সব লড়াই শেষ। মৃত্যুর সঙ্গে গত কয়েকদিন ধরেই পাঞ্জা লড়ছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা বিক্রম গোখলে। শেষরক্ষা হল না। শনিবার পুনের দীনানাথ মঙ্গেশকর হাসপাতালে প্রয়াত হন ৭৭ বছর বয়সী অভিনেতা। তাঁর মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থা এএনআই।
গত ১৮ দিন ধরেই পুণের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বিক্রম গোখলে। গত বুধবার সন্ধেবেলা আচমকাই তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি বিগড়ে যায়। কোমায় চলে যান অভিনেতা। তাঁকে রাখা হয়েছিল ভেন্টিলেটর সাপোর্টে। এর মাঝেই তাঁর মৃত্যুর ভুয়ো খবর রটে যায় বুধবার মধ্যরাতে। পরে তাঁর স্ত্রী জানান, এখনও লড়াই চালাচ্ছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। এরপর গতকাল (শুক্রবার) তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির সামান্য উন্নতিও হয়েছিল। কিন্তু শনিবার সব লড়াইয়ে ইতি টেনে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ খ্যাত অভিনেতা।
বিক্রম গোখলে একধিকে ছিলেন অভিনেতা, অন্যদিকে ছিলেন পরিচালক। রঙ্গমঞ্চের সঙ্গে ছিল তাঁর নিবিড় যোগ। পুণেতে একটি অ্যাক্টি অ্যাকাডেমি রয়েছে তাঁর। ভবিষ্যত প্রজন্মকে অভিনয়ের তালিম দিয়েছেন বছরের পর বছর।
১৯৪০ সালের ১৪ নভেম্বর জন্ম বিক্রম গোখলের। ছোট থেকেই অভিনয়ের জগতেই বড় হয়েছেন তিনি। তাঁর বাবা চন্দ্রকান্ত গোখলে মারাঠি থিয়েটার এবং সিনেমার উল্লেখযোগ্য নাম ছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রয়াত অভিনেতার প্রপ্রিতামহী দুর্গাবাই কামাথ ছিলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রথম অভিনেত্রী। এক কথায় অভিনয় তাঁর রক্তে। পূর্বপুরুষদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে ১৯৭১ সালে চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় তাঁর পদার্পণ। প্রথম ছবি ছিল 'পরওয়ানা'। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
হিন্দির পাশাপাশি মরাঠি চলচ্চিত্রেরও উল্লেখযোগ্য নাম বিক্রম গোখলে। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে নিজ অভিনয় দক্ষতায় দর্শক মনে ছাপ ফেলেছেন তিনি। অমিতাভ বচ্চনের ‘অগ্নিপথ’ থেকে সলমন-ঐশ্বর্যর ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ নিজ অভিনয় গুণে রুপোলি পর্দায় উজ্জ্বল বিক্রম গোখলে। হালফিলে ‘মিশন মঙ্গল’, ‘হিচকি’, ‘আইয়ারি’, ‘ব্যাং ব্যাং’-এর মতো ছবিতে দর্শক দেখেছে তাঁকে।
দীর্ঘ ৫০ বছরের অভিনয় কেরিয়ারে ছোটপর্দাতেও কাজ করেছেন প্রয়াত অভিনেতা। সঞ্জীবনী, বিরুদ্ধ, জীবন সাথী, সিংহাসনের মতো ধারাবাহিকে কাজ করেছেন বিক্রম গোখলে। মরাঠি ছবি ‘অনুমতি’র জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন অভিনেতা। শেষবার তাঁকে পর্দায় দেখা গিয়েছে মরাঠি ছবি ‘গোদাবরী’তে। অন্যদিকে শিল্পা শেট্টি-অভিমন্যু দাসানির ‘নিকম্মা’ বিক্রম গোখলে অভিনীত শেষ হিন্দি ছবি।