সরস্বতী পুজো মানেই আলাদা আনন্দ। ছোটবেলার নস্টালজিয়া জড়িয়ে থাকে বাগদেবীর আরাধনায়। তবে জানেন কি, কেমন হত মহানায়ক উত্তমকুমারের পুজো। ঠাকুরের ভোগে কী খেতেই বা পছন্দ করতেন তিনি?
বাঙালির আজও খুব প্রিয় অভিনেতা উত্তম কুমার। বাঙালির ম্যাটিনি আইডল ছিলেন তিনি। তাঁর ভুবন ভোলানো হাসি, সাবলীল অভিনয়, সুুপুরুষ চেহারা মন কাড়ত লাখ লাখ মানুষের। এখনও উত্তম কুমারকে নিয়ে যেন প্রশ্নের শেষ নেই মানুষের মনে। শত তারকাদের ভিড়ে তিনি আজও বাঙালির ধ্রুবতারা।
আরও পড়ুন: বয়স হল ১০ দিন! ছেলের প্রথম ছবি দিলেন মোহর, খুদে কোলে উঠেছে বাবা দুর্নিবারের
অভিনেতারা যে দেবী সরস্বতীর আশীর্বাদ ধন্য, সে কথা বিশ্বাস করতেন উত্তমকুমার। আর মনে সেই বিশ্বাস নিয়েই সূচনা করেছিলেন পুজোর। ১৯৬৮ সালে তৈরি করেছিলেন ‘শিল্পী সাংসদ’। আর ১৯৬৯ সাল থেকে সেখানে সরস্বতী পুজো করা শুরু করেছিলেন মহানায়ক। ৮৬ লেনিন সরণী-তে এদিনটায় হাজির হতেন টলিউডের তখনকার তাবড় তাবড় শিল্পীরা। আসতেন তরুণ কুমার, অনিল চট্টোপাধ্যায়, সুমিতা বিশ্বাস, বাসবী নন্দীরা। উত্তমের সঙ্গে এই পুজোর দায়িত্ব সামলাতেন সুপ্রিয়া দেবী।
আরও পড়ুন: ডেবিউ সিনেমা স্টারডমের সেটে আরিয়ান, পরিচালক হয়েই চেহারায় এল বদল
নিয়ম মেনে প্রতি বছর উত্তম কুমার হাজির থাকতেন পুজোতে। একটু বেলা করে অিনেতার গাড়ি এসে থামত ‘শিল্পী সংসদ’-এর বাইরে। সাদা ধুতি এবং পাঞ্জাবিতে আসতেন এই সুপুরুষ, বাঙালির হার্টথ্রব। সকলের সঙ্গে বসে দিতেন অঞ্জলি। চলত জমিয়ে আড্ডা। আর তারপর দুপুরে থাকত পঙ্ক্তি ভোজে। প্রায় ২০০ জনের পাত পড়ত সেইসময় সেখানে। খাবারের মেনুও মহানায়ক নিজেই ঠিক করেছিলেন।
আরও পড়ুন: ফোটো তুললেই ‘খিটখিট’, ১৫৭৮ কোটির সম্পত্তি জয়া-অমিতাভের! হিসেব দিলেন অভিষেকের মা
থাকত দশ রকম সব্জি দিয়ে খিচুড়ি, বেগুনি, ফুল বড়ি ভাজা এবং সঙ্গে প্রয়াত অভিনেতার প্রিয় শীষপালংয়ের চচ্চড়ি। দুপুরের খাওয়াদাওয়া শেষ করেই বসত গানবাজনার আসর। বিকেলে হত মা সরস্বতীর আরতি। রাতের খাবারও হত জবরদস্ত। খাওয়া হত কড়াইশুঁটির কচুরি, আলুর দম, ভেজিটেবল চপ এবং মিষ্টি।
শোনা যায়, নিজের হাতে শুরু করা এই পুজোতে নাকি একবার আসতে পারেননি উত্তম নিজেই। আসলে অভিতেরা আসার খবর পেয়ে ‘শিল্পী সাংসদ’-এর সামনে সেদিন ভিড় জমিয়েছেন ভক্তরা। বাড়ি থেকে গাড়ি করে বেরিয়েও পড়েছিলেন। কিন্তু মাঝরাস্তা থেকে ফিরে যেতে হল ময়রা স্ট্রিটে। মহানায়কের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই সেদিন নেওয়া হয়েছিল সেই সিদ্ধান্ত।