আমেরিকায় থাকাকালীন ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন দুই সমকামী। দুজনেই জন্মসূত্রে হিন্দু। আমেরিকার আইন অনুযায়ী সেই বিয়ে বৈধ ছিল। ২০১০ সালে বিয়ে হয় তাদের। এরপর ভারতের অভিবাসন দপ্তরেও বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের জন্য গিয়েছিলেন যুগল। কিন্তু দীর্ঘ অপেক্ষার পর তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে ভারতীয় অভিবাসন আইন অনুযায়ী তাঁদের বিয়ে এখনও বৈধ নয়। সমকামী বিয়েকে বৈধ ঘোষণা করা হোক, এমন দাবি নিয়েই তাঁরা এবার মামলা দায়ের করলেন সুপ্রিম কোর্টে।
যুগলের দাবি, ১৯৬৯ সালের বিদেশিদের বিবাহ আইন অনুযায়ী তাঁদের বিয়েকে বৈধ ঘোষণা করা হোক। এই বিষয়ে তাঁরা আদালতে বিস্তারিত আবেদন জানান। আবেদনের বক্তব্য ছিল, বিষমকামীদের মতোই সমকামী বিয়েকেও বৈধ ঘোষণা করা হোক। কারণ পিটিশনকারী যুগল এলজিবিটিকিউ সমাজের দুই সদস্য।
যুগলের দাখিল করা পিটিশনের মতে, তাঁদের বিয়েকে বৈধ ঘোষণা না করায় ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক অধিকারের ধারাগুলোকে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সমকামী বিয়েকে অবৈধ বলা হলে ভারতীয় সংবিধানের ১৪ (সমতা), ১৯ (স্বাধীনতা) ও ২১ (জীবন ও স্বাধীনতা) নম্বর ধারাগুলিকে সরাসরি লঙ্ঘন করে।
পিটিশনকারী দুজনেই জন্মসূত্রে হিন্দু্। তবে একজন ভারতীয় ও অন্যজন আমেরিকার নাগরিক। জন্মসূত্রে হিন্দু হওয়ায় পিটিশনের হিন্দু বিবাহ আইনের কথাও উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, হিন্দু বিবাহ আইনের প্রাথমিক ধারাকেও লঙ্ঘন করছে এই অবৈধ ঘোষণা। হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী, যেকোনও ‘দুজন হিন্দু’-এর মধ্যে বিবাহ বৈধ। আবেদনের কথায়, দুজন সমকামী হিন্দু বিয়ে করতে পারবেন না, এমন কথা আইনটির কোথাও বলা নেই। তাই হিন্দু বিবাহ আইনকেও এটি লঙ্ঘন করছে।
এছাড়াও আবেদনের একটি জায়গায় বলা হয়, বিষমকামী বিয়ে না হলে বংশধারণ ও সন্তান প্রতিপালন করা যায় না, এমন ধারণাও ঠিক নয়। বরং একই লিঙ্গের মানুষের মধ্যে বিয়ে হলেও আর পাঁচজনের মতো স্বাভাবিক পরিবার গড়ে তোলা যায়। সন্তান প্রতিপালনেও সমস্যা হয় না। কিন্তু আইনি মতে বৈধ ঘোষণা না করলে সন্তান প্রতিপালনের ক্ষেত্রে পরে জটিলতা তৈরি হতে পারে। সেই জটিলতা এড়াতেই এবার সুপ্রিম কোর্টে এমন আবেদন দাখিল করলেন যুগল।