বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Netaji: রুটির টুকরোতে গোপন বার্তা পাঠাতেন নেতাজি? কথাটা কি সত্যি

Netaji: রুটির টুকরোতে গোপন বার্তা পাঠাতেন নেতাজি? কথাটা কি সত্যি

নেতাজি

কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ে বন্দি থাকার সময় নেতাজির পছন্দের জল খাবার কি ছিল জানেন? রুটি, পুডিং। কিন্তু কেন?

১৯৩৬ সালে নেতাজি যখন কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ে বন্দি ছিলেন তখন তিনি ইংলিশ ব্রেকফাস্ট খেতেন। রুটি আর পুডিং ছিল তাঁর পছন্দের খাবার। কিন্তু এমন খাবার বেছে নেওয়ার নেপথ্যে কি অন্য কোনও কারণ ছিল? হয়তো ছিল। কারণ তিনি কোনও দিনই সম্পূর্ণ খাবার শেষ করতেন না। রুটির কিছুটা অংশ ফেরত পাঠাতেন তাঁর পরিচারকের হাতে, যার পিছনে হয়তো কোনও বিশেষ কারণ ছিল।

নেতাজির সব থেকে বিশ্বস্ত পরিচারক, কালু সিং লেপচা জানতেন তাঁকে কী করতে হবে ওই খাবারের অবশিষ্টগুলো নিয়ে। সেই রুটির মধ্যে লেখা থাকত গোপন চিঠি, যা কলকাতার বাড়িতে পাঠাতে হতো। যেহেতু নেতাজির কোনও চিঠি লেখার অনুমতি ছিল না তাই কালু সিং লেপচা সেগুলোকে জুতোর মধ্যে লুকিয়ে কলকাতা নিয়ে যেতেন। কালু সিং গিয়ে কিছুদিন সুভাষ চন্দ্রের এলগিন রোডের বাড়িতে থাকতেন। নেতাজির পরিবারের সকলের থেকে সেই চিঠির উত্তর নিয়ে তিনি আবার ফেরত আসতেন।

যেভাবে নেতাজির থেকে চিঠি নিতেন রুটির মধ্যে, তেমন একই ভাবে রুটির মধ্যে করেই তিনি নেতাজিকে গোপন চিঠিগুলো দিতেন।

নেতাজিকে কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ের যে বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছিল সেখানে তিনি সাত মাস ছিলেন। আর এখানে থাকাকালীন তিনি গুজরাটের হরিপুরা কংগ্রেসের অধিবেশনের জন্য একটি খসড়া তৈরি করেছিলেন। সেখানেই তিনি কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন ১৯৩৮ সালে। তাই গিদ্দা পাহাড়ের এই বাড়িটার ইতিহাসে দারুন গুরুত্ব আছে। এখান থেকে তিনি মোট ২৬টি চিঠি লিখেছিলেন যার ১১টি এমিলিকে লেখা হয়েছিল। এছাড়াও তিনি বন্দে মাতরম গানটি নিয়ে যে বিতর্ক বেঁধেছিল সেই বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং জহরলাল নেহেরুর সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। ১৯২২ সালে রাউলি ল্যাসসেললেস ওয়ার্ডের থেকে নেতাজির স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি শরৎ চন্দ্র বসু কিনে নেন।

এই বাড়িটি আরও একটি কারণ গুরুত্ব, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ মারা যাওয়ার ঠিক এক সপ্তাহ আগে সস্ত্রীক এখানে নেতাজির সঙ্গে কাটিয়েছিলেন। এই বাড়িতে এখনও সমস্ত স্মৃতি খুব সুন্দর করে সংরক্ষণ করে রাখা আছে, নেতাজির টেবিল চেয়ার থেকে শুরু করে সমস্ত ছবি।

নেতাজি যখন এখানে বন্দি অবস্থায় ছিলেন তখন তাঁকে কারও সঙ্গে কথা বলতে বা দেখা করতে দেওয়া হতো না। তিনি শুধু ভোরবেলা এবং বিকেলবেলায় হাঁটতে যেতেন তাঁর তিনটি পোষ্যকে নিয়ে। সঙ্গে যেত ব্রিটিশ পুলিশ। একমাত্র দুধওয়ালা, পরিচারক, এবং রাঁধুনি ছাড়া কারও সঙ্গে তাঁর কথা বলার অনুমতি ছিল না।

বন্ধ করুন