ত্বকের মারাত্মক রোগ মানুষকে হামলার মুখে আরও দুর্বল করে তোলে৷ রোগ মোকাবিলার ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াও কম ক্ষতি করে না৷ অথচ অতি সাধারণ এক পানীয় ত্বকের রোগের ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে৷
নিউরোডার্মাটাইটিসের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হল, ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতায় দুর্বলতা৷ ত্বকের বাইরের স্তরে যথেষ্ট হর্ন ফ্যাট থাকে না৷ ফলে বাইরে থেকে যে কোনও বস্তু অনেক সহজে ত্বকে প্রবেশ করে প্রদাহ ঘটাতে পারে৷
আরও পড়ুন: Cashew or Walnuts: কাজুবাদাম নাকি আখরোট? কোনটি বেশি উপকারী? আপনার জন্য কোনটি ভালো
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্টিজন প্রয়োগ করে সেই প্রদাহের চিকিৎসা হয়৷ সেই পদ্ধতি কার্যকর হলেও দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে ত্বক পাতলা এবং আরও দুর্বল হয়ে ওঠে৷ বিশেষ করে মুখের ত্বক বিশেষ সংবেদনশীল হওয়ায় সেটা বড় এক সমস্যা৷
কালো চা কি কর্টিসনের বিকল্প হতে পারে? ত্বক বিশেষজ্ঞ ইয়াকভ শিমানোভিচ এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট জানতে চেয়েছিলেন৷
এক ছোটো আকারের পরীক্ষার আওতায় তিনি ২২ জন রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন, যাঁদের মুখে নিউরোডার্মাটাইটিসের কঠিন প্রভাব ছিল৷ তাঁদের মুখে ব্ল্যাক টি'র প্রলেপ লাগানো হল৷ কাটি ডিটমার ছিলেন তাঁদেরই একজন৷ তিনি বলেন, ‘সত্যি, মনে হয়েছিল, আমার মুখের উপর কখন এত খারাপ অবস্থা কখনও হয়নি৷ এখনকার তুলনায় অনেক খারাপ ছিল৷'
ব্ল্যাক টি দিয়ে চিকিৎসার চরিত্র ছিল এ রকম৷ ১০ মিনিট ধরে একটি টি ব্যাগ গরম জলে ভেজানো হয়েছিল৷ তারপর সেই জল ফেলে দিয়ে নতুন জলে সেই টি ব্যাগ আরও ১০ মিনিট ভিজিয়ে সেই জল ব্যবহার করা হয়েছে৷
ড. শিমানোভিচ বলেন, ‘চায়ে ভেজানো দ্বিতীয় ইনফিউশন কিছুটা দুর্বল, কারণ তাতে প্রথম কাপের তুলনায় আরও কম ট্যানিন ও অন্যান্য উপকরণ রয়েছে৷ ফলে সেটি অনেক হালকা ও রোগীদের জন্য অনেক বেশি সহনীয়৷ কিন্তু যথেষ্ট উপকারী৷'
দিনে পাঁচবার চায়ে ভেজানো কাপড় ২০ মিনিট ধরে রোগীর মুখের উপর রাখা হয়৷ প্রত্যেকবার কাপড় সরানোর পর ত্বকে ক্রিম লাগানো হয়৷ সেই ক্রিমে ফ্যাট ছাড়া অন্য কোনও অ্যাক্টিভ এজেন্ট, সুগন্ধ বা প্রিজারভেটিভ থাকে না৷
পরীক্ষার ফলাফল খুবই ইতিবাচক৷ মাত্র তিনদিন পরেই অংশগ্রহণকারীদের উপসর্গ গড়ে ৭০ শতাংশ কমে গেল৷ এত দ্রুত এমন শক্তিশালী প্রভাব দেখে ড. শিমানোভিচ ও তাঁর টিম অবাক হয়েছিলেন৷ তাঁর অনুমান, চায়ের থেরাপির আওতায় তিনটি প্রভাব কাজ করে এবং সেগুলি একে অপরকেও সহায়তা করে৷
প্রথমত, আর্দ্র প্রলেপের নিজস্ব ক্ষমতা৷ নিউরোডার্মাটাইটিসের ক্ষেত্রে মূলত ত্বক অতি শুষ্ক হলেও বাইরে থেকে বড় আঘাত পেলে প্রদাহের জায়গাটি আর্দ্র হয়৷ চায়ের পানি প্রদাহের কোষগুলি শুকাতে সাহায্য করে৷ একইসঙ্গে ত্বক শীতল করে স্বস্তিও দেয়৷
দ্বিতীয়ত, চায়ের মধ্যে ট্যানিনের অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি ক্ষমতা রয়েছে, যা চুলকানি কমায় এবং ত্বকের আর্দ্রতা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করে৷
তৃতীয়ত ক্রিমের ফ্যাটের প্রলেপ ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি করে৷ কাটি ডিটমারওব এমন প্রভাব দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন৷
২৭ বছর বয়সি এই নারী এখন বাড়িতে সবসময় ব্ল্যাক টি রাখেন৷ সুপারমার্কেটের সস্তার চা-ই যথেষ্ট৷ তবে তার মধ্যে কোনও বাড়তি ফ্লেভার থাকলে চলবে না৷ ত্বকে খোঁচা লাগলেই তিনি নিয়মিত চায়ের প্রলেপ লাগান৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রতিবেদনটি ডয়চে ভেলে থেকে নেওয়া হয়েছে। সেই প্রতিবেদনই তুলে ধরা হয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার কোনও প্রতিনিধি এই প্রতিবেদন লেখেননি।