প্রায় ৪ দশকেরও বেশি সময় ধরে লড়াইয়ের পর অবশেষে জয়ী হলেন বৃদ্ধা। আদালতের নির্দেশে শেষমেষ স্বামীর মৃত্যুর ৪৬ বছর পর পেনশন পেতে চলেছেন ৯১ বছরে বয়সি বৃদ্ধা। আগামী ২ মাসের মধ্যে বৃদ্ধার পেনশন চালু করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এত বছরের যে বকেয়া রয়েছে সেই বকেয়াও মিটিয়ে দিতে বলেছে আদালত। বৃদ্ধার করা মামলায় এমনই নির্দেশ দিয়েছে ওড়িশা হাইকোর্ট। এত বছর পর পেনশন চালু হতে চলায় স্বাভাবিকভাবে খুশি বৃদ্ধা এবং তাঁর পরিবার।
আরও পড়ুন: পেনশন, ল্যাপটপের আমদানি থেকে শেয়ার বাজার- নভেম্বর থেকে কোন ৫ নিয়ম পালটে গেল?
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ওই বিধবা বৃদ্ধার নাম হারা সাহু। তিনি কেন্দ্রপাদা জেলার বাসিন্দা। তাঁর স্বামীর নাম বেণুধর সাহু। তিনি জেলার কসোটি রত্নাকর মিডল ইংরেজি স্কুলের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। অবসর নেওয়ার কয়েক বছর আগেই তিনি ১৯৭৭ সালে তিনি মারা যান। নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুর পর পেনশন পাওয়ার কথা ছিল স্ত্রীর। কিন্তু, সেই পেনশন চালু হয়নি স্ত্রীর। পেনশনের জন্য তিনি শিক্ষা দফতর থেকে শুরু করে একাধিক দফতরে ছোটাছুটি করেছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি এইসব আবেদন করতে শুরু করেন। কিন্তু, আবেদনের পরেও তিনি পেনশন পাননি। তৎকালীন জেলাশাসক মৃত শিক্ষকের বিধবার স্ত্রীকে পেনশন, গ্রাচুইটি এবং অন্যান্য পরিষেবা প্রদানের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেন। তিনি জানিয়ে দেন এইসব সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন শিক্ষকের স্ত্রী। শেষে বকেয়া পাওয়ার জন্য ওড়িশা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই বৃদ্ধা। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর বিচারপতি বিরজা প্রসন্ন সতপতীর একক বেঞ্চ বুধবার ওই বৃদ্ধাকে পেনশন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে এতদিনের যে বকেয়া রয়েছে তা মিটিয়ে দিতে বলেছে। এর জন্য সরকারকে দু মাস সময় দিয়েছে আদালত।
আদালত লক্ষ্য করেছে, ওই শিক্ষক ১৯৭৭ সালে মারা গেলেও ১৯৮৩ সালে তাঁর অবসরের কথা ছিল। এই দীর্ঘ সময়ের বকেয়া কত এবং পেনশনের পরিমাণ কত? তা নির্ধারিত করে মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। উল্লেখ্য, হারা দেবী বর্তমানে জেলার দেরকুন্ডিতে ছেলে এবং নাতিদের সঙ্গে থাকেন। বর্তমানে তাঁর ছেলের বয়স ৬০ বছর। তিনি মৎস্য বিভাগের প্রাক্তন কর্মী। এছাড়াও, বৃদ্ধার পুত্রবধূ এবং তিন নাতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী। দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের পর অবশেষে জয়ী হওয়ায় খুশি বৃদ্ধার পরিবারের সকলেই। যদিও সরকার পক্ষ হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যাবে কি না তা এখনও যায়নি।