ইরাকের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেনের বড় মেয়ে রাঘাদ হোসেনকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত। সাদ্দাম হোসেনের দল বাথ পার্টির প্রচারের অপরাধে এমন নির্দেশ দিয়েছে বাগদাদের একটি আদালত। উল্লেখ্য, সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুর পর থেকেই ওই দলটি ইরাকে নিষিদ্ধ। সেই কারণে এমন নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: সাদ্দামকে বাথরুমে থাকাকালীন মারার জন্য তৈরি হয়েছিল, সেই মিসাইল এখন ইউক্রেনের ভরসা
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে রাঘাদ হোসেন ২০২১ সালে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। তাতে তিনি বাথ পার্টির প্রচার করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, ইরাকে এই দলের প্রচার নিষিদ্ধ রয়েছে। এখানে কেউ ওই দলের সম্পর্কিত ছবি পোস্ট বা স্লোগান দিলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়ে থাকে। তা সত্ত্বেও ২০২১ সালে সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাঘাদ বলেছিলেন, ১৯৭৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত সাদ্দাম হোসেনের শাসনকালে ইরাকের অবস্থা খুব ভাল ছিল। মানুষ গর্ববোধ করতেন।
উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে আমেরিকা ও ব্রিটেন ইরাকে আক্রমণ করে এবং সাদ্দামকে গ্রেফতার করে। ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাদ্দাম হোসেনকে শিয়া হত্যার দায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়। এর পরে ইরাকে সাদ্দামের শাসনের অবসান ঘটে। সেই সঙ্গে তাঁর দলকেও নিষিদ্ধ করা হয়। বলা হয়, তাঁর শাসনকালে আমেরিকানরাও তাঁকে ভয় পেতেন। একজন স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে পরিচিত ছিলেন সাদ্দাম হোসেন। তিনি শত্রুদের ক্ষমা করতেন না। যারা তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল প্রতিশোধ নিতে তিনি ১৯৮২ সালে ইরাকের দুজাইল শহরে গণহত্যা চালিয়েছিলেন। সেই সময় ১৪৮ জন শিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল।
বাগদাদের উত্তরে তিকরিতের একটি গ্রামে ১৯৩৭ সালের ২৮ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন।সাদ্দাম। বাগদাদে থেকে তিনি আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৭ সালে সাদ্দাম মাত্র ২০ বছর বয়সে বাথ পার্টির সদস্যপদ গ্রহণ করেন। ১৯৬২ সালে ইরাকে সামরিক বিদ্রোহে অংশ নিয়েছিলেন সাদ্দাম। এই বিদ্রোহের কারণে মাত্র ৩১ বছর বয়সে সাদ্দাম জেনারেল আহমেদ হাসান আল-বকরের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি ইরাকের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি হন।
ইরাকে সাদ্দামের শাসন দুই দশক ধরে চলে।সাদ্দামের কারণে ইরাকে আড়াই লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। ক্ষমতা দখলের পরে সাদ্দাম প্রথমে শিয়া ও কুর্দিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন। তিনি আমেরিকার বিরোধিতাও করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ইরান ও কুয়েতে সাদ্দামের হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন। ২০০৩ সালে সাদ্দামকে গ্রেফতারের পর মামলা চলে ইরাকের একটি আদালতে।সেই মামলায় গণহত্যার জন্য আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। এর পরে ২০০৬ সালে তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।