ছেলেবেলা থেকেই মহাত্মা গান্ধীর লেখনী পড়েছেন। তাতে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তৈরি হয়েছে বিভিন্ন চিন্তাভাবনা। এমনকী ভারতের প্রতি তাঁর যে মুগ্ধতা তৈরি হয়েছে, তারও অন্যতম কারণ হলেন গান্ধীজি। নিজের নয়া বইয়ে এমনই কথা জানালেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
প্রথম জীবনে ভারতে না এলেও ২০১০ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্টে হিসেবে গান্ধীজির দেশে এসেছিলেন আমেরিকার ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। গিয়েছিলেন মুম্বইয়ের মণি ভবনে। সেই ছিমছাম দোতলা বাড়িতে থাকতেন গান্ধীজি।
নিজের স্মৃতির পাতা উলটে ‘আ প্রমিসড ল্যান্ড’-তে ওবামা বলেন, ‘সেখানে ঘুরে দেখার আগে নীল শাড়ি পরিহিত এক অমায়িক মহিলা আমাদের গেস্টবুক দেখিয়েছিলেন। (তাতে) ১৯৫৯ সালে সই করেছিলেন ডঃ কিং (মার্টিন লুথার কিং)। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবৈষম্যের দিকে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তিনি ভারতে এসেছিলেন এবং সেই মানুষটাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন, যাঁর শিক্ষা তাঁকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।’
মনোরম হাওয়া, আবছা আলো থেকে শুরু ছাদের দরজা - মণিভবনের খুঁটিনাটি তুলে ধরে ওবামা বলেন, ‘আমি স্পার্টান ধরনের মেঝে, বিছানা এবং বালিশ, চরকা, পুরনো দিনের ফোন, কাঠের একটি নীচু লেখার ডেস্কের দিয়ে তাকিয়ে ছিলাম। কল্পনা করার চেষ্টা করছিলাম যে গান্ধীজি ওই ঘরে আছেন। রোগা, সাধারণ সুতি ধুতিতে বাদামি চামড়ার ব্যক্তি, পা গুটিয়ে বসে, ব্রিটিশ ভাইসরয়কে কোনও চিঠি লিখছেন বা লবণ সত্যাগ্রহের পরবর্তী পদক্ষেপের কৌশল নির্ধারণ করছেন।’
সেই ভাবনায় সাগরে ডুবে থাকা ওবামা ভাবছিলেন, ‘সেই মুহূর্তে তাঁর পাশে বসার প্রবল ইচ্ছা হচ্ছিল এবং কথা বলতে ইচ্ছা করছিল। জানতে চাইতাম, কত কিছু কম থাকা সত্ত্বেও সেগুলি করার জন্য কোথা থেকে তিনি শক্তি পেয়েছিলেন, কোথা থেকে পেয়েছিলেন ভাবনা। কীভাবে হতাশা থেকে ঘুরে দাঁড়াতেন, (তা জানতে ইচ্ছা করছিল)।’