ভারতে আসছেন পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জরদারি। গোয়াতে অনুষ্ঠিত হতে চলা সাংহাই কোঅপারেশন অর্গনাইজেশনের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বিলাওয়াল। ২০১৪ সালের পর এই প্রথম উচ্চপদস্থ কোনও পাকিস্তানি নেতা ভারতে পা রাখতে চলেছেন। উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণের সময় ভারতে এসেছিলেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বর্তমানে তাঁর ভাই শেহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এদিকে বিলাওয়ালের ভারতের সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক।
উল্লেখ্য, বিগত বেশ কয়েক বছরে ক্রমেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে পাকিস্তানের। বাণিজ্যিক সম্পর্কও পুরোপুরি ছিন্ন হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। তবে এরই মধ্যে কিছু কিছু ইতিবাচক ঘটনাও ঘটেছে। করতারপুর করিডোরের মাধ্যমে পাকিস্তানে যেতে পেরেছেন কয়েক হাজার শিখ পুণ্যার্থী। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের এক দেশে বসে ব্যাকচ্যানেলিং বৈঠকের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরে সংঘর্ষ বিরতির পথে এগিয়েছে দুই দেশ। তবে এরই মাঝে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেনি পাকিস্তান। পাকিস্তান থেকে ক্রমাগত মাদক ও অস্ত্র পাচার হয়ে আসছে পঞ্জাব এবং জম্মু ও কাশ্মীরে। এদিকে রাষ্ট্রসংঘে বিলাওয়াল ভুট্টো ভারতের সংখ্যালঘুদের অবস্থার কথা তুলে ধরে তোপ দাগতে চেয়েছেন দিল্লিকে। যদিও এর যোগ্য জবাব ভারতও দিয়েছে ইসলামাবাদকে।
প্রসঙ্গত, উরিতে সেনা ছাউনিতে হামলা এবং এর জবাবে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে ভারত-পাক সম্পর্কের অবনতি শুরু হয়েছিল সাম্প্রতিককালে। এরপর পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের হামলা এবং জবাবে ভারত বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক করায় সেই সম্পর্কে ছেদ ঘটেছিল। কূটনৈতিক সম্পর্কও প্রায় সুতোর দ্বারা আটকে রয়েছে দুই দেশের মধ্যে। এরপর ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়টি হজম করতে পারেনি পাকিস্তান। এই নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে বারংবার সরব হয়েছে ইসলামাবাদ। তবে তাতে কর্ণপাত করেনি ভারত। উলটে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে ভারত। পাশাপাশি সেদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের দিকে নজর দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদের দৃষ্টি আকর্ণষ করেছে দিল্লি। এই আবহে এসসিও-র বৈঠকে যোগ দিতে পাক বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করথেন বিশ্লেষকরা। বিগত কয়েক বছরে চিনের সঙ্গে মিলে ভারতের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ছক কষেছে পাকিস্তান। এই আবহে এসসিও গোষ্ঠীর বৈঠকে যোগ দিতে পাক মন্ত্রী ভারতে এলে তা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় একটা দিক বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।