দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে একাধিকবার মুখ খুলেছে আমেরিকা। এই আবহে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে আমেরিকার মতামত নিয়ে। প্রথম দফায় মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়েছিল সাউথ ব্লকে। পরে ফের একবার আমেরিকা এই ইস্যুতে মুখ খোলায় নিজেদের বিরক্তি প্রকাশ করে ভারতও। আর এবার এই ইস্যুতে বিজেপি দলীয় ভাবে মুখ খুলল প্রথমবার। আমেরিকাকে তোপ দেগে গেরুয়া শিবিরের নেতা মহেশ জেঠমালানি বলেন, 'মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট নিজের এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারি এবং কংগ্রেসের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ নিয়ে কথা বলছে। এটার মাধ্যমে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার ওপরে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। কারণ দুই ক্ষেত্রেই আদালতের নির্দেশেই হচ্ছে যা হাওয়ার।' (আরও পড়ুন: 'বিষ দেওয়া হয়েছে', মুখতার আনসারির মৃত্যু নিয়ে বিস্ফোরক ছেলে, জরুরি বৈঠকে যোগী)
এরপর দেশের বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গে মহেশ জেঠমালানি বলেন, 'ভারতের বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষ। সাম্প্রতিককালে সরকারের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে রায় দিয়েছে বিচার ব্যবস্থা। ইলেক্টোরাল বন্ড, চণ্ডীগড় মেয়র নির্বাচনের মতো ইস্যুতেই সুপ্রিম কোর্ট ক্ষমতাসীন দলের মতের বিরুদ্ধে গিয়েছে।' এরপর আমেরিকাকে কটাক্ষ করে মহেশ জেঠমালানি বলেন, 'এটা দেখে অবাক লাগে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ আমাদের মতো গণতন্ত্রের বিচার ব্যবস্থার ওপর প্রশ্ন তুলছে। আর যখন তারা আমাদের কৌশলগত সঙ্গী।' এই আবহে হান্টার বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দিকে আমেরিকাকে নজর দেওয়ার 'পরামর্শ' দেন মহেশ জেঠমালানি।
উল্লেখ্য, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর সেই ইস্যুতে মুখ খুলেছিল আমেরিকা। গত বুধবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছিলেন, 'আমেরিকা চায় যাতে স্বচ্ছ ভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।' এরপরই দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিককে তলব করে পাঠানো হয়েছিল ভারতের বিদেশ দফতরের থেকে। এবার সেই তলবের পর ফের একবার মুখ খুলল ওয়াশিংটন। কেজরিকাণ্ডে গত বুধবার ম্যাথিউ মিলার ফের একবার বললেন, 'এই গোটা ইস্যুর ওপর নজর রেখে চলেছে আমেরিকা।' এদিকে তিনি এও বুঝিয়ে দেন, দিল্লিতে নিযুক্ত মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়টিও তাদের নজরে আছে।
প্রসঙ্গত, কেজরিওয়াল নিয়ে ওয়াশিংটন মুখ খোলার পরই গতকাল মার্কিন ডেপুটি রাষ্ট্রদূত গ্লরিয়া বার্বেনাকে দিল্লির সাউথ ব্লকে বিদেশ মন্ত্রকে তলব করা হয়েছিল। এদিকে শুধু কেজরির গ্রেফতারি নয়, কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হওয়ার বিষয়েও গতকাল মুখ খোলেন মার্কিন আধিকারিক। এই বিষয়ে ম্যাথিউ মিলার বলেন, 'কংগ্রেস অভিযোগ করেছে যে আয়কর দফতরের তরফ থেকে তাদের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। এর জেরে তাদের নির্বাচনে লড়াই করা কঠিন হয়ে যাবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা অবগত। আমরা এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই চাইছি যাতে সুষ্ট, অবাধ এবং স্বচ্ছ ভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হোক।'