বাংলা তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রের অমূল্য সম্পদ সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক: দ্য হিরো’। এই ছবি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই দিল্লি হাইকোর্টে তরজা চলছিল। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত এই ছবির চিত্রনাট্যের স্বত্ব দাবি করে বসে প্রযোজনা সংস্থা আরডি বনশল। সেই নিয়ে আদলতে মুখোমুখি হয়, প্রযোজনা সংস্থা এবং সত্যজিৎ পুত্র সন্দীপ রায় ও প্রকাশনা সংস্থা স্থা হার্পার কলিন্স। অবশেষে জবাব মিলল! সিঙ্গল বেঞ্চের পর ডিভিশনও জানালো ছবির চিত্রনাট্যের স্বত্বাধিকার চিত্রনাট্যকার সত্যজিৎ রায়েরই, কোনওভাবেই এই অধিকার প্রযোজনা সংস্থার নয়। আরও পড়ুন-‘কাবুলিওয়ালা’ মিঠুন, আর 'মিনি'র চরিত্রে 'মিঠাই'-এর ছোট্ট ‘মিষ্টি’ অনুমেঘা!
প্রথম স্থান হাতছাড়া অনুরাগের ছোঁয়ার, জগদ্ধাত্রী না ফুলকি— বেঙ্গল টপার কে? চমক দেখাল সন্ধ্যাতারা!
বিতর্কের সূত্রপাত, ‘নায়ক’ ছবিকে নিয়ে অভিনেতা-লেখক ভাস্বর চট্টোপাধ্য়ায়ের বইকে কেন্দ্র করে। হার্পার কলিন্স সংস্থার তরফে মাস কয়েক আগেই সেটি প্রকাশ্যে এসেছে। এরপরই নড়েচড়ে বসে এই ছবির প্রযোজনা সংস্থা। তাঁরা দাবি করে, ‘নায়ক’ ছবির প্রযোজক হিসাবে চিত্রনাট্যের স্বত্বাধিকার তাদের। এবং লিখিত অনুমতি ছাড়া ‘নায়ক’ নিয়ে বই প্রকাশ করে আইনবিরুদ্ধ কাজ করেছে প্রকাশনা সংস্থা। পালটা হুঁশিয়ারি দেয় হার্পার কলিন্সও। তাঁদের তরফে স্পষ্ট বলা হয়, ‘নায়ক’ অবলম্বনে উপন্যাস প্রকাশের আগে চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের আইনি স্বত্বাধিকারী পরিবারের (সন্দীপ রায়) এবং রায় সোসাইটি-র অনুমতি নেওয়া হয়েছে। সেখানে প্রযোজনা সংস্থার অনুমতি নিষ্প্রয়োজন।
এই বিতর্কের জল গড়ায় দিল্লি হাইকোর্ট পর্যন্ত। মে মাসে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছিল এই ছবির চিত্রনাট্যকার সত্যজিৎ রায়। সৃজনশীল কাজে কোনও ভূমিকাই ছিল না প্রযোজনা সংস্থার। তাই এই ছবির চিত্রনাট্যের স্বত্ব পুরোটাই সত্যজিৎ রায়ের। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের তিন মাস পর একই রায় বহাল রাখল দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
বিনোদন জগতের এক তারকার জীবনের উত্থান-পতনকে ঘিরে এই ছবির চিত্রনাট্য সাজিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। এই ছবিতেই প্রথমবার সত্যজিতের নায়ক হিসাবে দেখা মিলেছিল উত্তম কুমারের। মহানায়কের বিপরীতে শর্মিলা ঠাকুর। জাতীয় পুরস্কার গ্রহণের জন্য রেলপথে কলকাতা থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন সুপারস্টার অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। সেই ২৪ ঘণ্টার যাত্রাপথে অদিতি নামে এক অল্পবয়সী সাংবাদিকের কাছে নিজের ভুলভ্রান্তি, নিরাপত্তাহীনতা ও অনুতাপ প্রকাশের মধ্যে দিয়ে তিনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন, সেটাই সত্যজিতের এই ছবির উপজীব্য বিষয়। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় এই ছবি।