মাওবাদী দমনে সদা তৎপর বাহিনী (ছবিটি প্রতীকী, সৌজন্য পিটিআই)
অন্ধ্রপ্রদেশের ছোট্ট গ্রাম। প্রায় ১৫ বছর আগে সেখানে গান পয়েন্টে রেখে ১১জন আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশ টিমের বিরুদ্ধে। অ্যান্টি নকশাল পুলিশ টিমের সদস্যদের বিরুদ্ধে উঠছিল সেই অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সেই ১৩জন পুলিশকর্মীকে ওই অভিযোগ থেকে রেহাই দিল স্পেশাল কোর্ট। এর সঙ্গেই তদন্তে দেরির জন্য তদন্তকারী আধিকারিককে শাস্তির জন্য় রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সূত্রের খবর, ২০০৭ সালে ২০ অগস্ট স্পেশাল ব্রাঞ্চের ৩০জন পুলিশ বিশাখাপত্তনম জেলায় নকশাল রোধে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছিলেন। পরে ১১জন আদিবাসী মহিলা অভিযোগ করেন তাদের ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছেন ১৩জন পুলিশকর্মী। তাদের অভিযোগ ছিল গ্রামের পুরুষ সদস্যরা সবাই মাঠে গিয়েছিল। সেই সুযোগে গ্রামে পুলিশ ঢোকে। এরপর মহিলাদের তারা টেনে ঘরে নিয়ে যায়। তারপর ধর্ষণ করে।এরপর মাঠ থেকে ফিরে আসার পরে পুরুষদের কাছে এনিয়ে অভিযোগ জানান বাড়ির মহিলা সদস্যরা। এরপর স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে তারা যান। এরপর তারা বিএসপি এমএলএ রাজা রাওয়ের কাছে নালিশ জানান। এরপর প্রশানের মাধ্যমে তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান।
এরপর ভারতীয় দন্ডবিধি অনুসারে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর শুরু হয় তদন্ত। প্রথমে ডেপুটি এসপি বি আনন্দ রাও এর তদন্ত করছিলেন। পরে সেখান থেকে তদন্তভার যায় প্রাক্তন এসপি এম শিবানন্দ রেড্ডির উপর। তিনি সেই সময় ক্রাইম ব্রাঞ্চের এসপি ছিলেন। পরে তিনি আবার তেলেগু দেশম পার্টিতে যোগ দেন।
এদিকে পুলিশের পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, ধর্ষণের কোনও প্রমাণ মেলেনি। নকশালরা গোটা ঘটনা সাজিয়েছে। এলাকায় যাতে পুলিশ না যায় সেকারণে তারা আদিবাসী মহিলাদের নিয়ে গল্প সাজিয়েছে। গোটাটাই মিথ্য়ে বলে দাবি করেন তারা।
এরপর আদিবাসীদের সংগঠন ওই মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। অভিযুক্তরাও অভিযোগ খারিজের আপিল করেন।পরে সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা যায়। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালে এসসি এসটিদের স্পেশাল কোর্টকে নির্দেশ দেয় যাতে ফাস্ট ট্রাকের মাধ্যমে এর শুনানি হয়।
এদিকে সেই সময় বলা হয়েছিল মামলাতে দেরি করার জন্য় পুলিশ যা করার সবটা করেছে। এমনকী ডিউটি রেজিস্টারও জমা দিতে চাইত না। এমনকী আইটি প্যারেডের আয়োজন করতেন না তদন্তকারী আধিকারিক। বহু দিন ধরে বয়ানও নেওয়া হত না।
এদিকে ১১জন মহিলার মধ্যে পরবর্তী সময়ে দুজন মহিলার মৃত্যুও হয়েছিল। তবে মানবাধিকার সংগঠন ওই মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।মানবাধিকার কর্মীরা জানিয়েছিলেন, গরিব আদিবাসী মহিলাদের কাছ থেকে বয়ান নেওয়ার নাম করে নানা মানসিক নির্যাতনও করা হত। তবে তাঁরাও বছরের পর বছর ন্য়ায় বিচারের জন্য লড়াই চালিয়েছিলেন। তবে তাঁরা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।