সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত আর্থিক তছরুপের মামলা খতিয়ে দেখতে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট। ইতিমধ্যেই এই মামলায় দু'বার রিয়া চক্রবর্তীকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অভিযুক্ত অভিনেত্রী ও তাঁর ভাই এবং বাবার মোবাইল-ল্যাপটপ। সুশান্তের চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সুশান্তের পরিবারের তরফে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা গায়েবের অভিযোগ রয়েছে রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে।
এই মামলায় একটি ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কর্তাদের এবং সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার এবং রিয়ার ম্যানেজার শ্রুতি মোদিকেও জেরা করেছে ইডি। টাইমস নাও সূত্রে খবর, একটি ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির সঙ্গে রিয়ার আর্থিক লেনদেন রয়েছে তদন্তকারীদের নজরে। সুশান্ত সিং রাজপুত একটি ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিকে ৬২ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। এরপর সেই কোম্পানির তরফে রিয়ার অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হয় ২২ লক্ষ টাকা।
এর আগে সুশান্ত সিং রাজপুত তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখান্ডের ফ্ল্যাটের ইএমআই দিতেন, এমন খবর সামনে আসে। জানা যায় ইডির আধিকারিকদের নাকি জেরায় এ কথা জানিয়েছেন রিয়া। যদিও নিজের ব্যাঙ্ক ডিলেটস এবং ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশনের কাগজ সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেন অঙ্কিতা। জানিয়ে দেন তাঁর ফ্ল্যাটের ইএমআই প্রতি মাসে তাঁর নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে কাটা হয়। উল্লেখ্য মালাডের ওই একই আবাসনে ফ্ল্যাট রয়েছে সুশান্তের, যে ফ্ল্যাটের ইএমআইয়ের টাকা দিতেন সুশান্ত, যা রেজিস্ট্রার করা সুশান্তের নামেই।
সুশান্তের অ্যাকাউন্টে সরাসরি কোনও বিশাল অঙ্কের টাকা রিয়া কিংবা তাঁর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফারের প্রমাণ এখনও অধরা ইডির হাতে-জানিয়েছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন। যদিও রিয়ার আয় এবং ব্যায়ে বিস্তর গোলমাল ধরা পড়েছে ইডির নজরে। অভিনেত্রীকে তাঁর আয় এবং বিনিয়োগের বিস্তারিত তথ্য জমা দেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
গত ৩১ জুলাই সুশান্তের পরিবারের তরফে দায়ের এফআইআরের ভিত্তিতে রিয়া ও তাঁর পরিবার সহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা দায়ের করে ইডি। সুশান্ত সিং রাজপুত প্রতিষ্ঠিত দুটি সংস্থার (ফ্রন্ট ইন্ডিয়া ফর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশন এবং ভিডিডরেজ রিয়ালিটেক্স প্রাইভেট লিমিটেড) ডিরেক্টারের পদেও রয়েছেন রিয়া ও তাঁর ভাই শৌভিক চক্রবর্তী, এবং বাবা ইন্দ্রজিত্ চক্রবর্তী। সুশান্তের আরও দুটি কোম্পানিও রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। সেই চারটি কোম্পানি সম্পর্কেও তথ্য জানতে চায় ইডি।সুশান্তের সঙ্গে পরিচয়ের পর কীভাবে গোটা চক্রবর্তী পরিবারের আয় এবং ব্যায় একলাফে বেড়ে গিয়েছিল, সেটাও রয়েছে ইডির নজরে।