে সুপারস্টার জিৎ হওয়ার সফরটা কোনও ফিল্মি চিত্রনাট্যের চেয়ে কম রোমাঞ্চকর নয়। বৃহস্পতিবার ৪৫ পূর্ণ করে ৪৬-এ পা দিলেন জিৎ।
জিৎ-এর জন্মদিনের ঠিক আগেই মুক্তি পেয়েছিল ‘মানুষ’। যদিও বক্স অফিসে সেভাবে সাড়া ফেলতে ব্যর্থ ‘সুপারস্টার’ জিৎ-এর এই ছবি। চেঙ্গিজের সাফল্যকেও ছুঁতে পারেনি মানুষ। যদিও ছবির ব্যবসা নিয়ে স্পিকটি নট নায়ক। কিন্তু এদিন জিতের বাড়ির সামনে উপচে পড়ল ভক্তদের ভিড়। প্রতি বছর ৩০শে নভেম্বর জিৎ ভক্তদের ডেস্টিনেশন এটা। প্রিয় নায়কের জন্মদিনে কেক, বেলুন, পোস্টার হাতে পৌঁছেছিল ভক্তরা। তাঁকে এক ঝলক দেখার অপেক্ষা। নিরাশ করলেন না জিৎ।
ব্যালকনিতে এসে ভক্তদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন নায়ক। পরনে ছাই রঙা হুডি আর ডেনিমের হাফ জ্যাকেট। সঙ্গে জিনস। মাইক হাতে অভিনেতা বললেন, ‘আপনারা প্রতি বছর এই দিনটায় এখানে আসেন। সেটা খুব স্পেশ্যাল, অনেক স্মৃতি রয়েছে। এই মুহূর্তগুলো ভবিষ্যতেও উদযাপন করব’। এদিন জিতের পাশে দেখা মিলল তাঁর মেয়ে নবন্যার।
ভক্তদের আবেদনে নিজের ছবির জনপ্রিয় সংলাপও বললেন জিৎ। মানুষ ছবির টিজারে হিট সংলাপ শোনা গেল তাঁর মুখে। বললেন, ‘আমি মানুষ হিসাবে হারতে পারি, বাবা হিসাবে নয়’। সব শেষে জিৎ যোগ করেন, ‘এই যে আপনারা এখানে এলেন, সারা বছরের অক্সিজেন দিয়ে চলে গেলেন’।
পরে বিকালে নিজের টিমের সঙ্গ কেক কাটলেন জিৎ। দেখা মিলল মানুষ নায়িকা সুস্মিতারও। এদিন ডায়েট ভুলে কেকের ছোট্ট টুকরো মুখে তুললেন বস!
টলিপাড়ায় ২০ বছর সম্পূর্ণ করেছেন জিৎ। কলকাতার ছেলে মুম্বই গিয়ে স্ট্রাগল করেছেন, দক্ষিণী ছবিতে সুপার ফ্লপ হয়ে ভেঙে পড়েছিলেন। তখনই জিতের ঝুলিতে আসে ‘সাথী’। হরনাথ চক্রবর্তীর পরিচালনায় তৈরি সেই ছবি দিনের পর দিন হাউসফুল থেকেছে। আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এরপর দু-দশক ধরে ইন্ডাস্ট্রিকে শাসন করছেন জিৎ।
জিৎ রাজনীতিতে নেই, সোশ্যাল গ্যাদারিং-এ দেখা মেলে না। মেনে চলেন নিজের ব্যাকারণ, সাতে-পাঁচে থাকা না-পসন্দ তাঁর। তাঁর দর্শন কম মেলার অভিযোগ নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে নায়ক জানান, ‘সেই জন্যই তো আমি ভাবছি বছরে ফিল্মের সংখ্যা বাড়াতে। এবছর ভেবেছিলাম ৩টে ছবি রিলিজ করব। দু-টো রিলিজ করছে ভগবানের কৃপায়। এই অভিযোগটা আমি বরাবরই শুনতে পাই। ফিল্মের রিলিজের সংখ্যা বাড়লে আরও বেশি করে সবার সঙ্গে দেখা হবে। চেষ্টা করি বিভিন্ন মাধ্যমে মানুষের সঙ্গে কানেক্টেড থাকার। আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ফিল্মের বাইরে কোনও স্ট্রং কারণ থাকলে নিশ্চয় জুড়ে থাকার চেষ্টা করব।’