চারিদিকে অন্ধকার। কেরিয়ার রসাতলে, সেই সময় ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে একমাত্র পরিবারকেই পাশে পেয়েছিলেন বিবেক ওয়েবয়। বলিউডের অন্দরের লোক তিনি, বাবা প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা। কেরিয়ারের শুরুতেই নজর কেড়েছিলেন। কোম্পানি ছবিতে বিবেক ওয়েরয়ের অভিনয় মুগ্ধ করেছিল সিনেবোদ্ধাদের। কিন্তু তারপর আমচাকই ফ্লপ স্টার হয়ে যান বিবেক। জীবনের সেই অন্ধকারময় পর্যায় নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন বিবেক।
হিউম্যানস অফ বোম্বেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডিপ্রেশন ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে মন খুলে কথা বলেন সুরেশ ওবেরয় পুত্র। কথা প্রসঙ্গে উঠে আসে সুশান্ত সিং রাজপুতের অকাল মৃত্যুর প্রসঙ্গও। সুশান্তের শেষযাত্রায় হাতে গোনা যে ক'জন বলিউড তারকা সামিল হয়েছিলেন, তার অন্যতম ছিলেন বিবেক।
অভিনেতা বলেন, সুশান্তকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন তিনি। সুশান্তের ট্যালেন্ট বাকিদের মতো তাঁকেও বিভোর করেছিল। বিবেক বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট ক্ষতি যে ওকে এইভাবে আমরা হারিয়ে ফেললাম। যদি আমি সৎভাবে বলি, জীবনে একটা অন্ধকারময় পর্যায় থাকে, বিশেষত যখন পেশাদার এবং ব্যক্তিগত জীবন দুটোই ভুলপথে যেতে থাকে। আমি সেখানে ছিলাম, খাতের একদম কিনারায়। সুশান্ত যা করেছে আমিও সেই কথা বহুবার ভেবেছি’। বিবেক ইঙ্গিত দেন, সুশান্তের মতোই আত্মহত্যার কথা ভেবেছিলেন তিনি। যদিও অভিনেতার অস্বাভাবিক মৃত্যুর চার বছর পরেও সিবিআই জানায়নি, সেটি আত্মহত্যাই ছিল কিনা।
সুশান্তের শেষকৃত্যের যন্ত্রণাদায়ক দিনে ফিরে যান বিবেক। বলেন, কোভিডের সময় শ্মশানে মাত্র জনা ২০ লোক উপস্থিত ছিলেন। বিবেক গড়গড়িয়ে বলে চলেন, ‘আমি ওর নিথর দেহটা দেখলাম, তারপর ওর বাবার দিকে চোখ গেল,উনি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। ভাবছিলাম, যদি ও এই দৃশ্যগুলো দেখতো তাহলে হয়ত নিজের ভালোবাসার মানুষদের কথা ভেবে এমন পদক্ষেপ নিত না’।
বিবেক আরও যোগ করেন, নিজের জীবন শেষ করে দিলে সেই মানুষগুলোর কী হবে যারা আমাকে সত্যিকারের ভালোবাসে। তাঁদের কী করে যন্ত্রণা দেব? সেই আঘাত তাঁরা সহ্য করবে কী করে? তাই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোর পথে হাঁটতে হবে, যাঁরা তোমাকে ভালোবাসে শুধু তাদের জন্য। সময় আসবে যখন তুমি কাঁদবে, যন্ত্রণাটা লাঘব হবে। আমি সৌভাগ্যবান আমার একটা বাড়ি ছিল, পরিবার ছি, যাঁরা সেই মুহূর্তগুলোতে আমাকে আগলে রেখেছিল'।
বিবেক বলেন, ‘মায়ের কোলে মাথা রেখে আমি একটানা ৪০ মিনিট ধরে কেঁদেছিলাম, আমার সঙ্গে কেন এগুলো হচ্ছে?’ মা জানিয়েছিল, ‘যখন তুমি ওত্তো অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছিলেন, ভালোবাসা পাচ্ছিলে কোনওদিন তো এসে জিগ্গেস করোনি কেন পাচ্ছো?’
সলমন খানের প্রাক্তন ঐশ্বর্যর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরে ভাইজানের চক্ষুশূল হন বিবেক, এর জেরেই নাকি অনেক ছবি হাতছাড়া হয়েছিল তার, এমন কানাঘুষো শোনা যায়। বিবেক জানান, যখন তিনি ডিপ্রেশনে ছিলেন সুপারস্টারদের মধ্যে একমাত্র অক্ষয় কুমার সাহায্যের হাত বাড়ান। এমনকি তাঁর মনের অবস্থা জানতে পেরে বিবেকের বাড়িও ছুটে এসেছিলেন অক্ষয়।
বিবেককে শেষ পর্দায় দেখা গিয়েছে ইন্ডিয়ান পুলিশ ফোর্সে। রোহিত শেট্টির কপ ইউনিভার্সের নতুন এডিশন এটি।