সংস্কারের পর দিনকয়েক আগেই চালু করা হয়েছিল ঐতিহাসিক ব্রিজ। গুজরাটে সেই ঝুলন্ত সেতু ভেঙে কমপক্ষে ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উদ্ধারকারীরা। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
গুজরাটের মৌরবি জেলার মচ্ছু নদীর উপর সেই ঐতিহাসিক ঝুলন্ত ব্রিজ ছিল। পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু ছিল ১০০ বছরের সেই পুরনো ব্রিজ। দীপাবলির আগেও সংস্কারের কাজও হয়েছিল। তারপর জনসাধারণের জন্য সেতু খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রবিবার সন্ধ্যায় সেই ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে। সেইসময় ব্রিজে ৫০০ জনের বেশি ছিলেন বলে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। ঝুলন্ত সেতু ভেঙে যেতেই ১০০ জনের বেশি জলে পড়ে যান।
তড়িঘড়ি শুরু হয় উদ্ধারকাজ। অনেকেই সাঁতার কেটে উঠে আসেন। প্রাথমিকভাবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছিল, ঝুলন্ত সেতু ভেঙে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন। পরে গুজরাট পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) আশিস ভাটিয়া বলেছেন, 'আপাতত উদ্ধারকাজ চলছে এবং অনেক মানুষকে উদ্ধার করে সুরক্ষিত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা ৪০-র আশেপাশে পৌঁছে গিয়েছে। সেই সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।'
ওই অভিশপ্ত সেতুর ৫০০ মিটারের মধ্যে থাকেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেছেন, ‘দশকের পর দশক ধরে আমরা এই ব্রিজ ব্যবহার করে আসছি এবং অন্যদের এই সেতু ব্যবহার করতে দেখেছি। কিন্তু অতীতে কখনও এরকম দুর্ঘটনা ঘটেনি। কাজের জন্য আমি শহরের বাইরে আছি। তবে যা শুনছি, তাতে অনেক বেশি মানুষ উঠে গিয়েছিলেন। তার জেরে ঝুলন্ত সেতু ভেঙে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন: ভোটমুখী গুজরাটে ভেঙে পড়েছে ব্রিজ, মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করলেন মোদী, ক্ষতিপূরণ
সেই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে টুইটারে বলা হয়েছে, ‘মৌরবিতে দুর্ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। দ্রুত উদ্ধারকাজের জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিপর্যয় মোকাবিলা দল পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারপিছু দু'লাখ টাকা এবং আহতদের মাথাপিছু ৫০,০০০ টাকা আর্থিক অনুদানের ঘোষণা করা হয়েছে। পৃথকভাবে আর্থিক অনুদানের ঘোষণা করেছেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলও। মৃতদের পরিবারপিছু চার লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০,০০০ টাকা অনুদান প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।