ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা মতো ভেন্টিলেশনে ছিলেন। অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক ছিল তাঁর। তবে ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। আগের থেকে এখন অনেকটাই ভালো আছেন তিনি। তবে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অসুস্থতার সময়ে যখন গত রাজ্য উদ্বিগ্ন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং গিয়ে তাঁকে দেখে এসেছেন, তখন ফেসবুকের পাতায় কবিতার আকারে একটার পর একটা বোমা ফাটাতে থাকেন কবীর সুমন।
কবীর সুমন ফেসবুকে ধনঞ্জয়ের গান নাম দিয়ে তিনটি কবিতা পোস্ট করেছেন। আর ধনঞ্জয় নামটা বললেই বাংলার বা বাঙালিদের সবার আগে যে নামটা মনে পড়ে সেটা হল এক নাবালিকা ধর্ষণ এবং খুন কাণ্ডে জড়িত থাকা ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের। হেতাল পারেখ ধর্ষণ কাণ্ডে ফাঁসি হয় তাঁর। এই মামলায় অনেক ফাঁক ফোকর ছিল বলেই দাবি করা হয় আজও। বহুল চর্চিত এই কেসে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করেই তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর এই বিতর্কিত কেসের সময় মুখ্যমন্ত্রীর আসনে ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য সেই সময় ধনঞ্জয়ের ফাঁসির দাবি তুলেছিলেন।
কবীর সুমনের পোস্ট করা এই তিন কবিতা পড়লে সেই কথা মনে পড়তে বাধ্য। নেটপাড়ার একাংশের দাবি ২০০৪ সালে ঘটে যাওয়া সেই ফাঁসির কথা মনে করিয়ে এই সময় বুদ্ধদেবকে আক্রমণ শানালেন কবীর সুমন।
এই কবিতায় তিনি ‘প্রৌঢ় ফাঁসুড়ে’, ‘মীরা’, ইত্যাদি এমন অনেক শব্দ ব্যবহার করেছেন। কিন্তু ‘প্রৌঢ় ফাঁসুড়ে’ বলতে কাকে বুঝিয়েছেন তিনি? এই সময়কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই বর্ষীয়ান গায়ক বলেন, 'আমি আমার কাজ করেছি। আমি কবিতা লিখি, সেটাই লিখেছি, আর যা বলতে চেয়েছি সেটা কবিতাতেই আছে। ওটা পড়লেই বোঝা যাবে।' তিনি খোলসা না করলেও স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন তাঁর বয়ানের মাধ্যমে যে তাঁর এই কবিতার টার্গেট আসলে কে।
নেটপাড়ার অনেকে মনে করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যখন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি তখন কবীর সুমন তাঁর আরোগ্য কামনার বদলে মৃত্যু কামনা করেছেন। কারণ তিনি তাঁর পোস্টে বারংবার ‘চিতা’, ‘গান স্যালুট’, ‘মীরার ভজন’, ‘বলো হরি বোল’ ইত্যাদির মতো শব্দ বন্ধনী ব্যবহার করেছেন। ফলে তাঁর করা এই পোস্ট যে নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছে সেটা বলা যায়।