দেশে পুরোদমে চলছে মকর সংক্রান্তির প্রস্তুতি। অন্ধ্রপ্রদেশও এর ব্যাতিক্রম নয়। সেখানেও এর প্রস্তুতি দ্রুত গতিতে চলছে। এই উপলক্ষে প্রতি বছর অন্ধ্র বিভিন্ন গ্রামে মোরগ লড়াই হয়। এই সময়ে সব মোরাগ-মালিকই চান, তাঁর পোষ্য দারুণ অবস্থায় থাকুক। কিন্তু এই চাহিদা এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে, যার কারণে মারাত্মক ভাবে সমস্যায় পড়ছে এই প্রাণীটি। ‘যুদ্ধ’ জয়ের চেষ্টায় অনেকেই মিজের মোরগকে ভায়াগ্রা এবং অন্যান্য স্টেরয়েডযুক্ত খাবার খাওয়াতে মরিয়া হয়েছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এতে মোরগের লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়ে।
মোরগ লড়াই অন্ধ্রপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে সংক্রান্তি উদযাপনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। গুন্টুর, কৃষ্ণা এবং গোদাবরী জেলায় এই খেলা মূলত অনুষ্ঠিত হয়। এই বছর সংক্রান্তি পড়েছে ১৪, ১৫ এবং ১৬ জানুয়ারি। এই উপলক্ষ্যে ওই রাজ্যের প্রত্যন্ত অংশে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার অবৈধ মোরগ লড়াইয়ের আখড়া খোলা হয়েছে, যেখানে মোরগদের ‘মৃত্যুর লড়াই’-এ নামানো হবে অচিরেই। এই খেলায় দর্শকরা বিভিন্ন মোরগের উপর বাজি রাখে। উৎসবে এই বাজির খেলায় কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয় বলে শোনা যায়।
কিন্তু এই বছর এই খেলায় বাদ সেধেছে একটি অসুখ। অন্ধ্রপ্রদেশে বহু মোরগ ‘রানিক্ষেত’ নামক রোগে আক্রান্ত হয়েছে। যার কারণে তাদের অনেকেই দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং লড়াই করার মতো সঠিক অবস্থায় নেই। সংক্রান্তির আগে খুব কম সময় বাকি, তাই কিছু মোরগ পালনকারী এবং আখরার মালিক মোরগদের শিলাজিৎ, ভায়াগ্রা ১০০ এবং ভিটামিন খাওয়ানোর মাধ্যমে শক্তি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁদের ধারণা, এতে মোরগের শক্তি বাড়বে। এবং ইতিমধ্যেই এটি রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। অনেকেই এই রাস্তায় হাঁটেত শুরু করেছেন অন্যদের দেখাদেখি।
এমনিতেই এই লড়াইয়ে প্রাণ হারায় বহু মোরগ। এই নতুন ঘটনা তাদের আরও বিপদে ফেলছে। পশুচিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে হরমোন-বর্ধক ওষুধগুলি পাখিদের দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব ফেলবে, তাদের পঙ্গু করবে। এছাড়াও তাদের শরীরে নানা ধরনের বল ঘটাবে। এর পাশাপাশি এই ওষুধ পাখিদের শরীরে এমন মিউটেশনও ঘটাবে যা মানুষের জন্যও ক্ষতির হবে। যদি এই জাতীয় মোরগ বা মুরগির মাংস কেউ খান তবে তা মারাত্মক ক্ষতিকারক হতে পারে। যদিও এই হরমোন-উদ্দীপক ওষুধগুলি পাখিদের প্রথমবার দেওয়া হচ্ছে। এই জাতীয় ওষুধগুলি আদৌ মোরগদের লড়াকু মনোভাব বাড়ায় কি না তাও এখনও পরিষ্কার নয়।