নব্বইয়ের দশকের ছবিতে নায়িকাদের ত্রাস ছিলেন নানুদা ওরফে সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্দায় নায়িকাদের দেখলেই তিনি বলতেন, ‘মালটাকে গাড়িতে তোল’। গুরুদক্ষিণী ছবির ভিলেনের পাশে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ১৭ বছরের তরুণী। যৌবনে দোরগোড়ায় দাঁড়ানো এই সুন্দরীর পরনে পোলকা ডটের কালো রঙা টপ আর স্কার্ট, ছিপছিপে গরন, কাঁধ পর্যন্ত লম্বা খোলা চুলে পোলকা ডটের হেয়ার ব্যান্ড। সবচেয়ে নজরকাড়া মুখের হাসিটা অনাবিল। ৩১ বছর পুরোনো এই ছবি দেখে চিনতে পারছেন এই কন্যেকে?
বাংলা গানের দুনিয়ার অতি পরিচিত নাম তাঁর। গানের পাশাপাশি কেরিয়ারের গোড়ার দিকে অভিনয়ও করেছেন। তাপস পালের নায়িকা হিসাবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁকে বলা হয় বাংলার ‘জিঙ্গল কুইন’। এবার বুঝতে পেরেছেন নিশ্চয়? সপ্তদশী এই কন্যে আর কেউ নন, জোজো মুখোপাধ্যায়ের (Jojo Mukherjee)। যিনি গানের দুনিয়ায় মিস জোজো নামে খ্যাত। জোজোর বাবা জনপ্রিয় অভিনেতা তথা সঙ্গীত শিল্পী মৃণাল মুখোপাধ্যায়। মা নামী গায়িকা শিবানী মুখোপাধ্যায়। সঙ্গীতের জগতেই বেড়ে ওঠা তাঁর। এক কথায় তিনি ছিলেন টলিউড ইনসাইডার।
মাত্র ৬ বছর বয়স থেকে মঞ্চে গান গাইছেন জোজো। কিশোরী জোজো ছিলেন মাচা-শো-এর জান। সময় বদলেছে, তবে বদলায়নি জোজোর জনপ্রিয়তা। পঞ্চশ ছুঁইছুঁই জোজো আজও সমানতালে স্টেজ শো কাঁপান। দিন কয়েক আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের এই থ্রো-ব্যক ছবি শেয়ার করেন গায়িকা। এই ছবির স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে জোজো জানিয়েছেন, ‘সেইসময় মাল্টি স্টারার শো হতো, সারা রাত ধরে চলতো প্রোগাম… আমার তখন ১৭ বছর বয়স। বাংলার স্টার ভিলেন নানুদার সঙ্গে তোলা ছবি। আমি সত্যি কৃতজ্ঞ ঈশ্বর আমাকে এই সুযোগটা দিয়েছেন, জীবনে এত সুন্দর কিছু মুহূর্ত উপভোগ করার, এত বড় সব মানুষদের সান্নিধ্য পাওয়া কী কম কথা…’।
বাংলা আধুনিক গানের পরিচিত মুখ জোজো। স্টেজে জোজোর এনার্জির কোনও ম্যাচ নেই। বিজ্ঞাপনী জিঙ্গলের ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। রিয়ালিটি শো-এর বিচারক হিসাবেও দেখা মেলে তাঁর। সদ্যই নতুন ফ্ল্যাট কিনেছেন জোজো। স্বামী কিংশুক মুখোপাধ্যায় (বাবলু) আর দুই সন্তানকে নিয়ে ভরপুর সংসার তাঁর। মেয়ের নাম মেহেকা মুখোপাধ্যায়, ছেলের নাম আদীপ্ত। বছর চারেক আগে তাঁকে দত্তক নেন গায়িকা। সংসার, সন্তান আর সঙ্গীত- এই তিন 'স'-তেই পরিপূর্ণ মিস জোজো।