আমির খানের ছবি মানেই বক্স অফিসে হেলায় দুশো কোটি ছাড়িয়ে হাসতে হাসতে তিনশো কোটির ক্লাবের চৌকাঠ টপকে যাওয়া। চারশো কোটির ক্লাবেও যে তারকার ছবি বহাল তবিয়তে বিরাজ করছে 'পিকে' তার হাটগ্রাম প্রমাণ।বলিউডের গলিতে কান পাতলে এখনও শোনা যায় ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া আমির অভিনীত 'দঙ্গল' বক্স অফিস থেকে তুলেছে ৫০০ কোটি টাকা। দক্ষ অভিনয়,ঠাসবুনোট গল্প ও জমাটি চিত্রনাট্য ছাড়াও সিনেমার অভিনব বিজ্ঞাপনী প্রচার অন্যতম স্তম্ভ আমিরের ছবি সুপারহিট হওয়ার। নিজের প্রতিটি ছবিতে তাঁর অভিনীত চরিত্রের অভিনবত্বের সঙ্গে দর্শকদের মুগ্ধ করে এসেছে ছবির প্রচারের দুর্দান্ত সব কৌশল। এই 'আমিরী চাল' যে প্রায় প্রতিবারই সফল তা সর্বজনবিদিত। যদিও দর্শকদের পাশাপাশি ফিল্ম ট্রেড অ্যানালিস্টদের একাংশের ধারণা কোনওরকম প্রচার না করা হলেও ছবির জন্য আমির খান নামটুকুই যথেষ্ট। স্রেফ আমির খান রয়েছেন এই ছবিতে এই তথ্যটুকু জানলেই দর্শক ভিড় জমাবেন প্রেক্ষাগৃহে। হয়েওছে তাই। ২০১৩ সালে মুক্তি পাওয়া 'ধুম থ্রি' ছবির জন্য কোনোরকমের প্রচার সরেননি আমির। বলাই বাহুল্য সে ছবিও মাতিয়েছিল বক্স অফিস। তবে জানেন কি এই আমির খানকেও নিজের অভিনীত ছবির প্রচার সারতে সেই সিনেমার পোস্টার নিজের হাতে সাঁটাতে হয়েছিল মুম্বইয়ের রাস্তায়।বাদ যায়নি পথচলতি অটো-ট্যাক্সিও।
সেটা ১৯৮৮ সল্। জুহি চাওলার সঙ্গে জুটি বেঁধে তৈরি হওয়া আমিরের ছবি 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক' মুক্তির অপেক্ষায়। সেই ছবির প্রচারের জন্য আমির মুম্বইয়ের পথে ঘাটে নিজের হাতে বিলিয়েছেন ছবির পোস্টার। পথচলতি অটো থামিয়ে অটো চালকদের অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁর অটোতে 'কেয়ামত সে কেয়ামত তক' এর পোস্টার লাগানো যাবে কি না। কেউ রাজি হয়েছেন তো কেউ দূর দূর করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন আমিরকে। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। নিরাশ না হয়ে ছুটে গিয়েছেন এই অটো থেকে সেই অটোতে। অভিনেতার সঙ্গে ছিলেন তাঁর সহ-অভিনেতা রাজ জুত্সি এবং তাঁর বোন নুজরৎ।এ ঘটনা প্রসঙ্গে পরে এক সাক্ষাৎকারে হাসতে হাসতে আমির জানিয়েছিলেন তিনি নিজেই অটো চালকদের বলতেন এটি তাঁরই ছবি। তিনিই নায়ক। ছবির খবর যাতে বেশি মানুষের কানে পৌঁছয় তার জন্যই আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। গোটা ঘটনার ভিডিও তুলে রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি,সেই ভিডিও নেটমাধ্যমে আসতেই হতবাক হয়েছেন নেটিজেনরা। কেউ কেউ সেই সময়ে তরুণ আমিরের ওই ধরণের 'মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি'-র প্রশংসায় হয়েছেন পঞ্চমুখ।