করোনা সংকটে থমকে গিয়েছে গোটা বিশ্বের মানুষের জীবনযাত্রা। বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী আশা ভোঁসলে শনিবার ফিভার নেটওয়ার্ককে দেওয়া সাক্ষাত্কারে জানালেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও এমন পরিস্থিতি তিনি দেখেননি।
একটানা চল্লিশদিন ঘরবন্দি ভারতবাসী। এইসময়ে দেশবাসীকে সুস্থ বিনোদন পৌঁছে দিতে এবং করোনা রিলিফে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ফিভার নেটওয়ার্ক এবং হিন্দুস্তান টাইমসের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে #100Hours100Stars-র যাত্রা।
এই অনুষ্ঠানেই লকডাউনেই তাঁর সাত দশক দীর্ঘ সঙ্গীত জীবন,কেরিয়ারের নানা চ্যালেঞ্জ এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অকপট আড্ডা দিলেন আশা তাই।
তিনি বলেন, 'আমার নাতি-নাতনিরা এবং ছেলে বিদেশ থেকে ফিরেছে ৪ মার্চ। গোটা পরিবার একসঙ্গে সময় কাটাবো বলে আমরা মুম্বই থেকে একটু দূরে আমার বাংলোতে এসেছিলাম,তখনই লকডাউন ঘোষণা হল।তারপর থেকে এখানেই ঘরবন্দি। বাইরে বার হওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই'।
তিনি আরও যোগ করেন, এখানে ৮দিন মতো থাকবার প্ল্যানিং করে এসেছিলাম। তাই খুববেশি জিনিসপত্র সঙ্গে আনা হয়নি। তবে লকডাউনের সুবাদে একটা সুদীর্ঘ সময় গোটা পরিবার একসঙ্গে কাটাচ্ছি,যেটা সচরাচর হয় না।
কীভাবে সময় কাটছে আশা ভোঁসলের? তিনি জানান, ‘আমি সকাল ৭টায় ঘুম থেকে উঠি,নিজেই চা বানাই তারপর নিয়ম মেনে আমার রেওয়াজ শুরু করি।যতক্ষণ না ক্লান্ত হয়ে যাই,ততক্ষণ রেওয়াজ জারি থাকে। তারপর রান্নাঘরে যাই,বাড়ির কাজ থাকে অনেক-এইভাবেই কাটছে’।
৮৭ বছর বয়সী এই লেজেন্ডের কথায়,' আমি ১৯৩৩ সালে জন্মেছি, আমি প্লেগ, কলেরা, ইনফ্লুয়েঞ্জা, টাইফয়েডের মতো অনেক মহামারী দেখেছি। আমি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী থেকেছি! কোয়েনা বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় মুম্বই,পুণেকে তার মাশুল গুণতে দেখেছি।… একটানা ১৫দিন মুম্বইতে কোনও বিদ্যুত্,জলের পরিষেবা ছিল না’।
১৯৭১-এর ভারত-পাক যুদ্ধর কথা বলতে গিয়ে আশা ভোঁসলে জানান, ‘সেই সময় বাড়ির জানলায় কালো কাগজ দিতে হত,কিন্তু জ্ঞানত এমন পরিস্থিতি দেখিনি যেখানে গোটা বিশ্ব লকডাউনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।ভগবান হয়ত পরীক্ষা নিচ্ছেন। তবে আমরা এই লড়াইয়ে জিতব’।
এই লাইভ আড্ডায় আশা ভোঁসলের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন তাঁর নাতনি জাইনি আশা ভোঁসলেও। ২রা মে থেকে শুরু হয়েছে #100Hours100Stars-র যাত্রা। যা এই দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিট্যাল ফেস্ট। এই উদ্যোগের মাধ্যমে এই কঠিন সময়ে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কুর্নিশ জানানোর পাশাপাশি এই ক্যাম্পেনের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ দান করা হবে পিএম কেয়ার্স ফান্ডে।