সুপ্রিম কোর্টে আবারও ধাক্কা খেল বিলকিস বানো গণধর্ষণ কাণ্ডের ১১ দোষী। আত্মসমর্পণের সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছিল তারা। তবে শীর্ষ আদালতে খারিজ হল তাদের সেই আবেদন। বিলকিস বানোর অপরাধীদের মুক্তির নির্দেশ আগেই বাতিল করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সময়সীমা নির্ধারণ করে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয় সেই মামলার ১১ দোষীকেই। তবে ১১ জনের মধ্যে ১০ জনই আত্মসমর্পণের সমসীমা বৃদ্ধি করার আবেদন জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। নিজেদের বৃদ্ধি মাতা-পিতার খেয়াল রাখা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে এই মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়েছিল। তবে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি উজ্জ্বল ভুইঁয়া এবং বিচারপতি বিভি নাগরত্নার বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, আগের নির্ধারিত দিনের মধ্যেই দোষীদের আত্মসমর্পণ করতে হবে। উল্লেখ্য, এর আগে গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণ করতে হবে ১১ জন দোষীকে। অর্থাৎ, ২০২২ সালের স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি পাওয়া ১১ দোষীকে জেলে যেতে হবে এই বছরের প্রজাতন্ত্র দিবসের আগেই। (আরও পড়ুন: এবার কি ৫০০ টাকার নোটে থাকবে রামমন্দির এবং শ্রী রামের ছবি? সামনে এল সত্যিটা)
আরও পড়ুন: হল না 'বলপ্রয়োগ', নিজে থেকেই সরকারি বাংলো ছাড়লেন ICU-তে ভরতি থাকা মহুয়া
এর আগে গুজরাট সরকারের নির্দেশে বিলকিস বানোকে গণধর্ষণের মামলায় আগাম মুক্তি পেয়েছিল ১১জন সাজাপ্রাপ্ত। তবে গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, ফের জেলে ফিরতে হবে অপরাধীদের। প্রসঙ্গত, বিলকিস বানোর গণধর্ষকদের গত ২০২২ সালের ১৫ অগস্ট মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে বিতর্ক চরমে। উল্লেখ্য, ২০০২ সালের মার্চ মাসে দাহোদ জেলায় লিমখেড়া তালুকায় রাধিকাপুর গ্রামে একদল দুষ্কৃতী বিলকিস বানোর পরিবারের উপর হামলা চালিয়েছিল। গণধর্ষণ করা হয় বিলকিসকে। খুন করা হয়েছিল তাঁর পরিবারের ১৪ জনকে। পরে ২০০৪ সালে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। মুম্বইয়ে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি ১১ ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছিল। পরবর্তীকালে সেই সাজার মেয়াদ বহাল রেখেছিল বম্বে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: রামমন্দিরের অনুষ্ঠানের আগে 'ব্রত' মোদীর, প্রবল ঠান্ডায় ঘুমোচ্ছেন মেঝেতে, খাচ্ছেন শুধু ডাবের জল
২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকার পঞ্চমহলের কালেক্টর সুজল মায়াত্রার নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দোষীদের মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে। সর্বসম্মতিক্রমে কারাবাসের সময় কমানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় কমিটিতে। সেই মতো গত ২০২২ সালের স্বাধীনতা দিবসের দিন দোষীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। সাজাপ্রাপ্তদের আগাম মুক্তি দেওয়ার পর প্রকাশ্যে তাদের মালা পরানো হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল সংবর্ধনা। মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছিল। এই আবহে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাট সরকারকে প্রশ্ন করেছিল, গুজরাট সরকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সিবিআই বা মুম্বইয়ের আদালতের মতামত কেন নেয়নি? জবাবে গুজরাটে পক্ষে সওয়াল করা এএসজি বলেছিলেন, 'গোধরা দায়রা আদালতের বিচারকের মতামতে একটি কমিটি গঠন করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।' তখন সুপ্রিম বিচারপতি বিভি নাগারত্না পালটা বলেছিলেন, 'গোধরা আদালতে তো অপরাধীদের সাজা হয়নি। হয়েছিল মুম্বই আদালতে।' জবাবে এএসজি বলেন, 'যে বিচারক এই রায় শুনিয়েছিলেন, তিনি অবসর নিয়েছেন। তাই এই মামলায় গুজরাটের আদালতে মতামত গ্রহণ করা হোক কি মুম্বইতে, তাতে বেশি কিছু ফারাক আসে না।' এরপরই বিচারপতি বলেছিলেন, 'এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মামলার প্রেক্ষাপট মাথায় রাখা উচিত। ভুলে গেলে চলবে না সরকার এই মামলার তদন্ত সঠিক ভাবে করতে পারেনি বলেই সিবিআই-কে তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল। গুজরাট থেকে মামলা মহারাষ্ট্রে সরানো হয়েছিল।'