গাড়ি দুর্ঘটনায় মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের মৃত্যুর মামলার তিন বছরেরও বেশি সময় পর অবশেষে চার্জ গঠন হল বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। আজ, মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে বিক্রমের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারায় নতুন করে চার্জ গঠন করা হয়। অর্থাত্ অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় অভিযুক্ত বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও বেপরোয়া গাড়ি চালানো সহ আইপিসির একাধিক ধারা আরোপ করা হয়েছে বিক্রমের বিরুদ্ধে। পুজোর পর এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এদিনও আদালতে দাঁড়িয়ে নিজেকে নির্দোষ বলেই দাবি করেন বিক্রম।
মামলার চার্জ গঠনের শুনানি শেষ হয়েছিল আগেই, তবে লকডাউনের জেরে আলিপুর আদালত বন্ধ থাকায় সেই সংক্রান্ত রায় দান সম্ভবপর হয়নি। আলিপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পুষ্পল শতপথীর এজলাসে শুনানি হয়েছিল এই মামলার। অবশেষে আজ রায় দান করলেন বিচারক। আপতত জামিনে রয়েছেন বিক্রম।
আজ থেকে তিন বছরেরও বেশি সময় আগে, ২০১৭-র ২৯ এপ্রিল ভোরে গাড়িতে ফিরছিলেন বিক্রম এবং সোনিকা। গাড়ির স্ট্রিয়ারিং ছিল বিক্রমের হাতে, পাশের আসনে ছিলেন বান্ধবী সোনিকা। প্রায় ১০০ কিলোমিটার বেগে থাকা ওই এসইউভি লেক মলের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার মাঝের ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। তাতেই মৃত্যু হয় সোনিকার,গুরুতর আহত হন বিক্রম চট্টোপাধ্যায়।
বিক্রমের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রথমে ৩০৪ (এ) ধারায় গাফিলতির জেরে মৃত্যু, বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানো এবং সম্পত্তি নষ্টের মতো ধারায় মামলা রুজু করেছিল। যা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা উঠে, কারণ প্রত্যেকটি জামিনযোগ্য ধারা।
এই মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দল বিক্রমের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে চার্জশিট দাখিল করেছিল আলিপুর আদালতে। নিম্ন আদালত এই মামলা থেকে বিক্রমকে অব্যাহতি না দেওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিনেতার আইনজীবীরা তবে ২০১৯-এর মাঝামাঝি কলকাতা হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। নিম্ন আদালতকে দ্রুত কোন ধারায় শুনানি হবে তা ঠিক করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিক্রমের আইনজীবীরা গাফিলতির জেরে মৃত্যুর ধারা (৩০৪এ) মতো লঘু ধারায় চার্জ গঠনের আবেদন জানালেও আদালত তাঁদের সঙ্গে সহমত হল না।
অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে কমপক্ষে ১০ বছরের হাজতবাস করতে হবে বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে।