‘রাজাকার’ সিনেমার টিজার ইতিমধ্যেই ঝড় তুলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। টিজারে দাবি করছে, তা সত্য ঘটনার উপর নির্ভর করে তৈরি হয়েছে। ইসলামের প্রচার এবং 'তুর্কিস্তান' প্রতিষ্ঠার জন্য রাজাকারদের দ্বারা হিন্দুদের উপর নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এখানে।
তবে রাজার সিনেমার টিজার নিয়ে তীব্র আপত্তি জানালেন তেলেঙ্গানার এক মন্ত্রী। কেটি রামা রাও (কেটিআর) এক্স (আগের টুইটার)-এ লিখলেন, ‘বিজেপির কিছু দেউলিয়া জোকার ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে রাজনৈতিক প্রচারের জন্য সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং মেরুকরণ উসকে দেওয়ার। তেলঙ্গানার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে আমরা সেন্সর বোর্ড এবং তেলেঙ্গানা পুলিশের কাছে বিষয়টি তুলে ধরব।’
এক্সে মন্ত্রী কেটিআর-এর প্রতিক্রিয়া আসে যখন একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী তাঁর কাছে অনুরোধ রাখে হায়দরাবাদ ও তেলেঙ্গানায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য যাতে এই ‘ভুয়ো প্রচারমূলক সিনেমা’ না-মুক্তি দেওয়া হয়।
রবিবার সন্ধ্যায় গুদুর নারায়ণ রেড্ডি প্রযোজিত 'রাজাকার' সিনেমাটির টিজার প্রকাশ্যে আসে। আর টিজার প্রকাশের অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতা এবং গোশামহলের বিজেপি বিধায়ক টি রাজা সিং সিনেমাটির বহুল প্রশংসা করেন। এভং রাজাকার সিনেমাটিকে তুলনা করেন 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' এবং 'দ্য কেরালা স্টোরি'- এর সঙ্গে।
টি রাজা সিং-এই নিয়ে টুইট ও করেন একটি। যেখানে ছত্রে ছত্রে রাজাকার-এর প্রশংসা। তিনি লিখলেন, ‘ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় #হায়দরাবাদ গণহত্যার মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে 'রাজাকার' শিরোনামে একটি চমৎকার ফিল্ম শীঘ্রই মুক্তি পেতে চলেছে। আমি দেশব্যপী জনগণকে অনুরোধ করব যাতে তাঁরা সিনেমাটি সফল করতে সাহায্য করে। এবং গোটা ঘটনা নিয়ে জনসচেতনাতা তৈরি হয়।’
তেলেঙ্গানা বিজেপির প্রাক্তন প্রধান এবং করিমনগরের সাংসদ সঞ্জয় কুমার X-এ সিনেমার টিজার শেয়ার করে নেন। লেখেন, ‘রাজাকার সিনেমার ট্রেলার দেখে আক্ষরিক অর্থেই ধাক্কা লেগেছে... বর্তমান প্রজন্মের হায়দরাবাদ মুক্তির সংগ্রাম সম্পর্কে জানা উচিত। আসুন ইতিহাসের সঙ্গে জড়িত হই। যে কিছু ছদ্ম-বুদ্ধিজীবী মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে।’
দেশের বিরোধীদের দাবি, কাশ্মীর ফাইলস, কেরালা স্টোরির পর প্রপাগান্ডা ছড়াতে এবার মুক্তি পেতে চলেছে ‘রাজাকার-দ্য সাইলেন্ট জেনোসাইড অফ হায়দরাবাদ’। আর এতেও মদত আছে বিজেপিরই। তেলেগু, হিন্দি, তামিল-সহ বেশ কয়েকটি ভাষায় এই মুক্তি পাচ্ছে তেলেঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচনের আগে। সমালোচকদের দাবি, রাজাকার সিনেমা দিয়ে নিজামদের নিয়ে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। ভোটের আগে মেরুকরণ করতে পদ্ম শিবিরের নতুন হাতিয়ার বলেই দাবি করছে বিরোধীরা।
রাজাকার কারা?
নিজামদের স্বেচ্ছাসেবী আধাসামরিক বাহিনীর নাম ছিল রাজাকার। যা তৈরি করা হয়েছিল ১৯৩৮ সালে। সিনেমায় দেখানো হয়েছে, হায়দরাবাদকে পাকিস্তানের অংশ করতে ময়দানে নেমেছিল এই রাজাকাররা। তারা নাকি বিরোধীদেরকে, বিশেষ করে হিন্দুদের হত্যাও করে। ‘রাজাকার’ ফারসি শব্দ। এর অর্থ ‘স্বেচ্ছাসেবী’।