অরুণাভ রাহারায়
সোমবার অ্যাকাডেমিতে দর্শকরা দেখতে পেল পিপলস্ লিটল থিয়েটার আয়োজিত উৎপল দত্ত রচিত নাটক 'জনতার আফিম'। কতদিন আগে লিখেছিলেন উৎপল দত্ত, কিন্তু আজকের ভারতেও বড় বেশি প্রাসঙ্গিক নাটকটি! সম্পাদনা ও পুনঃনির্মাণ করেছেন বিশ্বজিৎ সরকার।
কেন আজকের ভারতে নাটকটি প্রাসঙ্গিক? উৎপল দত্তর কথায়, 'আমি চাই না হিন্দু রাষ্ট্র, আমি চাই না এমন দেশ যেখানে কোনো একটা ধর্ম সব ধর্মকে মাটিতে ফেলে দলবে। আমি চাই এমন দেশ যেখানে ধর্ম নয়, মানুষ হবে রাষ্ট্র ব্যবস্থার মাপকাঠি, যেখানে সবাই সুখে নিজের নিজের ধর্ম কর্ম করতে পারবে।' কিন্তু তা যেন হবার নয়। তাই নাট্যকার বলেছেন, 'ধর্ম যদি কাউকে বলে ওই লোকটিকে হত্যা করো তবে সেটা আর ধর্ম থাকে না। সেটা হয় আফিম যা খেয়ে আমরা মাতাল হয়ে সত্যিই খুনোখুনি শুরু করে দিই। ধর্ম যদি এসে বলে এখানে রাম জন্মেছিলেন আর এখানে কৃষ্ণ আর সেই জন্য মসজিদ ভাঙো, আমি বলি সেটা হচ্ছে জনতার আফিম। দেশে খাদ্য নেই, চাকরি নেই, এসব যন্ত্রণা ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য এসব আফিম বিলি করে বড়লোকেরা। বড়লোকেরা এ দেশের মানুষের শান্তি ধ্বংস করতে ধর্মের আফিম বিলোচ্ছে। সে আফিম প্রত্যাখান করার জন্য দেশের মানুষের কাছে আবেদন করছি।'
এ বছর পিপলস্ লিটল থিয়েটারের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ। একাধিক শিল্পীর সম্মিলিত অভিনয়ে মঞ্চে সার্থক রূপ পায় 'জনতার আফিম'। সঙ্গীত আবহে ছিলেন, শুভ জোয়ারদার, কণ্ঠসঙ্গীত আয়োজনে কঙ্কন ভট্টাচার্য, আলোক পরিকল্পনায় ভানু বিশ্বাস, মঞ্চ পরিকল্পনায় পার্থ মজুমদার, শব্দ প্রক্ষেপণে রানা দাস, কোরিওগ্রাফিতে প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, সাজসজ্জায় শেখ ইব্রাহিম ও বিনয় চিত্রকর। নাটকের মুখ্য উপদেষ্টা বিষ্ণাপ্রিয়া দত্ত ও স্বপন ঘোষ।
নাটকটিতে অভিনয় করেছেন কমলেশ চক্রবর্তী, রাজর্ষি বাগচী, সুরজিৎ কুণ্ডু, নীলাঞ্জন ঘোষ, অভিজিৎ ব্রহ্মচারী, সুজয় সিনহা, সুব্রত দেব, সুব্রত সমাজদার, মৃদুলকান্তি চক্রবর্তী, মনতোষ মুখার্জি, উজল মৈত্র, বিশ্বজিৎ সরকার, মানস দাস, সায়ক মাইতি, সুরেশ সরকার, শঙ্খশুভ্র মুখার্জি, সৌর সেন, আহ্বানা পল, সৌনক চক্রবর্তী, দুর্জয় নন্দী।