শুধু বাংলা নয়, সারা বিশ্বই এখন ফুটবল বিশ্বকাপের জ্বরে কাবু। তবে বাঙালি জীবনের সঙ্গে একাকার হয়ে আছে ফুটবল। পাড়ায় পাড়ায় টিভি বসিয়ে ফুটবল দেখার পাশাপাশি বাজি ফাটানো, আরও অনেকরকম উন্মাদনাই দেখা যায় এই সময়। তবে পেটুক বাঙালির মিষ্টির প্রতি দুর্বলতার কথাও সারা বিশ্ব জানে। এবার বাঙালির পছন্দের দুটি জিনিস মিলে গেল চন্দননগরের বুকে। প্রায় দুই ফুট উচ্চতার এমবাপে সন্দেশ তৈরি করেছেন চন্দননগরের এক প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী। রবিবার বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি হতে চলেছেন এমবাপে ও এলএম১০। এমন সময় কাতার থেকে হাজার মাইল দূরে হুগলির চন্দনগরে তৈরি হল এমবাপে মিষ্টি। কিন্তু হঠাৎ এমবাপের মিষ্টি-মূর্তি কেন? এর জন্য তাকাতে হবে ইতিহাসের দিকে। চন্দননগরের এক সময়ের নাম ছিল ফরাসডাঙা। ইংরেজ আমলেও দীর্ঘদিন ধরে ফরাসিদের উপনিবেশ ছিল এই শহর। তখন থেকেই ফ্রান্স ও চন্দননগরের যোগাযোগ। তাই ফ্রান্স বিশ্বকাপ জিতলে সেই দেশের অন্যতম খেলোয়াড়কেই উৎসর্গ করা হবে এই মূর্তি।
ফুটবলের প্রতি বাঙালির টান অনেক দিনের। ফুটবল বিশ্বকাপের মরশুম এলে সেই উত্তেজনা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আগামী রবিবার বিশ্বকাপের ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে আর্জেন্টিনা বনাম ফ্রান্সের। আর্জেন্টিনার সমর্থক বাংলায় অসংখ্য বললেও কম বলা হয়। তবে চন্দননগরের ছবিটা একটু আলাদা। সেই শহরে আর্জেন্টিনার পতাকার পাশাপাশি ফ্রান্সের পতাকাও ছেয়ে গিয়েছে। বিশ্বকাপের ফাইনালে এবার ফ্রান্সের জন্য এক সময়ের ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরের অনেক সমর্থক গলা ফাটাবেন । আর ফ্রান্সের তারকা ফুটবলার এমবাপেকে নিয়েও চন্দননগরবাসীর মধ্যে প্রচুর উন্মাদনা। তাই পছন্দের দলের প্রিয় ফুটবলারকেই সন্দেশের রূপ দিলেন চন্দননগরের প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন বিক্রেতা।
প্রায় ঘণ্টা ছয়েকের অক্লান্ত পরিশ্রমে তৈরি হয়েছে এই মূর্তি। অসাধারণ নিপুণ শিল্পকলার সাহায্যে সন্দেশ দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এমবাপেকে। মূর্তির সঙ্গে রয়েছে একটি ফুটবল ও গোলপোস্টও। মিষ্টান্ন বিক্রেতা ধনঞ্জয় দাসের বিশ্বাস, রবিবারের মেগা ফাইনালে সারা বিশ্ব এমবাপের পায়ের জাদু দেখবে। তার গোলেই ফাইনালে জয়ী হবে ফ্রান্স। ধনঞ্জয় এদিন জানান, তাই ফুটবল বিশ্বকাপে বরাবরই তিনি ফ্রান্সকে সমর্থন করেন। ফ্রান্স ফাইনালে ওঠায় চন্দননগরবাসী হিসাবে তিনি গর্বিত বোধ করছেন। নিজের প্রিয় দল ও প্রিয় প্লেয়ারকে সমর্থন করতেই এই ‘এমবাপে’ সন্দেশ তৈরি করেছেন তিনি। এর খবর ছড়িয়ে পড়তেই আরও দু-একটা অর্ডার এসেছে এই সন্দেশের।