তৃণমূলের উত্তরপাড়ার বিধায়ক তথা টলিগঞ্জের পরিচিত কৌতুকাভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক গত কয়েকদিন ধরেই একদম অযাচিত কারণে রয়েছেন সংবাদ শিরোনামে। স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ৯ বছরের দাম্পত্য সম্পর্ক ফাটল ধরেছে কাঞ্চনের আজ আর সেই খবর গুঞ্জন নয়। প্রকাশ্য কাদা ছোঁড়াছুড়িতে নেমে পড়েছেন এই দম্পতি। কাঞ্চনের বিরুদ্ধে গত শনিবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন পিঙ্কি, জানান বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর উপর, এবং আট বছরের ছেলের উপর মানসিক অত্যাচার চালিয়েছেন কাঞ্চন। ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই স্ত্রীর নামে পালটা পুলিশে মামলা করেন কাঞ্চন।
পিঙ্কি-কাঞ্চন-শ্রীময়ী, এই ত্রিভুজ সম্পর্ককে ঘিরে এখন চর্চার শেষ নেই নেটমাধ্যমে। শ্রীময়ীর কথায়, কোনও বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে পরকিয়ায় জড়ানো তাঁর রুচি বিরুদ্ধে, কাঞ্চনের সঙ্গে তাঁর ‘স্নেহের সম্পর্ক’ জানান শ্রীময়ী। এবার স্ত্রীর বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন কাঞ্চন। এক সংবাদমাধ্যমকে কাঞ্চন জানান, পিঙ্কি নাকি নিজে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িত। সেই জায়গা থেকেই দুই পরিণত মানুষের পরকীয়া নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই এবং নারী হওয়ার ফায়দা লুটছেন পিঙ্কি, কারণ এই ধরণের মামলায় সমাজ মেয়েদের পাশেই দাঁড়ায়। কাঞ্চন জানান, 'যাঁর সঙ্গে আমার পরকীয়া দূরঅস্ত কাজের বাইরে কোনও সম্বন্ধই নেই! এই প্রশ্ন কেউ করেছেন ওঁকে? জানতে চেয়েছেন, পিঙ্কির প্রশাসনিক মহলে কত জন ‘বন্ধু’ রয়েছেন? কেউ জিজ্ঞেস করবেন না।
আফসোসের সুরে কাঞ্চন বলেন,'পুরুষদেরও কান্না পায়, কে বুঝবে? তার উপর সে যদি হয় ‘লোক হাসানো’ কাঞ্চন মল্লিক! লোক হাসাতে হাসাতে আজ একা ঘরে হাউহাউ করে কাঁদছি'। কাঞ্চনের কথায়, শনিবার নিজের আপ্ত সহায়ক এবং শ্রীময়ীকে সঙ্গে নিয়ে পিঙ্কির সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ায় হয়ত রেহাই পেয়েছেন তিনি, না হলে পিঙ্কি হয়ত তাঁর বিরুদ্ধে ৪৯৮ এ (বধূ নির্যাতন) মামলা দায়ের করত।
নবনির্বাচিত বিধায়কের চরিত্রে কালিমা লেপন করতেই নাকি এমন কুত্সা করা হচ্ছে, অভিযোগ কাঞ্চনের। তিনি বলেন, ‘মাথা হেঁট নিজের দলের কাছে। কী উত্তর দেব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে? ওঁরা আমায় ভরসা করে একটি কেন্দ্রের বিধায়ক পদে প্রার্থী করেছেন। দলের কাছে, নেত্রীর কাছে এ ভাবে ছোট করার মানে কী?’
স্ত্রীর বিরুদ্ধে কাঞ্চনের অভিযোগের ঝুলি এখানেই শেষ নয়। পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি প্রতি মাসে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন কাঞ্চনের কাছে, পাশাপাশি চাকরি করে দিতে হবে ছেলের আয়ার ভাইকে এমন দাবি রেখেছেন। জি বাংলার গেম শো দিদি নম্বর ১-এ মাস কয়েক আগেই একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন মিঁয়া-বিবি, সেখানে ‘ক্যামেরার সামনে কি নিখুঁত সুখী দম্পতির অভিনয় করল!’
ছেলের খোঁজ-খবর নেন না কাঞ্চন, সেই দাবিও উড়িয়ে দিয়েছেন অভিনেতা। পালটা দাবি, ছেলের পছন্দের রান্না নিজের হাতে রেঁধে সময় পেলেই শ্বশুরবাড়ি ছুটে গিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, । গত লকডাউনে ২ লক্ষ টাকা আর রেশন শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছেন, সেই প্রমাণও রয়েছে।
পিঙ্কির সকল অভিযোগকে মিথ্যা বলে, ছেলের যাবতীয় দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে চেয়েছেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক।