সদ্যই মুক্তি পেয়েছে দেবালয় ভট্টাচার্য পরিচালিত হইচইয়ের প্রথম ছবি বাদামি হায়নার কবলে। শ্রীস্বপনকুমারের লেখা গল্প অবলম্বনে এই ছবিটি বানানো হয়েছে। আর এখানে খোদ লেখকের চরিত্রে ধরা দিয়েছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি মুক্তির পর হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিনেতা। সেখানেই তিনি জানালেন এই ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা।
ফেলুদা, ব্যোমকেশদের ভিড়ে দীপক চ্যাটার্জি অনেকটাই অচেনা। সেখানে এমন একটা ছবির প্রস্তাব যখন পেলেন তখন প্রথম প্রতিক্রিয়া কী ছিল?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: দেবালয় (ভট্টাচার্য) আমায় এসে বলল এই ছবিটার বিষয়ে। স্ক্রিপ্ট চাইলাম। সেটা পড়ে বেশ ভালো লেগেছিল। সব থেকে বেশি ভালো লেগেছিল দেবালয়ের ভাবনাটা। স্বপনকুমারের লেখা প্রায় বিস্মৃতির পথে, সেটা যে ওকে ভাবিয়েছে আর এভাবে তুলে আনার কথা ভেবেছে সেটাই আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে। তাছাড়া...
বলুন।
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: দেবালয় আমায় বলেছিল এই চরিত্রটা নাকি আমায় করতেই হবে। নইলে ও করবেই না এই ছবি। তার প্রধান কারণ আমায় স্বপনকুমারের মতো দেখতে। খালি দাড়ি আর গালের আঁচিল লাগাতে হতো। তো ও যখন এতবার বলল, ওকে এত ভালোবাসি যে ফেরাতে পারিনি। এছাড়া আবির আছে, ও-ও আমার অত্যন্ত কাছের, আদরের। আমার বন্ধুর ছেলে, তাই পরিচিত মুখও ছিল তাই ভাবলাম অসুবিধা হবে না। সবটা মিলিয়েই রাজি হয়ে গেলাম।
আপনার আগে থেকে পড়া ছিল স্বপনকুমারের লেখা?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: ও বাবা, পড়া থাকবে না আবার? এই বই তো আবার বুকশেলফে থাকত না, লাইব্রেরিতে থাকত না। চটি বই, হাতে হাতে ঘুরত। খুব পড়েছি।
আরও পড়ুন: প্রেমিক রুবেলকে 'বেটা' বলে ডাকতেন শ্বেতা! বললেন, 'ওকে ভালো লাগলেও, প্রথমেই আমাদের....'
আরও পড়ুন: যকের ধনের নতুন গল্প নিয়ে আসছেন পরম-কোয়েল-গৌরব, এবার অভিযানে কোথায় গেল বিমলরা?
বাংলা ছবির যেখানে এখন একপ্রকার টালমাটাল অবস্থা, সেখানে এমন একটা ছবি নিয়ে কোনও রিস্কের কথা মাথায় আসেনি?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: একদমই না। আসলে দেবালয়ের ভাবনা আর মেকিংটা এত ভালো হয়েছে যে দর্শকদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে। গান, মিউজিক, মেকিং সবটা মিলিয়ে যেন একটা ওয়ার্ল্ড সিনেমার মতো হয়ে গিয়েছে। একটা ওজনদার ছবি বানিয়ে ফেলেছে ছেলেটা, তাই তো কদিনেই এত প্রশংসা পাচ্ছে। ছবিতে একটা স্পিড আছে, তাই না?
চরিত্র নিজেই লেখকের বিরোধিতা করছে, এই বিষয়টা আপনার কাছে কেমন লেগেছে?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: এটা চরিত্রের বিদ্রোহ। লেখক আর চরিত্রের কলহ, কিন্তু ঠিক যেন সেটা নয়। যেন সন্তান বাবার কাছে অভিযোগ করছে, অভিমান মেশানো গলায় নিজের অপছন্দের কথা জানাচ্ছে।
ছবির শেষে দেখা যায় দীপক স্বপনকুমারকে বলছে 'এত খাজা সংলাপ আমি বলব না।' আপনি কখনও এমনটা বলেছেন?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: বলিনি আবার! বহুবার বলেছি। সেটে গিয়ে বলেছি এই সংলাপ বলব না তখন পরিচালক বলেছেন পরাণদা তোমার মতো তুমি বদলে নাও।
বাংলায় এখন পরপর গোয়েন্দা গল্প, থ্রিলার এসেই যাচ্ছে। সেই বিষয় নিয়ে আপনার কী মত?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: এটা দর্শকরা ভালো বলতে পারবেন। তবে কোনও কিছু অতিরিক্ত হওয়াটা মোটেই ভালো নয়, সে যতই ভালো জিনিস হোক না কেন।
দেবের সঙ্গে পর পর দুটো ছবিতে কাজ করে ফেললেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: দুর্দান্ত। ওদের হাউজটা এত ভালো যে কী বলব। সবসময় সবাই ঠিক আছে কিনা, কী লাগবে, কোনও সমস্যা হচ্ছে কিনা খেয়াল রেখেছে।
আরও পড়ুন: দিদি নম্বর ওয়ানে আরেফিনকে প্রপোজ দীপান্বিতার! তুঁতের প্রেমকাহিনি কি তবে বাস্তবেও গড়াল?
এত দীর্ঘ সময় ক্যামেরার সামনে কাটল। কখনও ক্যামেরার পিছনে থেকে কাজ করার ইচ্ছে আছে?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: পাগল! আমি ওখানে গেলে এপারে থাকবে কে? (হাসি)
আগামীতে কোন কোন ছবি আসছে?
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়: অনেকগুলো ছবিই আছে। এর মধ্যে দাদুর কীর্তি, তিলোত্তমা, রাজা সাহেবের ভূত, ইত্যাদি হয়ে গিয়েছে।