'আদিপুরুষ' নিয়ে উন্মদনা তুঙ্গে। মুক্তির পর থেকেই ছবি দেখার জন্য সিনেমাহলে ভিড় করছেন দর্শক। তবে উৎসাহ যতই থাক, ছবি দেখার পর সংলাপ শুনে অনেকেই হতাশ। বিশেষত বজরংবলীর মুখে যে সংলাপ বসানো হয়েছে, তাতে অনেকেই বিরক্ত। বহু লোকজনের দাবি, এভাবে সরলীকরণের নামে হিন্দু সংস্কৃতিকে আঘাত করা হয়েছে, বজরংবলীর ব্যক্তিত্বকেই পাল্টে দেওয়া হয়েছে। তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছেন চিত্রনাট্যকার মনোজ মুনতাশির শুক্লা। অবশেষে বিতর্কের মুখে জবাব দিলেন চিত্রনাট্যকার।
ঠিক কী লিখেছেন চিত্রনাট্যকার মনোজ মুনতাশির শুক্লা?
সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্টে মনোজ লিখেছেন, ‘রামকথা থেকে যে প্রথম পাঠটি শিখতে পারেন তা হল প্রতিটি আবেগকে সম্মান করা। সময়ের সঙ্গে সঠিক-বেঠিক বা ঠিক-ভুল, এই বিষয়গুলি পরিবর্তন হয়, তবে অনুভূতিগুলি থেকে যায়। আমি আদিপুরুষে ৪০০০ টিরও বেশি লাইন লিখেছি, তারমধ্যে হয়ত পাঁচটি লাইনে কিছু অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। অথচ সেই শত শত লাইন, যেখানে শ্রী রামকে মহিমান্বিত করা হয়েছে, মা সীতার সতীত্ব বর্ণনা করা হয়েছে, তাতে আমি প্রশংসা আশা করছিলাম, তবে কেন আমি তা পেলাম না জানি না!’
মনোজ আরও লিখেছেন, ‘আমার নিজের ভাইয়েরাই আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাকে অশালীন আক্রমণ করছেন। আমার শ্রদ্ধেয় মায়েদের জন্য আমি টিভিতে অনেকবার কবিতা পড়েছি, সেখানেও নিজের মাকে অশালীন ভাষায় সম্বোধন করেছি। আমি ভাবতে থাকি, মতভেদ থাকতেই পারে, কিন্তু আমার ভাইয়েরা হঠাৎ কেন তিক্ততা আনছেন! তাঁরা কি সেই শ্রী রামকে ভুলে গেলেন, যিনি প্রত্যেক মাকে নিজের মা বলে মনে করতেন? শবরীর পায়ের কাছে এমনভাবে বসতেন, যেন কৌশল্যার পায়ের কাছে বসে আছেন।’
সবশেষে মনোজ লিখেছেন, ‘আজ কেন এই পোস্ট করছি? কারণ আমার কাছে আপনার অনুভূতির চেয়ে বড় কিছু নেই। আমি আমার সংলাপের পক্ষে অগণিত যুক্তি দিতে পারি, কিন্তু এতে আপনার কষ্ট কমবে না। আমি এবং ছবিটির প্রযোজক-পরিচালক সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, কিছু সংলাপ যা আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে, আমরা সেগুলি সংশোধন করব। চলতি সপ্তাহেই ছবিতে সেগুলি যোগ করা হবে৷ শ্রী রাম আপনাদের সকলের আশীর্বাদ করুন!’
আরও পড়ুন-ফাহাদের সন্তানের মা হচ্ছেন, কালো শর্ট ড্রেসে স্পষ্ট দেখা গেল স্বরার বেবি বাম্প
আদিপুরুষ নিয়ে বিতর্ক কোথায়?
ছবিতে বজরংবলীকে এক্কেবারেই 'টাপুরি' ভাষায় কথা বলতে শোনা গিয়েছে। যেখানে বজরংবলীর মুখে শোনা গিয়েছে, ‘কাপড়া তেরে বাপ কা, আগ তেরে বাপ কী, তেল তেরে বাপ কা, জলেগি ভি তেরে বাপ কী’। এধরনের সংলাপ শুনে বেজায় চটেছেন বহু দর্শক।
এর আগে এই ডায়ালগ প্রসঙ্গে মনোজ মুনতাশির শুক্লা বলেছিলেন, তিনি গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন। রামায়ণের কাহিনীও লোকমুখে শুনেছেন। কথ্য ভাষাতেই রামায়ণের গল্প শুনে বড় হয়েছেন। আর সেভাবেই সহজ, সরল প্রচলিত ভাষায় গল্প তুলে ধরতে চেয়েছেন।