আবার নিপা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক। মঙ্গলবার এই রাজ্যে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণের চারটি ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে দু’টি সংক্রমণে আক্রান্তরা মারা গিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে যে কোঝিকোড় জেলায় সাম্প্রতিক ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র পিছনে রয়েছে এই ভাইরাসের ভূমিকা। মস্তিষ্কে ক্ষতিকারক নিপা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণেই এই মৃত্যুগুলি হয়েছে।
পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে পরীক্ষার জন্য মৃতদের একজন এবং তাঁর চার আত্মীয়ের নমুনা পাঠানো হয়েছিল। জানা গিয়েছে যে পাঁচটি নমুনা পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে তিনটিতে নিপা ধরা পড়েছে। যাঁরা আক্রান্ত, তাঁদের মধ্যে নয় বছরের এক শিশুও রয়েছে।
‘যে ব্যক্তি ৩০ অগস্ট মারা গিয়েছেন, তিনি লিভার স্ক্লেরোসিসে ভুগছিলেন। তাঁর কিছু কমোর্বিডিটি ছিল। তাঁর মৃত্যুর কারণ কমরবিডিটি থেকে হওয়া জটিলতা বলেই মনে হয়েছিল। কিন্তু যখন তাঁর আত্মীয় এবং পরিচিতদের ক্ষেত্রেও অস্বাভাবিক জ্বর এবং অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়, তখনই আমরা নজরদারি শুরু করা হয়।’ এমনই জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
ভাইরোলজি ইনস্টিটিউটের একজন আধিকারিক বলেছেন যে, নিপা ভাইরাসে সংক্রমিত একজন এই মাসে মারা গিয়েছেন এবং অন্যজন মারা গিয়েছেন ৩০ অগস্ট। রয়টার্স সংবাদমাধ্যম সূত্রে এটি জানা গিয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে কেরলে এটি চতুর্থ বার নিপা সংক্রমণ। কেরলে ২০১৮ সালে প্রথম নিপা প্রাদুর্ভাবের কথা জানানোর সময় ২৩ জন সংক্রমিত ব্যক্তির মধ্যে ২১ জন মারা গিয়েছিলেন। ২০১৯ এবং ২০২১ সালে, নিপা আরও দু’জনের মৃ্ত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
(আরও পড়ুন: ভয়াবহ বন্যা লিবিয়ায়, হাজারের বেশি মৃত! নিখোঁজ ১০ হাজার, চলছে উদ্ধারকাজ)
সংক্রমিত বাদুড়, শূকর বা অন্যান্য মানুষের শারীরিক তরলগুলির সঙ্গে সরাসরি স্পর্শের মাধ্যমে ভাইরাসটি মানুষের মধ্যে প্রবেশ করে। ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের শুয়োরের থেকে শুয়োর চাষীদের এমন রোগ ছড়িয়েছিল বলে মনে করা হয়।
এই ভাইরাস সংক্রমণের কোনও চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন নেই।
কোঝিকোড়ে দু’টি মৃত্যুর পিছনে নিপা ভাইরাস রয়েছে বলে নিশ্চিত করে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন যে, পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে এবং সংক্রমণের ব্যবস্থাপনায় রাজ্য সরকারকে সহায়তা করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি কেন্দ্রীয় দল কেরলে পাঠানো হয়েছে।
‘আমি কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, এই মরশুমে বেশ কয়েক বার এই ভাইরাসের রিপোর্ট এসেছে। এই ভাইরাসটি বাদুড় দ্বারা ছড়ায়। এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রক একটি নির্দেশিকা তৈরি করেছে, যাতে আমরা সাবধান হতে পারি।’ বলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আগের দিন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন একটি ভিডিয়ো বার্তায় বলেছিলেন যে, রাজ্য সরকার দু’টি মৃত্যুকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। কারণ যাঁরা মৃতদের কাছাকাির মধ্যে ছিলেন, তাঁরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।