মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতায় প্রগতিশীল অথচ অপরিবর্তনীয় হ্রাস দেখতে পাওয়া যায় ৩৫ বছরের পর থেকেই। আর এটাকেই বোধহয় প্রকৃতির নিষ্ঠুরতম অসাম্য বলা যায়। যেখানে পুরুষদের মধ্যে উর্বরতা কমে অনেক দেরি করে সেখানে মহিলাদের অনেক কম বয়সেই প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়। যদিও বিজ্ঞান অনেক চেষ্টা করছে যাতে মহিলাদের এই প্রজনন ক্ষমতাকে আরও বাড়ানো যায়, কিন্তু এটা নিশ্চিত যে ৩৫ বছরের পর থেকেই তাঁদের প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে।
রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিনের ক্লিনিক্যাল ডিরেক্টর ডক্টর প্রশান্ত যোশী জানিয়েছেন পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব নিজেই একটা সফর। মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতা দারুন ভূমিকা পালন করে বায়োলজিক্যাল সন্তান ধারণে। তবে বর্তমান সময়ের লাইফস্টাইল, স্ট্রেস ইত্যাদির কারণে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়, এমন অনেক মেডিক্যাল কন্ডিশন তৈরি হয় যাতে ডিম্বস্ফোটনে ব্যাঘাত ঘটে, উটারিন বা সারভিক্যাল সমস্যা দেখা যায়, অনেকে সময় গর্ভনালী ব্লক হয়ে যায় বা আঘাতপ্রাপ্ত হয়, এছাড়া ডায়াবিটিস, ইত্যাদি তো আছেই যা গর্ভধারণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এছাড়া বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই কমতে থাকে প্রজনন ক্ষমতা। তাই একটা সুস্থ জীবন যাপন করা অত্যন্ত জরুরি, যেখানে মদ্যপান বা ধূমপান করা উচিত নয়, ব্যায়াম করা উচিত, সঠিক পরিমাণে সমস্ত খাবার খাওয়া উচিত, ইত্যাদি। বর্তমান সময়ের একাধিক সমস্যাকে বিজ্ঞান দূর করতে পারে। তাই বয়স পেরিয়ে যাওয়া মানেই আপনি আর মা হতে পারবেন না এমনটা নয়। হ্যাঁ, অবশ্যই চান্স কমে, কিন্তু শেষ হয়ে যায় না।
অন্যদিকে ব্যাঙ্গালুরুর অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক ডক্টর প্রীতি প্রভাকর জানাচ্ছেন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মহিলাদের উচিত ডিম্বাণুর কতটা তৈরি হচ্ছে সেটার ধারণা পেতে এএমএইচ মালা উচিত। একজন যুবতীর যত পরিমাণ ডিম্বাণু তৈরি হয় তার দুই তৃতীয়াংশ তৈরি হয় ৩০-৩৫ বছরে অন্যদিকে ৪৫ বছর হয়ে গেল সেটা কমে দাঁড়ায় এক চতুর্থাংশ। শুধু তাই নয়, বয়স বাড়লে কেবল ডিম্বাণুর সংখ্যাই কমে না তাতে নানান ধরনের জটিলতা এবং অস্বাভাবিকতা দেখা যায়।
তাই বিজ্ঞান যতই উন্নত হোক, যতই চেষ্টা করুক এটা একদম সত্য যে ৩৫ বছরের পর থেকে মহিলাদের প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে। সেটা চেষ্টা করে কয়েক বছর বাড়ানো যায় কিন্তু সব সময় সফল হওয়া যায় এমনটা নয়।