আইসিএমআর-এর কোভিড টেস্টিং থেকে ৮ কোটি ভারতীয়র ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে দাবি করা হয়, ডার্ক ওয়েবে এক হ্যাকার দাবি করে, তার কাছে ৮ কোটি ভারতীয়র ব্যক্তিগত তথ্য রয়েছে। আইসিএমআর-এর কাছ থেকে নাকি সেই সব তথ্য হাতিয়েছে সে। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, হ্যাক হওয়া তথ্যের মধ্যে নাগরিকদের ফোন নম্বর, ঠিকানা রয়েছে। এদিকে এই তথ্য চুরির বিষয়টি অস্বীকার বা স্বীকার করেনি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তবে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সরকারের তরফে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকার একটি সাইবার সুরক্ষা সংস্থার নজরে প্রথমবার এই ডেটা চুরির বিষয়টি আসে।
এর আগে জুন মাসে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল যে কোউইন অ্যাপ থেকে ভারতীয় নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। সেই দাবিকে পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর। তিনি দাবি করেছিলেন যে কোউইনকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, টেলিগ্রামে যে তথ্য ফাঁস হয়েছে, তার সঙ্গে কোউইনের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২১ সালেও একবার দাবি করা হয়েছিল যে কোউইন হ্যাক করা হয়েছে এবং ১৫ কোটি ভারতীয় নাগরিকের তথ্য বিক্রি করা হচ্ছে ডার্ক ওয়েবে। যদিও পরবর্তীতে সেই দাবি ভুয়ো বলে দাবি করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ভারতে কোভিড টিকাকরণের জন্য নাম নথিভুক্ত করার জন্য কোউইন অ্যাপ ব্যবহার করতে হয়। এই অ্যাপ থেকে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি যাওয়ার আশঙ্কার কথা সামনে এসেছিল আগেও। তবে সরকারের তরফে দাবি করা হয়েছিল, কোউইন থেকে কোনও ব্যক্তির তথ্য ফাঁস হয়নি। তবে জুন মাসে কোউইন নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, কোউইন হ্যাক করা হয়েছে এবং বহু রাজনীতিক এবং সাংবাদিকের ব্যক্তিগত তথ্য টেলিগ্রাম অ্যাপে প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়াও বহু আম নাগরিকের তথ্যও নাকি ফাঁস হয়েছে। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে তৃণমূল দাবি করে, টেলিগ্রামে কোনও টিকা নেওয়া ব্যক্তি নিজের মোবাইল নম্বর দিলেই সেই ব্যক্তির আইডি নম্বর, ভ্যাক্সিনেশন সেন্টার এবং আরও তথ্য সামনে চলে আসছে।
মালায়ালাম মনোরমার এক রিপোর্টে আবার দাবি করা হয়, এই ডেটা লিকের জেরে লাখ লাখ ব্যক্তির প্যান কার্ড, ভোটার আইডি, আধার কার্ডের তথ্য টেলিগ্রামে উপলব্ধ। এই আবহে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সাকেত গোখলে গতকালটুইট করে অভিযোগ করেন, এটা জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড় উদ্বেগের বিষয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, বহু ব্যক্তির আধার কার্ড নম্বর, লিঙ্গ, জন্ম তারিখের মতো তথ্য ফাঁস হয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা ডেরেক ও'ব্রায়েন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদাম্বরম, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ এবং কংগ্রেসের সাধারণ সম্পদক কেসি বেণুগোপালের তথ্য টেলিগ্রামে উপলব্ধ। এছাড়া কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ, রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ নারায়ণ সিং, রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব, কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের তথ্যও ফাঁস হয়েছিল বলে দাবি করা হয়।