অভিনেত্রী হিসেবে খ্যাতির চূড়ায় থাকাকালীন একটা দীর্ঘ সময় ধরে অবসাদে ভুগেছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। ইংরেজিতে এই সমস্যাকে বলে ‘ডিপ্রেশন’। তবে আর পাঁচজনের মতো নিজের এই সমস্যাকে লুকিয়ে রাখেননি এই জনপ্রিয় বলি-অভিনেত্রী। জোর গলায় প্রকাশ্যে বলেছিলেন এই সমস্যার সঙ্গে নিজের লড়াইয়ের কথা। তাঁর মতো এই সমস্যা কুরে কুরে খাচ্ছে যাঁদের, তাঁদের উদ্দেশে অবসাদ নিয়ে নিজের নানান অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে কার্পণ্য কিংবা এক চিলতে কুন্ঠা বোধ করেননি 'মাস্তানি'।
এমনই এক সাক্ষাৎকারে এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করাকালীন দীপিকা জানিয়েছিলেন কীভাবে একবার অবসাদগ্রস্থ অবস্থায় নিজের আবেগকে সংযম করতে না পেরে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেছিলেন। এবং কেঁদেই চলেছিলেন অবিরামভাবে। তাঁর সেই কান্না দেখে একমাত্র মা উজ্জ্বল পাড়ুকোন বুঝতে পেরেছিলেন এই কান্নার পিছনে কারণ প্রেম কিংবা প্রেমিক সম্পর্কিত নয়। রয়েছে 'অন্য ব্যাপার'। তিলমাত্র সময় নষ্ঠ না করে মেয়ের পাশে বসে পড়েছিলেন তিনি। নরম স্বরে দীপিকাকে ভরসা জুগিয়ে ক্রমাগত নানান প্রশ্ন করে জানা চেষ্টা করেছিলেন দীপিকার সমস্যা।
'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'-র প্রকাশিত হওয়া এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী দীপিকার জবানিতেই জানা যায় ২০১৪ সালে তাঁকে তীব্রভাবে ঘিরে ধরে অবসাদ। জীবনের কোনও মানেই খুঁজে পাচ্ছিলেন না সেই সময়ে। নিজেকে লক্ষ্যহীন ভাবার পাশাপাশি সবক্ষেত্রেই বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগত তাঁর।বলি-নায়িকার কথায়,' এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হাত আমাকে প্রতিদিন। মানসিক কিংবা শারীরিকভাবে প্রায় কিছুই বোধ করতে পারতাম না আমি। বড্ড অসহায় লাগত। একেকসময় বুঝতেই পারতাম না চারপাশে কী ঘটছে।'
এরপর অবসাদ কাটিয়ে নিজের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও তৈরি করেন এই বলি-নায়িকা, যার মূল উদ্দেশ্য অবসাদগ্রস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়ানো। তাঁদের উদ্দেশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। অবসাদ তাঁকে যাতে আর ঘিরে না ধরে তার জন্য নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম খাবার, শরীরচর্চা এবং মজার চিন্তাভাবনার পাশাপাশি হাসিখুশি থাকার কী অবিরাম চেষ্টা তিনি করে যান সেকথাও জানিয়েছিলেন দীপিকা। বলেছিলেন,'এই ব্যাপারগুলো শুনতে ও বলতে ভালো লাগে বলে বলছি না মোটেই। এগুলো না মেনে চললে ফের হয়ত অসুস্থ হয়ে পড়ব।'
এইমুহূর্তে দীপিকার হাতে রয়েছে একগুচ্ছ ছবি। পরিচালক সকুন বাত্রার নাম ঠিক না হওয়া আসন্ন ছবির পাশাপাশি 'পাঠান','সনকি','বৈজু বাওরা','৮৩' এবং 'দ্য ইন্টার্ন' এর হিন্দি রিমেকও।