মির্জার হাত ধরে প্রযোজনায় হাতেখড়ি অঙ্কুশ হাজরার। এই ছবির জন্য শুধু ঘাম আর রক্ত ঝরাননি অভিনেতা অঙ্কুশ, বরং জলের মতো টাকাও ঢেলেছেন। সাড়ে চার কোটির বাজেটে তৈরি বাংলা ছবি সচরাচর চোখে পড়ে না। তবে বাংলা কর্মাশিয়াল ছবির দর্শককে হলমুখী করার চ্যালেঞ্জ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন অঙ্কুশ। আর ছবি মুক্তির দিন দশকের মাথায় নিজের রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ্যে আনলেন অভিনেতা-প্রযোজক। আরও পড়ুন-'সাড়ে ৪ কোটি বাজেট মির্জার, টাকা ঘরে ফেরনো অসম্ভব, তবুও পার্ট ২ বানাব', আত্মবিশ্বাসী অঙ্কুশ
মির্জা ছবিতে যে টাকা তিনি বিনিয়োগ করেছেন তা ঘরে তুলতে পারবেন না, হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট বলেছিলেন অঙ্কুশ। শনিবার রাতে ছবির প্রথম সপ্তাহের কালেকশন জানালেন প্রযোজক।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে অঙ্কুশ জানিয়েছেন, প্রথম সপ্তাহে বাংলা জুড়ে ৭৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে মির্জা। যা ছবির বাজেটের চেয়ে অনেকটাই কম, মাত্র ১৭%। তবে অঙ্কুশ জানিয়েছেন, ছবির স্যাটেলাইট রাইটস এবং ডিজিট্যাল রাইটস বিক্রি করে প্রায় ৬০% টাকা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
বিবৃতিতে পর্দার মির্জা জানান, ‘একজন নন-সুপারস্টারের মাস-ফিল্ম মির্জা। এমন একটা জঁর যাকে মানুষ প্রায় তকমা লাগিয়ে দিয়েছে আর ফিরবে না। সেই ভরসাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন কিছু থিয়েটারকে ভরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ, যেখানে এই ধরণের ছবিগুলোকে একটু নাক-ভুরু কুঁচকে দেখা হয়। প্রযোজক হিসাবে আমার স্বপ্নটা কিছুটা হলেও সফল করার জন্য ধন্যবাদ, এই লড়াই লড়ে যেতে হবে….’।
অঙ্কুশ জানাতে ভোলেননি, ‘আমার বিন্দুমাত্র বলতে সংকোচ নেই শুধুমাত্র থিয়েটার থেকে আমার পুরো লগ্নি করা টাকা উঠবে না। কারণ মির্জা অনেকটাই বড় বাজেটের ছবি, এখনকার মার্কেট অনুযায়ী কিন্তু দর্শক যে আমাকে ভরসা দিয়েছে আমি তাতে খুশি…মির্জা আমার ঘরে টাকা ফেরানোর ছবি নয়, বাংলা কর্মাশিয়াল ছবির প্রতি ভরসা ফেরানোর উদ্দেশ্যে করা ছবি। তাই প্রশ্নটা দর্শক বন্ধুদের দিকেই ছুড়ে দিলাম, তোমাদের চোখে মির্জা কী?’
জানিয়ে রাখি, মাল্টিপ্লেক্স থেকে প্রথমদিন মির্জা আয় করেছিল ২ লক্ষ টাকা (মুক্তির দিন), এরপরের এক সপ্তাহে এই ছবি মাল্টিপ্লেক্সে ৬ লাখ টাকা কালেকশন করেছে। অর্থাৎ মাল্টিপ্লেক্স মির্জার আয় ৮ লাখ টাকা।
প্রযোজক হিসাবে যে রিস্কটা অঙ্কুশ নিয়েছিলেন, সেই নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন, ‘আমার পক্ষে তো ব্যাক টু ব্যাক মির্জা বানানো সম্ভব নয়। আমি নিশ্চিতভাবে এক বছর বা দু-বছর পর মির্জা টু নিয়ে আসব। কিন্তু বাকি সবাইকে ভালো বাণিজ্যিক ছবি নিয়ে আসতে হবে। ২০১৪-১৫ সালেও ৭০০-৮০০ সিটের সিঙ্গল স্ক্রিন ভরে যেত ছবির প্রথম দিনেই। কিন্তু সেই মানসিকতাতেও জং ধরেছে, আর হলে গিয়ে ছবি দেখার অভ্যাসেও জং ধরেছে। সেখানে আমাদের লড়াইটা লড়তে হবে।’
মির্জা টু তৈরি হবে, জোর গলায় জানিয়েছেন অভিনেতা। তিনি বলেন, 'আমাদের মির্জা ছবিটাকে দর্শক গ্রহণ করেছে। সেই গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে বলেই আমি মির্জা টু বানাব। তাই বক্স অফিসটা ম্যাটার করছে না। বাংলায় বক্স অফিসের হাল এমনিতেই খারাপ। হল ভিসিটে গিয়ে আমি দেখেছি ২২ বছরের তরুণ-তরুণীও মির্জা দেখছে আবার ৬০ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীরাও এ ছবিটা দেখছে। দর্শক আমাদের গ্রহণ করেছে, সেটাই আমাদের সেরা পাওনা বক্স অফিস নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না'।