আলওয়ারের তরুণীকে অপহরণ করে দু’বছর ধরে গণধর্ষণ করার অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তৃতীয় ব্যক্তিকে নির্যাতিতাকে ব্ল্যাকমেলে করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। ২৮ জুন নির্যাতিতা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন।
এফআইআরের বয়ান অনুয়ায়ী জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের এপ্রিলে নির্যাতিতা ওই তরুণী একটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে আলওয়ারে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে বিকাশ চৌধুরী নামের পূর্ব পরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। নির্যাতিতার অভিযোগ, বিকাশ ও তার বন্ধু ভুরুসিং জাট তাঁকে মাদক মেশানো খাবার খাইয়ে প্রথমে বেহুঁশ করে ফেলে। তারপর একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দু’জনে মিলে ধর্ষণ করে। নির্যাতিতা ওই তরুণীর আরও অভিযোগ, ওই আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীরাও অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগ দেয়।
বৃহস্পতিবার আলওয়ারের পুলিশ সুপার তেজস্বিনী গৌতম এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ‘ এফআইআরে ওই নির্যাতিতা বিকাশ ও ভুরুর নাম উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও আরও দু’জন তাঁকে ধর্ষণ করেছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। ঘটনা এখানেই শেষ হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে ফিরে ওই নির্যাতিতা ২০১৯-এর মে তে মালখেড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করতে যান। কিন্তু নির্যাতিতার অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে পুলিশ বলে অভিযোগ উঠেছে। তখন থেকেই বিকাশরা তাঁকে হয়রানি করে লাগাতার ধর্ষণ করছিল। টানা দু’বছর ধরে ওই তরুণীর উপর এই পাশবিক অত্যাচার চালায় অভিযুক্তরা।
পুলিশ সুপার আরও জানিযেছেন, চলতি বছর ২৫ জুন গৌতম সাইনি নামে অপর ব্যক্তি তাঁর ধর্ষণের ভিডিও ক্লিপ ওই তরুণীকে পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে শুরু করে। ২৭ জুন নির্যাতিতাকে দেখা করার জন্য চাপ দিতে থাকে ওই অভিযুক্ত। তেজস্বিনী আরও বলেন, '২৭ জুন ওই তরুণী আমার কাছে এসেছিলেন। তারপরই সম্পূর্ণ ঘটনার বিষয় এফআইআর দায়ের করা হয়। নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে দু’দিনের মধ্যে বিকাশ ও ভুরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অপর অভিযুক্ত গৌতম সাইনিকেও হয়রানির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবশ্য আরও দু’জন নিরাপত্তারক্ষী পলাতক রয়েছে, তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।'
পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে গৌতমের কোনও ভূমিকা না থাকলেও ওই ব্যক্তি তরুণীকে আপত্তিকর ভিডিয়ো পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল করছিল। সেই কারণে তথ্যপ্রযুক্তি আইন ও আইপিসির অন্যান্য ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আলওয়ার সিটি মহিলা থানাকে এই ঘটনার তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে। আর যে পুলিশ আধিকারিকরা তরুণীর এফআইআর নিতে অস্বীকার করেছিলেন, তাঁদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হবে। সেক্ষেত্রে পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে যদি কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।