কেরলের ট্রাভাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ডের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সমিতির বিরুদ্ধে। বোর্ডের অধীনে থাকা কোনও মন্দির চত্বরে যেন আরএসএস কোনও ধরনের কার্যকলাপ না করে, তাই বলা হয়েছে সেই নির্দেশিকায়। কেরলের ট্রাভাঙ্কোর অঞ্চলের সব বড় বড় মন্দিরেরই দায়িত্বে রয়েছে এই দেবস্বম বোর্ড। এই আবহে বোর্ডের তরফে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মন্দির চত্বরে আরএসএস এবং সংকল কট্টরপন্থী মনোভাবাপন্ন সংগঠনের কার্যকলাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। আগের থেকে অনুমতি না নিয়ে এই সংগঠনগুলি যেন মন্দির চত্বরে কোনও কিছু না করে।
দেবস্বম বোর্ডের কমিশনার এক নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে 'নামজপ' প্রতিবাদও করা যাবে না। এদিকে এই নির্দেশিকা অমান্য করে মন্দির চত্বরে আরএসএস কোনও কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকছে কি না, তা দেখতে আচমকাই মন্দিরে মন্দিরে পরিদর্শন চালানো হবে বলে জানিয়েছে বোর্ড। এদিকে আরএসএস-এর শাখার তরফে যাতে মন্দির চত্বরে 'মাস ড্রিলের' আয়োজন না করা হয়, তাও নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। এছাড়া মন্দির চত্বরে কোনও ভাবেই যাতে 'অস্ত্র চালানোর পরশিক্ষণ' না দেওয়া হয়, তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়।
এদিকে কোনও ক্ষেত্রে যদি নির্দেশিকা অমান্য করে আরএসএস বা কোনও কট্টরপন্থী সংগঠন মন্দির চত্বরে কোনও কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে মন্দিরের পুরোহিত বা মন্দিরের কর্মচারীদের অবিলম্বে সেই খবর বোর্ডকে জানাতে বলা হয়েছে। এদিকে আরএসএস-এর কার্যকলাপ নিয়ে যদি কোনও মন্দিরের কর্মী বা পুরোহিত বোর্ডকে না জানায়, তাহলে সেই সংশ্লিষ্ট পুরোহিত বা কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়। এদিকে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, মন্দিরের সাথে যুক্ত নন, এমন কোনও ব্যক্তির ছবি, পতাকা বা ফ্লেক্স যেন মন্দির চত্বরে না লাগানো হয়। এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে তা হাই কোর্ট অবমাননার সামিল হবে বলে জানানো হয় নির্দেশিকায়। এর আগে চলি বছরের মে মাসে, ২০২১ সালে, ২০১৬ সালেও এই একই ধরনের নির্দেশিকা জারি করেছিল ট্রাভাঙ্কোর দেবস্বম বোর্ড।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত মাসে আরএসএস-এর বিরুদ্ধে কেরল হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, আরএসএস বেআইনি ভাবে মন্দির চত্বর দখল করে নিজেদের কার্যকলাপ চালাচ্ছে। এই আবহে মন্দির চত্বরে ড্রিল বা অস্ত্র প্রশিক্ষণ বন্ধের দাবি জানানো হয়েছিল আবেদনে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই কেরল হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, মন্দির চত্বরে কোনও ড্রিল বা অস্ত্র প্রশিক্ষণ চালানো যাবে না।