মূত্রথলিতে নারকেলের মতো পাথর জমে ছিল। ১ কিলোগ্রাম ওজনের সেই পাথর সরিয়ে ১৭ বছরের একটি ছেলেকে সুস্থ করে তুললেন মুম্বইয়ের একজন চিকিৎসক। সম্পূর্ণ অস্ত্রোপচারটি হয় বিনা পয়সায়। সফল এই অস্ত্রোপচারের পর নবজন্ম ফিরে পেল ওই ছেলেটি।
চিকিৎসকদের মতে, জন্মের পর থেকে রেউবেন শেখ এক্সট্রপি এপিসপেডিয়াস কমপ্লেক্স নামে এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছিল। এই ধরনের রোগ ১ লাখের মধ্যে একজনের শরীরে ঘটে। এই ধরনের রোগ যাঁদের হয়, তাঁদের মূত্রথলিতে মূত্র জমা থাকে না। অন্যান্যদের ক্ষেত্রে মূত্রথলি যেভাবে কাজ করে, তা এক্ষেত্রে হয় না। মূত্র পেলেই তা শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। ১৫ বছর আগে ডঃ রাজীব রেডকার যখন ওয়াদিয়া ছিলেন, তখন এই ছেলেটির চিকিৎসা করেছিলেন এই চিকিৎসক। সেইসময় তাঁর একটি অস্ত্রোপচারও করা হয়। এই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলেটির পেটে একটি টিউব লাগানো হয়, যেই টিউবের মাধ্যমে শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া করতে পারবে ছেলেটি। অস্ত্রোপচারের পর ছেলেটি কলকাতায় ফিরে আসে। এরপর ছেলেটিকে আর চেকআপে আনা হয়নি।
গত মাসে ওই ছেলেটি মুম্বইয়ের চিকিৎসকের সঙ্গে ফের যোগাযোগ করেন। চিকিৎসককে জানায়, তাঁর পেটে খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। খুব অস্বস্তি হচ্ছে। মূত্র চেপে রাখতে পারছেন না। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে মুম্বইয়ে আসতে বলা হয়। ছেলেটি তখন তাঁর পরিবারের লোককে সঙ্গে করে ফের ২ হাজার কিলোমিটার যাত্রা করে মুম্বাইতে যান। ডঃ রাজীব রেডকারের ক্লিনিকে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। গত ৩০ জুন ছেলেটির শরীরে ফের অস্ট্রোপচার হয়। তখন ছেলেটির মুত্রথলি থেকে ১৩.৪ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ও ১ কিলোগ্রাম ওজনের একটি পাথর বের করা হয়। যে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল, তাতে ঝুঁকি খুবই বেশি ছিল। কিন্তু অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। চিকিৎসক রেডকার জানিয়েছেন, ছেলেটি কিডনি ভালোভাবেই কাজ করছে। তবে তাঁর আরও দীর্ঘ মেয়াদি চিকিৎসার প্রয়োজন। মাঝে মধ্যেই তাঁকে চেক আপে আসতে হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসক জানিয়েছেন, ছেলেটির সঙ্গে কোনও টাকা পয়সা ছিল না। তাই ছেলেটির জীবন বাঁচাতে বিনা পয়সায় চিকিৎসা করানো হয়েছে।