অতিমারি প্রত্যেকের জীবনই কিছুটা না কিছুটা বদলে দিয়েছে। আর্থসামাজিক অবস্থানের একেবারে নীচে যাঁরা আছেন, তাঁদের থেকে শুরু করে একেবারে উপর তলার মানুষ পর্যন্ত প্রভাবিত হয়েছেন দীর্ঘ দু’বছর করোনাকালে। আয়-ব্যয়-জীবনযাপনে যেমন বদল এসেছে, তেমনই বদল এসেছে মনজগতেও।
অতিমারির সময়ে আরও একটি বদল এসেছে। সেটি হল অনেকেই হাতে কিছুটা সময় পেয়েছেন। আর সেটিকে তাঁরা ব্যবহার করেছেন নিজেদের সৃজনশীল কাজে।
যেমন প্রিয়দর্শী মজুমদার। ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের শিক্ষক, ইলেট্রনিক বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স বিষয়টির স্নাতক স্তরের বোর্ড অব স্টাডিজের একজন সদস্য প্রিয়দর্শী মজুমদার এই অতিমারিকালেই প্রকাশ করে ফেলেছেন তাঁর কবিতার বই। নামও দিয়েছেন ‘অতিমারির ফাঁকে’।
ছন্দতেই মূলত আস্থা রাখেন প্রিয়দর্শীবাবু। প্রতিটি কবিতায় তিনি সুনির্দিষ্ট ছন্দ অনুসরণ করেছেন। চতুর্দশপদী সনেট কবিতা ও অনুনাটিকাও রয়েছে তাঁর বইয়ে।
তবে বিজ্ঞানচর্চাকারী কবি কবিতার মধ্যেও পরীক্ষানিরীক্ষা করতে ছাড়েননি। বলেছেন, বহু দিনের ইচ্ছা ছিল একপদী চরণ দিয়ে কবিতা লেখা যায় কি না, তা দেখার। শেষ পর্যন্ত তা করতে পেরেছেন তিনি।
বইয়ের অধিকাংশ কবিতার সঙ্গেই রয়েছে সেই রচনার প্রেক্ষিত বর্ণনা। কেন ওই কবিতাটি লিখেছেন তিনি, কোন কোন পরীক্ষা তিনি কবিতাটি রচনার মাধ্যমে করতে চেয়েছেন, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা রয়েছে ওই লেখার মধ্যে। সেগুলি বইটিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
তবে শুধু বাংলা ভাষাতেই নয়, ইংরেজিতেও কবিতার কিছু কিছু পংক্তি লিখেছেন তিনি। রয়েছে ইংরেজিতে লেখা গোটা কবিতাও।
তবে একথা না বললেই নয়, এই বইয়ে বারবার ফিরে এসেছে সমসাময়ীক পৃথিবীর কথা, অতিমারির কথা, বদলে যাওয়া জীবনের কথা। আবার তারই মধ্যে জীবনযুদ্ধে জয়ের আশার কথা। তাঁর কথাতেই, ‘যুদ্ধে নেমেছি আমরা/ বাইশে নতুন ভানু।/ এই আশা রেখে এগিয়ে চলেছি,/ হারবেই জীবাণু।’
আগামী বইমেলায় কিনতে পাওয়া যাবে ‘অতিমারির ফাঁকে’